Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Shantiniketan

কালো বাড়ির চারপাশে লোহার খুঁটি নিয়ে প্রশ্ন

স্থাপত্য ভাস্কর্যের অন্যতম নিদর্শন হল বিশ্বভারতীর কলাভবন। সেখানেই বিখ্যাত শিল্পী নন্দলাল বসু, রামকিঙ্কর বেইজ-এর মূল্যবান স্থাপত্য ভাস্কর্যের কাজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

বিশ্বভারতীর কলাভবনের কালো বাড়ির সামনে লোহার খুঁটি, শনিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

বিশ্বভারতীর কলাভবনের কালো বাড়ির সামনে লোহার খুঁটি, শনিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

বাসুদেব ঘোষ 
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৪ ০৭:২০
Share: Save:

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্র বা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে শান্তিনিকেতনের নাম ওঠার পর থেকে সকলের কাছে অন্য মাত্রা পেয়েছে রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। সেই হেরিটেজের অঙ্গ বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী কালো বাড়ির সামনে বসানো হয়েছে লোহার খুঁটি। এ নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ পড়ুয়া, প্রাক্তনী, আশ্রমিক-সহ অনেকই।

স্থাপত্য ভাস্কর্যের অন্যতম নিদর্শন হল বিশ্বভারতীর কলাভবন। সেখানেই বিখ্যাত শিল্পী নন্দলাল বসু, রামকিঙ্কর বেইজ-এর মূল্যবান স্থাপত্য ভাস্কর্যের কাজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তেমনই ১৯৩৪ সালে মাটির উপর আলকাতরার প্রলেপ ও অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি হয় কলাভবনের ঐতিহ্যবাহী কালো বাড়ি।

মূলত এই বাড়িটি সেই সময় ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কালো বাড়িতে স্নাতকোত্তরের ছাত্ররাই আবাসিক হিসেবে থাকার সুযোগ পেতেন। দীর্ঘদিন চলেছিল সেই ব্যবস্থা। বহু ইতিহাসের সাক্ষী সেই বাড়ি এখন আর ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহার হয় না। তবে তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব আজও অমলিন।

হঠাৎই সেই ঐতিহ্যবাহী কালো বাড়ির চারপাশে লোহার খুঁটি বসানো হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। বাড়িটিকে এক রকম ঘিরে ফেলার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ। এতেই ক্ষুব্ধ সকলে। সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যে মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্যের ঝড় বইতে শুরু করেছে। সমাজমাধ্যমে এক পোস্টে লেখা হয়েছে— ‘হেরিটেজের নিরাপত্তার অজুহাতে গৌড় প্রাঙ্গণ, আম্রকুঞ্জ, বকুলবীথি এলাকায় চলাফেরা অনেক দিন আগেই সঙ্কুচিত করে দেওয়া হয়েছে। বিকেল বা সন্ধ্যায় কাউকে সেখানে বসতে দেওয়া হয় না। এ বার অচিরে কালো বাড়ির চত্বরে আড্ডা বন্ধ হচ্ছে। সবই নাকি নিরাপত্তার স্বার্থে! কিন্তু কিসের নিরাপত্তা সেটিই বোধগম্য হয় না। হেরিটেজের অজুহাতে রবীন্দ্রনাথের তপোবনাদর্শের খোলামেলা শান্তিনিকেতন থেকে ‘রক্তকরবী’র অদৃশ্য জালের মতো নিষেধাজ্ঞার জালে বন্দি করা হচ্ছে। প্রাণবন্ত শান্তিনিকেতন দিন-দিন অচলায়তন হয়ে উঠছে’।

বিশ্বভারতীর কর্মী-অধ্যাপকদের অনেকেই বলছেন, কলো বাড়ি দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। তা ঘিরে ফেলার কারণ তাঁদেরও অজানা। প্রবীণ আশ্রমিক তথা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, “ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলির মধ্যে অন্যতম কালো বাড়ি। তাকে আলাদা ভাবে ঘিরে ফেলার প্রচেষ্টা উচিত নয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা উচিত।”

বিষয়টি নিয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, “বিশ্বভারতী এবং আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া যৌথ ভাবে কালো বাড়ির ‌সংস্কার করছে, তার জন্য বাড়িটিকে সাময়িক ভাবে ঘেরার কাজ চলছে। সংস্কার শেষ হলে তা আবার খুলে দেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shantiniketan Visva Bharati University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE