Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
Santanu Banerjee

চড়তেন অন্যের গাড়ি, মালিককে ভাড়ার টাকা মেটাত জেলা পরিষদ, সেই টাকা যেত শান্তনুর কাছে!

নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে শান্তনুর প্রভাব নিয়ে এলাকায় নানা কথা এখন মুখে মুখে ফিরছে। জিরাটে নিলয়ের একটি হোটেল রয়েছে।

Santanu banerjee.

ধৃত যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

প্রকাশ পাল, বিশ্বজিৎ মণ্ডল
বলাগড় শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৩ ০৭:২৫
Share: Save:

কালো রঙের যে এসইউভি-তে ধৃত যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা যেত, সেটি তাঁর নামে কেনা নয়। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের পরে ওই গাড়িটি কেনা হয় শান্তনু ঘনিষ্ঠ নিলয় মালিকের নামে। নিলয়ের দাবি, গাড়িটি হুগলি জেলা পরিষদে ভাড়া খাটানো হত। সেই বাবদ প্রতি মাসে ১৩ হাজার টাকা নিলয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আসে। তবে, সেই টাকা তুলে শান্তনুকে দিয়ে দিতে হয় তাঁকে। শান্তনু জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ।

নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে শান্তনুর প্রভাব নিয়ে এলাকায় নানা কথা এখন মুখে মুখে ফিরছে। জিরাটে নিলয়ের একটি হোটেল রয়েছে। পাশাপাশি, বলাগড় থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ করেন তিনি। নিলয়ের দাবি, বেশ কিছু দিন ধরে শান্তনুর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নেই। তবে, এক সময় ছায়াসঙ্গী ছিলেন। তাঁর নামে ওই গাড়ি বাদেও বিভিন্ন সম্পত্তি শান্তনু কিনেছিলেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘অনেক সময়েই শান্তনু নানা রকমের কাগজে সই করিয়ে নিত আমাকে দিয়ে।’’

বলাগড়ের চাদরায় একটি রিসর্টে ইডি আধিকারিকেরা শনিবার তল্লাশি চালান। বছর দুয়েক আগে রিসর্টের সামনে প্রায় ১৭ কাঠা জমি কেনা হয় নিলয় এবং শান্তনুর অন্য ঘনিষ্ঠ সুপ্রতিম ঘোষ ওরফে আকাশের নামে। শ্যামসুন্দর নন্দী নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘ওই জমি আমার বাবার নামে ছিল। এক জন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ৪৩ হাজার টাকা কাঠায় নিলয় এবং আকাশের নামে ওই জমি কেনা হয়।’’ সাগর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে আর এক গ্রামবাসীর দাবি, রিসর্টের এক দিকে তাঁর পাকা বাড়ি-সহ আড়াই বিঘা জমি নিলয় এবং শান্তনুর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কেনা হয় ২০২০ সালে। জমির দাম বাবদ ১৯ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাঁকে ৯ লক্ষ টাকার বেশি দেওয়া হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি, ওই দু’টি জায়গাতেই ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজে মাটি ফেলা হয়। চাঁদরা গ্রামে গঙ্গা ভাঙনপ্রবণ। রিসর্টের পাশে ভাঙন আটকাতে বালির বস্তা ফেলা হয় সরকারি প্রকল্পে।

রিসর্টের পাশে গঙ্গাভাঙন আটকানো এবং ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ নিয়ে শ্রীপুর-বলাগড় পঞ্চায়েতের প্রধান তথা শান্তনুর খুড়তুতো ভাই অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। অতনু বলেন, ‘‘ভাঙন রোধের কাজ জেলা পরিষদের সেচ বিভাগ করেছে।’’ জেলা পরিষদের সেচ কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জেলা পরিষদ নয়, ওই কাজ সেচ দফতর করেছে। কোথায় কার রিসর্ট আছে, সে সব দেখা হয়নি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Santanu Banerjee Recruitment Scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE