প্রতীকী ছবি।
কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন রাজমিস্ত্রি। রাতে বাড়ি ছেড়ে থাকছিলেন ক্লাবঘরে। পশ্চিম বর্ধমানের উখড়ায় প্রেমনাথ বাউড়ি (৪৫) নামে ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ মিলল বৃহস্পতিবার সকালে। পরিবারের দাবি, টানা কয়েক দিন কাজ না থাকার জেরে অবসাদ ও পরে করোনা-সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন মনে করে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।
জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠি ফোন ধরেননি। উত্তর মেলেনি হোয়াটসঅ্যাপ ও এসএমএসের। তবে মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তিকে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বুধবার সাধারণ জ্বর হয়েছে জানানোর পরেও কেন এমন ঘটল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সবাই ভরসা রাখুন।’’ উখড়া পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের রিতা ঘোষ জানান, ওই ব্যক্তির ‘জব-কার্ড’ থাকলেও এলাকায় গত কিছু দিন ধরে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ না থাকায় তা তিনি পাননি।
উখড়া মাঝপাড়ায় শ্বশুর-শাশুড়ি ও তিন মেয়েকে নিয়ে থাকতেন প্রেমনাথবাবু। তাঁর শ্বশুর সুমন্ত বাউড়ির দাবি, ‘‘করোনা-পরিস্থিতিতে জামাই দিন পনেরো কাজ না পেয়ে অবসাদে ভুগছিল। সোমবার থেকে জ্বর হয়। অন্য কোনও উপসর্গ ছিল না।’’ পরিজনেরা জানান, তখন থেকে তিনি রাতে এলাকার একটি ক্লাবঘরে থাকছিলেন। সেখানে দু’-এক জন রাতে থাকেন। বুধবার রাতে ক্লাবে গেলেও বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ি ফেরেন প্রেমনাথবাবু। সকালে বাড়িরই একটি ঘরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ মেলে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তিনি ‘সিলিং’ থেকে গামছার ফাঁসে আত্মঘাতী হয়েছেন।
মৃতের বড় মেয়ে বছর সতেরোর তরুণীর দাবি, ‘‘বাবা ভেবেছিলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সংসারের যা অবস্থা, তাতে চিকিৎসা করাতে না পারার আশঙ্কায় আত্মঘাতী হয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।’’ পুলিশ জানায়, এলাকা থেকে খবর পেয়ে মঙ্গলবার প্রেমনাথবাবুকে বাড়িতে আলাদা থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। বুধবার খান্দরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান তিনি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আধিকারিক পরিতোষ সোরেন বলেন, ‘‘ওঁর ভাইরাল ফিভার হয়েছিল। বিশ্রাম নিতে বলা হয়েছিল। করোনা-আতঙ্ক অমূলক।’’
রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত বলেন, ‘‘এখন জ্বর-সর্দিতে আক্রান্তের সঙ্গে আন্তরিক ব্যবহার করা দরকার প্রশাসনের। কর্মহীন মানুষদের জন্য যে সব সাহায্যের কথা বলা হচ্ছে, তা দ্রুত পৌঁছতে হবে সরকারকে। এ সব দিকে নজর দিলে হয় তো এই ঘটনা ঘটত না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy