Advertisement
১৯ মে ২০২৪

এক পরিবারের চার সদস্যকে পিষল ডাম্পার

দ্রুত গতিতে ছুটে যাওয়া বালিবোঝাই ডাম্পারের তলায় আটকে একটা মোটরবাইক আর বছর দশেকের এক বালক! প্রায় দু’কিলোমিটার এ ভাবেই যাওয়ার পরে ডাম্পারটি থামান চালক।

দুর্ঘটনার পরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ডাম্পারে। —নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনার পরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ডাম্পারে। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৯
Share: Save:

দ্রুত গতিতে ছুটে যাওয়া বালিবোঝাই ডাম্পারের তলায় আটকে একটা মোটরবাইক আর বছর দশেকের এক বালক! প্রায় দু’কিলোমিটার এ ভাবেই যাওয়ার পরে ডাম্পারটি থামান চালক। ততক্ষণে বালক মৃত। খানিক আগে ওই ডাম্পারের ধাক্কাতেই মৃত্যু হয়েছে তার মা, বোন ও মামার। তাঁরাও ছিলেন ওই মোটরবাইকে। শুক্রবার বর্ধমানের মঙ্গলকোটে বাদশাহি রোডে ওই ৪ জনের মৃত্যুতে ডাম্পারে আগুন লাগায় ক্ষুব্ধ জনতা।

পুলিশ সূত্রের খবর, বর্ধমানের নতুনগ্রাম থেকে মোটরবাইকে চড়ে দিদি, ভাগ্নে ও ভাগ্নিকে বর্ধমান-কাটোয়া রোড লাগোয়া শিবপুরে মঙ্গলকোটের বাসে তুলে দেওয়ার কথা ছিল শেখ সাইফুলের(২২)। পরে মোটরবাইকেই দিদি ইসমাতারা বিবি (৩০), ভাগ্নে আসলাম মোল্লা (১০) ও ভাগ্নি আমিনা খাতুনকে (৪) মঙ্গলকোটে পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সাইফুল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বক্সীনগরের খাঁ দিঘির কাছে উল্টো দিক থেকে আসা ডাম্পারের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে মোটরবাইকের। মারা যান সাইফুল, ইসমাতারা ও আমিনা। ডাম্পারের তলায় আটকে পড়ে আসলাম ও মোটরবাইক। সেই অবস্থায় প্রায় দু’কিলোমিটার দূরের নওয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত

চালিয়ে নিয়ে গিয়ে ডাম্পার ফেলে চালক নীলু দাস ও খালাসি বাপি রায় পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয়েরা তাঁদের পাকড়াও করে লাগোয়া একটি ঘরে আটকে

রাখেন। পরে পুলিশ ওই দু’জনকে উদ্ধার করে।

ঘটনার পরে বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে পথ অবরোধ করেন বাসিন্দারা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ডাম্পারে। বিক্ষোভ দেখানো হয় মঙ্গলকোট থানাতেও। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই রাস্তা দিয়ে হামেশাই অবৈধ বালি পাচার হয় ট্রাক-ডাম্পারে। তাতে রাস্তারও ক্ষতি হচ্ছে, বাড়ছে দুর্ঘটনা। পুলিশ দেখেও, দেখে না। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রাজ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লুঙ্গি পরে, মাথায় হেলমেট না দিয়ে, তিন আরোহীকে নিয়ে মোটরবাইক চালাচ্ছিলেন ওই যুবক। অসতর্ক হওয়াতেই এমন দুর্ঘটনা। ডাম্পারের চালক ও খালাসিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” ডাম্পারের মালিককেও আটক করেছে পুলিশ।

সাইফুলের মা মোসাম্মদ ফিরোজার আক্ষেপ, ‘‘ছেলে কথা না শুনে সাইকেল ছেড়ে মোটরবাইক নিয়ে বেরোয়। ওকে বলেছিলাম, ওদের তিন জনকে শিবপুরে পৌঁছে দিয়ে ফিরে আসবি। কেন যে ওদের পৌঁছতে মঙ্গলকোট গেল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

street accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE