Advertisement
০৫ মে ২০২৪
dam

বৃষ্টির মধ্যেই কাজ চলল বাঁধ মেরামতির

প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী বিভিন্ন ব্লক থেকে প্রায় ৩২ হাজার মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে নিরাপদ জায়গায়।

নদীপাড়ের বাসিন্দাদের ফ্লাড শেল্টারে আনছেন পুলিশকর্মীরা। গোসাবার ছোট মোল্লাখালিতে। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা

নদীপাড়ের বাসিন্দাদের ফ্লাড শেল্টারে আনছেন পুলিশকর্মীরা। গোসাবার ছোট মোল্লাখালিতে। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৫১
Share: Save:

দুর্যোগের আশঙ্কায় বার বার আসছিল সতর্কবার্তা। তবে শুক্রবার পর্যন্ত ঝলমলে আকাশে মজে ছিলেন উৎসবপ্রেমী মানুষ। কিন্তু দু’দিনের মধ্যে মেঘ ঘনিয়ে এল। সোমবার শুরু হলে গেল বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়াও। দুর্বল বাঁধ নিয়ে চিন্তিত মানুষ। নদী-সমুদ্র সংলগ্ন বহু এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অনেককে। কার্যত পর্যটকশূন্য বকখালি, দিঘা। সমুদ্রে নামার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ফেরি বন্ধ থাকায় মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে কার্যত যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন দ্বীপ এলাকাগুলি।

প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী বিভিন্ন ব্লক থেকে প্রায় ৩২ হাজার মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে নিরাপদ জায়গায়। শ’তিনেক ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন ব্লকেও নদীপাড়ের প্রায় ১৯ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। দুই জেলার বিভিন্ন ব্লকে পৌঁছে গিয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যেরা।

সোমবার দুই জেলার কিছু জায়গায় বাঁধে ধস নেমেছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। তবে জল ঢোকার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। গোসাবার পাখিরালয়, কচুখালি, কালীদাসপুর-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় এ দিন নদীবাঁধে ধস নামে। দ্রুত সেচ দফতর ও পঞ্চায়েতের তরফে বাঁধ মেরামতি করা হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় বেহাল বাঁধে ত্রিপল বিছিয়ে রাখা হয়েছে। হিঙ্গলগঞ্জের দুলদুলি ভেসেল ঘাটের পাশে বেহাল নদীবাঁধ সংস্কারে এ দিন বৃষ্টির মধ্যেই কাজ চলে। আরও কয়েক জায়গায় বাঁধে মাটি ফেলা হয়েছে।

দুই জেলাতেই ফেরি চলাচল বন্ধ। গঙ্গাসাগর এবং বকখালিতে পর্যটকদের ঘোরাঘুরিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন্ধ সুন্দরবন ভ্রমণ। প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে এ দিন হলদিয়া থেকে ‘মা গঙ্গা’ নামে একটি ট্রলার শতাধিক পান চাষিকে নিয়ে কচুবেড়িয়া ভেসেল ঘাট থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে এসে যাত্রী নামায়। প্রশাসন খবর পেয়ে ট্রলারের মাঝি-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। ট্রলার আটক করা হয়েছে।

মহকুমা দফতরগুলিতে কন্ট্রোল রুম খুলে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালানো হচ্ছে। প্রতিটি পঞ্চায়েতে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, ত্রিপল এবং পানীয় জল মজুত করে রাখা হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলিতেও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে। বিপর্যয় ঘনিয়ে এলে দ্রুত উদ্ধার-কাজ চালাতে তৈরি রাখা হচ্ছে জলযান।

সোমবার সকাল থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকা-সহ জেলার প্রায় সর্বত্রই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। কখনও কখনও ঝোড়ো হাওয়া বয়েছে। দিঘা, মন্দারমণিতে সমুদ্রে মাঝারি উচ্চতার ঢেউ ছিল। তবে বিকেল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে প্রশাসন। এ দিন দুপুরের মধ্যে দিঘা, রামনগর, কাঁথি, খেজুরি, নন্দীগ্রাম ও হলদিয়ার উপকূলবর্তী এলাকাগুলি থেকে প্রায় ২৫ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ হাজার বাসিন্দাকে উপকূলবর্তী আশ্রয় কেন্দ্রগুলিতে রাখা হয়েছে। বাকিরা আত্মীয়-পরিজনদের বাড়িতে গিয়েছেন।

তবে উদ্বেগ বাড়িয়েছে সোমবার থেকে অমাবস্যার ভরা কোটালের জোয়ার। রূপনারায়ণ, হুগলি, হলদি নদীর জলস্তর বেড়েছ। এ দিন তমলুক শহর-সংলগ্ন রূপনারায়ণ নদের বাঁধ পরিদর্শনে যান তমলুকের মহকুমাশাসক শৌভিক ভট্টাচার্য ও পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, ‘‘সোমবার সকাল থেকে অল্প বৃষ্টি হয়েছে। নদীতে জলস্তর কিছুটা বেড়েছে। তবে এখনও কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dam Repair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE