শুনানি বন্ধ ছিল ১১ মাস। আরও মাসখানেকের বেশি পিছিয়ে গেল সিঙ্গুর মামলা। সুপ্রিম কোর্টে আজ ওই শুনানিই হল না। আগামী ১৯ ও ২০ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধাযর্র্ হয়েছে। বিচারপতি পরপর দু’দিন শুনানি নির্ধারিত করায় আইনজীবী মহলের ধারণা, ২০ নভেম্বরেই রায় হতে পারে।
সিঙ্গুরের অধিগৃহীত জমি ফেরতের ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের প্রণয়ন করা আইনটিকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১২ সালে দেওয়া হাইকোর্টের ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। ১১ মাস বাদে আজ সেই মামলারই চূড়ান্ত শুনানি হওয়ার কথা ছিল সর্বোচ্চ আদালতে, প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তুর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে। আইনজীবীদের অনেকে ভেবেছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট হয়তো আজই শুনানি সেরে রায় ঘোষণা করে দেবে।
তা অবশ্য হয়নি। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলার তালিকার ক্রমপর্যায়ে ১৬ নম্বরে ছিল সিঙ্গুর। কিন্তু ১৫ নম্বরের সওয়াল-জবাব শেষ হতে হতে বিকেল চারটে বেজে যায়। ফলে সিঙ্গুর-মামলা আর ওঠেইনি। বিচারপতি দাত্তু আসন ছেড়ে উঠে যাওয়ার সময় টাটারা কৌঁসুলি অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আর্জি জানান, আগামী ১৯ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ফেলা হোক। বিচারপতি ১৯ ও ২০ নভেম্বর দু’টি দিন ধার্য করেন।
সিঙ্গুরের জমি-মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য বহু দিন ধরেই অপেক্ষা করছে রাজ্য। শুনানি ফের পিছোনোয় রাজ্য সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছে বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের অভিযোগ, “রাজ্যের জেদেই আজ এ অবস্থা!” প্রায় একই সুরে প্রদেশ কংগ্রেসের আর এক নেতা মানস ভুঁইয়া বলেছেন, “আগেও বলেছি এবং এখনও বলছি, সিঙ্গুরের মানুষের স্বার্থে এবং রাজ্যের স্বার্থে রাজ্য সরকারের উচিত ছিল আদালতের বাইরে সমঝোতা করে নেওয়া।” আইন-সংবিধানের সংস্থানের দিকে খেয়াল না রেখে তড়িঘড়ি জমি ফেরতের সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে রাজ্য সরকার বিপত্তি ডেকে এনেছে বলেই বিরোধীদের অভিমত। সিপিএমের সাংসদ মহম্মদ সেলিম কটাক্ষ করেছেন, “এ রাজ্য এবং গোটা পূর্ব ভারতের দুর্ভাগ্য, সিঙ্গুরের ওই জমি শ্মশান হয়ে পড়ে আছে! এ রাজ্যে শিল্প হচ্ছে না, উন্নয়নও হচ্ছে না। শুধু দুর্নীতি, কেলেঙ্কারি আর অস্থিরতা চলছে!” শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় তৃণমূলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কেউ আর মুখ খোলেননি। তবে শাসক দলের এক প্রথম সারির নেতার মন্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনশন, সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন কিছুই বৃথা যাবে না। সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষক জমি ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy