Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Rajib Banerjee

Nandigram: নন্দীগ্রামে হেরেছি, আমাকে বলেছিলেন শুভেন্দু, দাবি রাজীবের, সমর্থন জয়প্রকাশের

রাজীবের বক্তব্যকে সমর্থন করলেন সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া জয়প্রকাশ মজুমদার। নন্দীগ্রামের ভোটের ফলাফল নিয়ে রাজীব বলেন, ‘‘ভোটের দিন আমাকে ফোনে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, তিনি হেরে গিয়েছেন। কিন্তু পরে কী ভাবে তিনি জিতে যান? তা জানি না।’’

(বাঁ-দিক থেকে) রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী এবং জয়প্রকাশ মজুমদার।

(বাঁ-দিক থেকে) রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী এবং জয়প্রকাশ মজুমদার। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২২ ১৫:২৫
Share: Save:

নন্দীগ্রামে তিনি হেরে গিয়েছেন। গত বছরের ২ মে ভোটের ফল প্রকাশের পর দলীয় সতীর্থ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নাকি এমনটাই জানিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের পাশে বসে এমনটাই দাবি করলেন তৃণমূল নেতা রাজীব। তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করলেন সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া জয়প্রকাশ মজুমদার। নন্দীগ্রামের ভোটের ফলাফল প্রসঙ্গে রাজীব বলেন, ‘‘ভোটের দিন আমাকে ফোনে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন তিনি হেরে গিয়েছেন। কিন্তু পরে কী ভাবে তিনি জিতে যান, তা জানি না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের ভোটের ফের গণনা করা হোক। তা হলেই দুধ কা দুধ পানি কা পানি হয়ে যাবে।’’

পাশে বসে জয়প্রকাশ যোগ করেন, ‘‘২ মে বিকেল ৫টায় আমি সাংবাদিক বৈঠক করে বলি মাননীয়া নন্দীগ্রামে জিতে গিয়েছেন। আমাদের প্রার্থী শুভেন্দু নন্দীগ্রামে পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু পরে জানতে পারি অন্য ফল হয়েছে। শুভেন্দুকে আমি যখন বলি, তুমি তো হেরে গিয়েছিলে, আবার জিতলে কী ভাবে? জবাবে শুভেন্দু রহস্যময় হাসি হেসে বলেন, অনেক কিছু করতে হয়েছে।’’ রাজীব-জয়প্রকাশের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে বিরোধী দলনেতাকে হোয়াটস অ্যাপে বার্তা পাঠানো হলে নিরুত্তর থেকেছেন তিনি। তবে বিরোধী দলনেতার হয়ে জবাব দিয়েছেন বিজেপি-র প্রবীণ বিধায়ক মিহির গোস্বামী। নাটাবাড়ির বিধায়ক বলেন, ‘‘যাঁরা বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে এসব কথা বলছেন, তাঁরা কে? এবং তাঁদের কার্যকলাপই বা কী? তা বাংলার মানুষ জানেন। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে এখনও ভাল কিছু পাননি ওরা। তাই শুভেন্দুর নামে আজেবাজে কথা বলে মমতার কাছে নিজেদের নম্বর বাড়িয়ে কিছু পাওয়ার আশা করছেন তাঁরা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের ফলাফল যে কতটা সত্যি তা নন্দীগ্রামের মানুষ জানেন। তাঁরা ইতিহাস তৈরি করেছেন। আর ওইসব লোকেরা তো নন্দীগ্রামের মানুষকেই অপমান করছেন।’’

সম্প্রতি বিধানসভায় নন্দীগ্রামের ভোট প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, নন্দীগ্রামে তাঁকে হারাতে সমঝোতা (অ্যাডজাস্টমেন্ট) করা হয়েছিল। তবে সেই সমঝোতা কারা করেছিলেন, সে বিষয়ে তাঁর ভাষণে বিস্তারিত কিছু বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি শুধু বলেছিলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যাঁরা ষড়যন্ত্র করেছিলেন, সেই ষড়যন্ত্রকারীদের উচিত এখন মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা!’’

তার পর আবার নন্দীগ্রাম বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিলেন রাজীব-জয়প্রকাশ।

বিধানসভা ভোটে নিজের কেন্দ্র ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নন্দীগ্রামের বিদায়ী বিধায়ক তথা বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু। ২ মে বিকেলে আচমকাই খবর চাউর হয়, নন্দীগ্রামে ১২০০ ভোটে জয়ী হয়েছেন মমতা। এমনকী, মমতা জয়ী হয়েছেন ঘোষণা করে টুইটও করে সংবাদ সংস্থা এএনআই। কিন্তু তার কিছু পরে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে বিজয়ী ঘোষিত হন শুভেন্দু। নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, ১৯৫৬ ভোটে শুভেন্দু জিতেছেন।

পরে বিষয়টি নিয়ে আদালতেও গিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন।

গত ৩ অক্টোবর ভবানীপুর উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা সাংবিধানিক শর্তপূরণ করেছেন। কিন্তু তাতেও থেমে নেই নন্দীগ্রামের ফলাফল বিতর্ক।

প্রসঙ্গত, শুভেন্দুর মতোই বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছে়ড়ে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন রাজীব। প্রার্থী হয়েছিলেন ডোমজুড় কেন্দ্রে। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ ঘোষের কাছে ৪০ হাজার ভোটে পরাজিত হন রাজীব। তারপর থেকে আর তাঁকে বিজেপি-র কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। শেষমেশ গত বছর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ত্রিপুরার জনসভায় ফের তৃণমূলে যোগ দেন। সম্প্রতি তাঁকে ত্রিপুরা রাজ্য তৃণমূলের পর্যবেক্ষক করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE