নিখোঁজ গঙ্গাধর
রেলপথে সফরকালে যাত্রী নিখোঁজের খবর মাঝেমধ্যে শোনা যায়। এ বার কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস থেকে কর্তব্যরত এক রেলকর্মীই রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে গেলেন!
পুলিশ জানায়, বছর বিয়াল্লিশের ওই রেলকর্মীর নাম গঙ্গারাম পণ্ডিত। ২৫ অগস্ট শিয়ালদহ থেকে ছাড়া কাঞ্চনকন্যায় রেলকর্মী নিখোঁজের ঘটনায় তদন্তে নেমেছে রেল পুলিশ। মঙ্গলবার পর্যন্ত তাঁর খোঁজ মেলেনি। পুলিশ তাঁর সহকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ দিন জেরায় দুই কর্মী অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁরা তথ্য গোপন করছেন কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।
পুলিশি সূত্রের খবর, শনিবার কাঞ্চনকন্যায় ডিউটি ছিল গঙ্গারামের। ওই রাতে বিহারে পিত্রালয়ে থাকা স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন তিনি। কিন্তু রবিবার সকাল থেকে তাঁকে আর ট্রেনে দেখা যায়নি। পুলিশ জেনেছে, ওই দিন গঙ্গারামের সঙ্গে ছিলেন রেলকর্মী বাবলু কর্মকার। এ ছাড়াও ছিলেন বেসরকারি সংস্থার দুই কর্মী। বাবলুর সঙ্গে কথা হয়েছে তদন্তকারীদের। কিন্তু বেসরকারি সংস্থার ওই দুই কর্মী তলব পেয়েও মঙ্গলবার হাজিরা দেননি।
বাবলু পুলিশকে জানান, ট্রেনের এ১ কামরার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। গঙ্গারাম দেখছিলেন বি১ এবং বি২ কামরা। কিন্তু সাঁইথিয়ায় পৌঁছনোর পরে ওই দুই কামরার কোনওটিতেই গঙ্গারামের খোঁজ পাননি তিনি। বেসরকারি সংস্থার দুই কর্মী বাবলুকে বলেন, গঙ্গারাম সাঁইথিয়ায় নেমে গিয়েছেন। পরনে ছিল হাফ-ট্রাউজার্স। বাবলুর এই বক্তব্য মানতে নারাজ গঙ্গারামের পরিবার। গঙ্গারামের ভাই অশোক পণ্ডিত বলেন, ‘‘আমার দাদা কোনও দিনই হাফ-ট্রাউজার্স পরে রেলে কাজ করেননি। কিছু একটা লুকোনো হচ্ছে। পুলিশকে বলেছি, বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের জেরা করা হোক।’’ বাবলু জানান, ট্রেন ছাড়ার আগে বেসরকারি সংস্থার দুই কর্মীর সঙ্গে গঙ্গারামের তর্কাতর্কিও হয় কিছু ক্ষণ।
নারকেলডাঙার রেল আবাসনে স্ত্রী, চার সন্তান এবং ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে থাকতেন গঙ্গারাম। পরিবারে শোকের ছায়া। গঙ্গারামের স্ত্রী সুনীতাদেবী বলেন, ‘‘শনিবার রাতে আমার সঙ্গে ফোনে ভালই কথা বলল। তখনও কিছু মনে হয়নি। তবে জানিয়েছিল, বেসরকারি সংস্থার ছেলেগুলো একেবারেই কথা শোনে না। ওর সঙ্গে ওই দু’টো ছেলের তর্কাতর্কি হয়েছে। তা হলে কি সেই রাগেই ওরা কিছু করল?’’
শিয়ালদহ জিআরপি জানায়, ওই দিন কাঞ্চনকন্যার সব কর্মীকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সাহায্য চাওয়া হয়েছে সাঁইথিয়া জিআরপি-র। কারণ, রেলকর্মীদের দাবি অনুযায়ী গঙ্গারামকে সাঁইথিয়া স্টেশনেই শেষ বার দেখা গিয়েছিল। এক তদন্তকারী আধিকারিকের কথায়, ‘‘সে-দিন ওই ট্রেনে উপস্থিত সব কর্মীকেই ডাকা হয়েছিল। দু’জন আসেননি। ওঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই অনেক কিছু জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy