ময়নাগুড়িতে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার অভিযোগ ওঠায় এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তার মধ্যেই শোনা যাচ্ছে, কোনও কোনও জেলায় সরকারি কর্তা ছাড়াই প্রধান শিক্ষকেরা প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলেন। এটাই নাকি রেওয়াজ!
যেমন হাওড়া। কোনও সরকারি আধিকারিকের উপস্থিতি ছাড়াই ওই জেলার কয়েক জন প্রধান শিক্ষক মাধ্যমিকে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার পরেই জেলার শিক্ষাকর্তারা জানান, হাওড়া জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এটাই রীতি!
এই নিয়ে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। ময়নাগুড়ির পরে হাওড়াতেও এই অভিযোগ ওঠায় পরীক্ষা পদ্ধতির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন পরীক্ষার আগেই বেরিয়ে গিয়েছে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও।
স্কুলশিক্ষা দফতরের খবর, নিয়ম অনুযায়ী ভেনু সুপারভাইজার, অ্যাডিশনাল ভেনু সুপারভাইজার, সেন্টার সেক্রেটারি, অফিসার ইনচার্জ কিংবা সেন্টার ইনচার্জের উপস্থিতিতে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার কথা। ভেনু সুপারভাইজারের দায়িত্ব পালন করেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে অফিসার ইনচার্জ এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে সেন্টার ইনচার্জ হন সহ-স্কুল পরিদর্শক। কিন্তু কেউই একা প্যাকেট খুলে প্রশ্নপত্র বিতরণ করতে পারেন না বলে জানান পর্ষদ ও সংসদের কর্তারা।
স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, স্কুলে প্রশ্নপত্র পৌঁছনোর পরে তা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার আগে প্রধান শিক্ষক একক ভাবে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে পারেন না। কেননা তাতে দুর্নীতির আশঙ্কা থাকে।
হাওড়ার জেলা স্কুল পর্যবেক্ষক (সেকেন্ডারি) শান্তনু সিংহ জানান, হাওড়ার বাগনান ও বালিতে দু’টি প্রধান পরীক্ষা কেন্দ্র ছাড়া সব কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষকদেরই প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ‘‘কয়েক বছর ধরে এটাই এই জেলার ট্র্যাডিশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও এটা মোটেই নিয়ম নয়,’’ বলেন শান্তনুবাবু।
তা হলে এই ব্যবস্থা চলছে কী ভাবে? শান্তনুবাবু বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রীর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, যেমন চলছে চলুক।’’ সংসদ-প্রধান মহুয়া দাস অবশ্য বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ-রকম কথা তো আমি বলিনি। আমি কোনও অভিযোগও পাইনি।’’ বক্তব্য জানার জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে বারবার ফোন করা সত্ত্বেও তাঁর সাড়া মেলেনি।
তবে হাওড়া জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের দাবি, চালু ব্যবস্থায় মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকও নির্বিঘ্নেই শেষ হবে বলে আশা করছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy