সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোয় আপাতত তিনি জেল-হাজতে। এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম ও রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পরিচালন পর্ষদ থেকে বাদ পড়তে চলেছেন রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল রজত মজুমদার। স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিরেক্টর হিসেবে তিনি ওই দু’টি সংস্থায় আছেন। মেয়াদ বাকি থাকুক বা না-থাকুক, ওই দুই সংস্থার পরিচালন পর্ষদে তাঁকে আর দায়িত্বে রাখতে চাইছে না সরকার। তাঁকে সরানোর ভাবনাচিন্তা চলছে প্রশাসনিক মহলে।
তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে রজতবাবুকে সরকারি ওই দুই বিদ্যুৎ সংস্থায় ‘ইনডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর’-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন তাঁকে দু’টি সংস্থা থেকেই বাদ দেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে কেন?
অভিযোগ, পদে বসার পর থেকে দু’টি সংস্থাতেই রজতবাবু ক্ষমতার যথেচ্ছ অপব্যবহার করেছেন। শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলে কেউ তাঁকে সে-ভাবে চটাতে চাইতেন না। কিন্তু সারদা কাণ্ডে তাঁর গ্রেফতারির পরে বেশ অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে সব দায়িত্বপূর্ণ পদ থেকেই ছেঁটে ফেলার উদ্যোগ চলছে। প্রশাসনের অন্দরের খবর, দু’টি বিদ্যুৎ সংস্থার পরিচালন পর্ষদ থেকে প্রাক্তন ডিজি-কে বাদ দেওয়াটা সেই উদ্যোগের অংশ।
বিভিন্ন সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমে পরিচালন পর্ষদের ডিরেক্টর-পদে রজতবাবুর মেয়াদ শেষ হতে এখনও বেশ কিছু দিন বাকি আছে। কিন্তু ৩০ সেপ্টেম্বর মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে নিগমের অন্য তিন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিরেক্টরের। ওই তিন ডিরেক্টর হলেন এনটিপিসি-র প্রাক্তন কর্তা এন এন মিশ্র, প্রাক্তন মুখ্যসচিব অর্ধেন্দু সেন এবং একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্ণধার এস রাধাকৃষ্ণন। ফলে চলতি মাসের মধ্যেই নিগমের নতুন পরিচালন পর্ষদ গঠন করে ফেলা প্রয়োজন। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, সরকারের উপর মহল থেকে নিগম-কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন পর্ষদ গড়ে ফেলার জন্য সবুজ সঙ্কেত চলে গিয়েছে। সে-ক্ষেত্রে রজতবাবুর মেয়াদ বাকি থাকলেও তাঁকে বাদ দিয়েই নতুন পরিচালন পর্ষদ গড়ার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।
এমনকী মেয়াদ অবশিষ্ট থাকুক বা না-থাকুক, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পরিচালন পর্ষদ থেকেও রজতবাবুকে সরানোর সিদ্ধান্ত প্রায় পাকা। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আগামী দিনে রজতবাবু জামিন নিয়ে বেরিয়ে এলেও তিনি যাতে সরকারের কোনও সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকতে না-পারেন, তাই এই আগাম সাবধানতা নেওয়া হচ্ছে। যদিও এই ব্যাপারে সরকারি ভাবে এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত নির্দেশিকা নিগম এবং বণ্টন সংস্থার কর্তৃপক্ষের কাছে যায়নি বলেই খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy