সাংবাদিক বৈঠকে রাজীব শুক্ল। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে রাহুল গাঁধীর সফরের আগে তৃণমূলকে চাপে রাখতে বিজেপি সরকারের সঙ্গে তাদের গোপন ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে আক্রমণ অব্যাহত রাখল কংগ্রেস। রাহুলের নির্দেশে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রথম বছরের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে প্রচারে কলকাতায় এসে একের পর এক কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতা তৃণমূল এবং বিজেপি সরকারকে এক বন্ধনীতে এনে সমালোচনা করছেন। সচিন পায়লট, জয়রাম রমেশের পরে সোমবার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব শুক্লও প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে এসে নরেন্দ্র মোদী-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সমঝোতা’ নিয়েই সরব হয়েছেন।
মোদী ও মমতা সরকারকে একই মুদ্রার দুই পিঠ বলে উল্লেখ করেছিলেন রমেশ। রাজীব এ দিন হাতিয়ার করেছেন কৃষক মৃত্যুর ঘটনাকে। মোদী ও মমতা সরকারকে এক বিন্দুতে এনে তাঁর অভিযোগ, ‘‘দেশ জুড়ে কৃষকের আত্মহত্যা বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গেও আলু চাষিরা আত্মহত্যা করছে। গুজরাত, মহারাষ্ট্রেও একই অবস্থা। মোদী যেমন কৃষকদের জন্য কিছু করছেন না, মমতাজিও কৃষকদের বাঁচাতে কিছু করছেন না।’’ ধান বিক্রি করেও কৃষকেরা যে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না, তার উল্লেখ করেন রাজীব।
আলু ও ধান চাষিদের নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে ‘উদাসীনতার অভিযোগে শাসক দলকে চাপে ফেলতে ৬ জুন কলকাতায় এসে চাষিদের নিয়ে মিছিলকরার কথা স্বয়ং রাহুলের। তার আগেআলু ও ধান চাষিদের নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দলীয় আক্রমণের মুখবন্ধই এ দিন রাজীব রচনা করেছেন বলে কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা। কেন্দ্র ওরাজ্য দুই সরকারের ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে কটাক্ষের সূত্রেই রাজীব এ দিন বলেন, ‘‘তৃণমূল-বিজেপি’র মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে, এ নিয়ে সংসদেও আলোচনা হয়। বিল পাশে তৃণমূলের সাহায্য চায় বিজেপি। তৃণমূল কেলেঙ্কারির তদন্ত থেকে বাঁচতে চায়। কোথাও না কোথাও ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।’’
তৃণমূল অবশ্য কংগ্রেসের এই আক্রমণকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। দলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনের কথায়, ‘‘বিজেপি-র মতাদর্শ আলাদা। তৃণমূল জনস্বার্থ এবং নিজেদের মতাদর্শ নিয়ে চলে। দু’টো দলের মধ্যে তুলনা টানা অর্থহীন!’’ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সম্পর্কের সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয়কে এক করে দেখা উচিত নয় বলেও ডেরেকের ব্যাখ্যা।
রাজীব এ দিন কৌশলে তৃণমূলকে চাপে রাখতে মমতার প্রাক্তন সেনাপতি মুকুল রায়ের জন্য কংগ্রেসের দরজা খোলা রাখার কথাও বলেছেন। মুকুল কংগ্রেসে যোগ দেবেন কি না, তার নির্দিষ্ট উত্তর না দিলেও মমতার দলের স্নায়ুচাপ বাড়াতে রাজীব বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের যে কেউই কংগ্রেসে যোগ দিতে চাইলে স্বাগত। কংগ্রেসে এলে তো ঘর ওয়াপ্সিই হবে! তবে কে কংগ্রেসে আসবেন, কবে আসবেন, তা হাইকম্যান্ড স্থির করবে।’’ সারদা-কাণ্ডে মুকুলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্ত্বেও তাঁকে দলে নিতে কংগ্রেস ইচ্ছুক কি না, জানতে চাইলে রাজীবের জবাব, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। সংগঠন শক্তিশালী করার ক্ষমতা কারও আছে কি না, সেটাই বিবেচ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy