এই স্টেশনই ‘স্যাটেলাইট স্টেশন’-এর তকমা পেতে চলেছে। নিজস্ব চিত্র
দক্ষিণ-পূর্ব রেল তথা রাজ্যের এই স্টেশন পরিচালনার ভার আগেই তুলে দেওয়া হয়েছে মহিলা রেল কর্মীদের হাতে। এ বার ‘এ-ওয়ান’ স্টেশন খড়্গপুরের ‘স্যাটেলাইট স্টেশন’ হিসেবে তকমা পেতে চলেছে খুরদা রোড শাখার হিজলি স্টেশন। রাজধানী এক্সপ্রেস-সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দূরপাল্লার ট্রেন খড়্গপুরের পরিবর্তে যাতায়াত করবে হিজলি স্টেশন দিয়েই।
বছর কয়েক আগে থেকেই খড়্গপুরের বদলে হিজলি স্টেশন দিয়েই চালানো হচ্ছে সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস ও উৎকল এক্সপ্রেস। এ বার রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনও যাতায়াত করবে এই স্টেশন দিয়েই। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার থেকে পুরী-নিউদিল্লি পুরুষোত্তম এক্সপ্রেস, পুরী-নিউদিল্লি নন্দনকানন এক্সপ্রেস, পুরী-নিউদিল্লি নীলাচল এক্সপ্রেস, ভুবনেশ্বর-নিউদিল্লি ভায়া আদ্রা রাজধানী এক্সপ্রেস, ভুবনেশ্বর-নিউদিল্লি ভায়া টাটানগর রাজধানী এক্সপ্রেস হিজলি স্টেশন হয়ে চলবে। আগে এই ট্রেনগুলি খড়্গপুর পর্যন্ত এসে ফের গন্তব্যের পথে যাত্রা করত। তবে এখন থেকে এই ট্রেনগুলি আর খড়্গপুর স্টেশনে আসবে না। হিজলি স্টেশন পর্যন্ত এসেই ফের গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওডিশা বা দক্ষিণ ভারত থেকে দিল্লিগামী ট্রেন খড়্গপুর স্টেশনে এলে ইঞ্জিনের অভিমুখ বদলাতে হয়। ফলে ওই ট্রেনগুলিকে খড়্গপুর স্টেশনে প্রায় ২৫ মিনিট অতিরিক্ত সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তার জেরে প্ল্যাটফর্ম না পাওয়ায় অন্য ট্রেনগুলিকে স্টেশনের বাইরে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সময়ে ট্রেন না চলায় ক্ষুব্ধ হন যাত্রীরাও। এই সমস্যা মেটাতে বছর কয়েক আগে উৎকল ও সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেসকে খড়্গপুরের বদলে হিজলি স্টেশন দিয়ে চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ বার সেই একই কারণে আরও পাঁচটি ট্রেন হিজলি স্টেশন দিয়ে চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “হিজলি ক্রমেই খড়্গপুরের ‘স্যাটেলাইট স্টেশন’ হওয়ার দিকে এগোচ্ছে। এই পাঁচটি ট্রেন হিজলি থেকে চললে প্ল্যাটফর্মের পাওয়ার জন্য খড়্গপুর স্টেশনের বাইরে অন্য ট্রেনগুলিকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।”
তবে নতুন পাঁচটি ট্রেন হিজলি স্টেশন দিয়ে চালাতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে বলে রেল সূত্রে খবর। কারণ, এখন অনেকেই তিন-চার মাস আগে দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট কেটে ফেলেন। ফলে এখন ওই সমস্ত ট্রেনে অনেকেরই খড়্গপুর পর্যন্ত টিকিট কাটা রয়েছে। তাই আগে ওই সমস্ত ট্রেনে খড়্গপুর পর্যন্ত টিকিট দেওয়া বন্ধ করে তারপরেই হিজলি থেকে ট্রেন চালানো সম্ভব হবে। রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “হিজলি থেকে ট্রেন চালানোর নির্দেশ হওয়ায় টিকিটের পরিবর্তন, সময়সূচি তৈরি, প্রচার-সহ নানা কাজ করতে হবে। তাই কবে থেকে হিজলির জন্য টিকিট দেওয়া হবে সে বিষয়ে আমরা রেলবোর্ডে জানতে চেয়েছি। সেই দিনক্ষণ এলেই চালানো হবে ট্রেন।”
তবে রেলের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে হিজলি স্টেশনে যাতায়াত করতে ভোগান্তির শিকার হতে হবে বলে দাবি একাংশ যাত্রীর। হিজলি স্টেশনের অদূরেই রয়েছে খড়্গপুর আইআইটি, তালবাগিচা এলাকা। ওই সব এলাকা থেকে স্টেশনে যাতায়াতে সুবিধা রয়েছে। তবে স্টেশনে যাতায়াতে সমস্যায় পড়বেন মালঞ্চ, সুভাষপল্লি, ইন্দার মতো শহরের দূরবর্তী এলাকার মানুষেরা। এ বিষয়ে কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “ট্রেন চলাচল শুরু হলেই যোগাযোগ বাড়বে। হিজলি স্টেশনে অটো, টোটো, ট্যাক্সির পার্কিংয়ের জন্য টেন্ডার ডাকব। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে রাজ্যের সঙ্গেও
কথা বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy