কৃষ্ণপুর স্টেশনে অধীর চৌধুরী
ধাক্কাটা যে সহজ নয়, জানিয়ে গেলেন রেল-কর্তারা। বিক্ষোভে ধ্বস্ত ধুলিয়ান স্টেশনে দাঁড়িয়ে রেলের মালদহ ডিভিশনাল ম্যানেজার জিতেন্দ্র প্রসাদ মঙ্গলবার জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘‘সাত দিনের আগে এই পথে ট্রেন চলাচল সম্ভব নয়।’’ রেলের সিগন্যালিং সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আপাতত সেখানে ট্রেন চলাচল করা মুস্কিল।
বুধবার জিয়াগঞ্জ স্টেশনে এসে প্রায় একই সুরে শিয়ালদহ ডিভিশনাল ম্যানেজার প্রভাস দানসেনা বলেন, ‘‘দেখুন, যা ক্ষতি হয়েছে তা মেরামত করতে সময় লাগবে। নিরাপদে ট্রেন চালাতে সিগন্যালিং ব্যবস্থা অপরিহার্য। বিক্ষোভকারীরা যে ভাবে ভেঙে পুড়িয়ে-গুঁড়িয়ে দিয়েছে ওই ব্যবস্থা তাতে কত দিনে তা সারিয়ে তোলা যাবে, এখনই বলা সম্ভব নয়।’’ তিনি জানান, নতুন করে সিগন্যালিং ব্যবস্থার কাজ শুরু করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব কাজ করার আশ্বাস দিলেও তা যে সময় সাপেক্ষ, ডিআরএম-এর কথায় এ দিন তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে আঁচে ইতিমধ্যেই পুড়েছে মুর্শিদাবাদের একাধিক স্টেশন। কৃষ্ণনপুর রেল ইয়ার্ডে দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি ট্রেন ঝলসে গিয়েছে। জঙ্গিপুর মহকুমায় ১০টি রেল স্টেশন ভাঙচুরে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার, ডিআরএম মালদহ জানিয়ে গিয়েছিলেন, “সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিমতিতা ও সুজনিপাড়া রেল স্টেশন দু’টির। ধুলিয়ানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ৭ কোটি টাকা। ক্ষয়ক্ষতি সারাতে সময় লাগবে। অন্তত এক সপ্তাহের আগে কিছুই করা সম্ভব নয়। ট্রেন চালাতে গেলে যাত্রীদের যাবতীয় সুবিধা স্টেশনগুলিতে যা বহাল ছিল সেগুলোও ঠিক করতে হবে।’’
বিক্ষোভের আঁচে আজিমগঞ্জ-মালদহ শাখায় সমস্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে রয়েছে গত ৬ দিন। নিয়মিত যারা ট্রেন পথেই যাতায়াত করেন তাদের কপালে ভাঁজ। ক্ষতিগ্রস্ত এক স্টেশনের ম্যানেজার বলেন, ‘‘যা অবস্থা, তাতে সাত দিনের আগে কাজই শুরু করা যাবে না। কয়েকটি স্টেশনে যা ভাঙচুর হয়েছে, তা এক মাসের আগে সারানো সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে কিছু ট্রেন ঘুরপথে চালানোর ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।’’ রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাগীরথি এক্সপ্রেস কৃষ্ণনগর পর্যন্ত চলছে, এ সপ্তাহে তাকে পলাশি পর্যন্ত চালানোর চেষ্টা করা হবে। তবে এখনই সেই ট্রেনটিকে মুর্শিদাবাদে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্ন নেই।
শনিবার বিকেলে মুর্শিদাবাদের লালগোলা ও কৃষ্ণপুর স্টেশনে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এ দিন সেই কৃষ্ণপুরের কারশেডে দাঁড়িয়ে ডিআরএম শিয়ালদহ বলেন, ‘‘যা ঘটেছে তাতে রেলকর্মীরা নিজেরাই নিরাপদ নন। এখানকার সাধারণ মানুষকে বুঝতে হবে। এ জেলায় নিরাপদ পরিবেশ তৈরি না হলে ট্রেন চালানো সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy