মুখ: সুকনায় মোর্চার মিছিলে নিতিন ছেত্রী। নিজস্ব চিত্র।
এত দিন তাঁর দলের লোকজন ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। এ বারে খোদ বিমল গুরুঙ্গই স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, আলোচনায় ডাক পাওয়া মাত্রই বন্ধ তুলে নেওয়া হবে। সোমবার পাতলেবাসে এক সাংবাদিক বৈঠকে গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘কেন্দ্র আমাদের রাজ্যের দাবি নিয়ে আলোচনায় ডাকলেই বন্ধ তুলে নেওয়া হবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, আগামী ৯ অগস্ট থেকে তরাই-ডুয়ার্সে জোরদার আন্দোলন শুরু হবে।
বন্ধ তোলা নিয়ে মোর্চার উপরে চাপ বাড়ছিল। আবার বন্ধের পক্ষে দাঁড়িয়ে সওয়াল করছিলেন দলের যুব নেতারা। এই সাঁড়াশি চাপের মধ্যে পড়ে গুরুঙ্গ আগেও পাহাড়ের সব দলকে জানান, এখনই বন্ধ তোলা সম্ভব নয়। কিন্তু টানা বন্ধ চালিয়ে যাওয়া যে সব দিক থেকেই পাহাড়ের পক্ষে ক্ষতিকর, সেটাও ভাল ভাবেই বুঝতে পারছিলেন মোর্চা নেতৃত্ব। তাঁরা বারবারই চাইছেন, দিল্লি মধ্যস্থতার বার্তা দিক, আলোচনায় ডাকুক। সে জন্য মোর্চার কয়েক জন নেতা রাজধানীতে দৌত্যের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এর বড় কারণ, লাগাতার বন্ধে বড় ধাক্কা খেয়েছে পর্যটন থেকে চা শিল্প এবং স্কুল, সব কিছুই। কোনও কোনও মহল অভিযোগ তুলেছে, এই আন্দোলনের সঙ্গে নেপালের মাওবাদীরাও যুক্ত।
ঘটনাচক্রে, এ দিনই শিলিগুড়িতে দু’টি এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে নেপালের এক নাগরিক ও সুকনার মোর্চার যুব সভাপতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ২৯ জুলাই সুকনায় মিছিলের সময়ে পেট্রোল বোমা নিয়ে হামলা চালানোর ঘটনায় ওই দু’জন যুক্ত। শিলিগুড়ির সিপি নীরজকুমার সিংহ বলেন, ‘‘ওই দু’জনের যোগাযোগ কত দিনের, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ জানায়, ধৃত নেপালের নাগরিকের নাম উদয়ন ফাগো ওরফে লিম্বু। তিনি ইলম জেলার বাসিন্দা। সেখানে ব্যবসায়ের কাজে তিনি নিয়মিত তরাই-ডুয়ার্সে আসেন। ধৃত মোর্চা যুব নেতা নিতিন ছেত্রী তাঁর পূর্ব পরিচিত। ভারত-নেপাল সীমান্তের কাঁকরভিটা দিয়ে নিজে গাড়ি চালিয়ে সম্প্রতি একাধিবার উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় এসেছেন লিম্বু। সুকনায় গোলমালেও তিনি সামিল ছিলেন বলে অভিযোগ। সুকনার মোর্চা নেত্রী ছিরিং দাহাল বা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিশাল ছেত্রী এই নিয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি। তবে যুব মোর্চা নেতা নিতিনের গ্রেফতারির তীব্র প্রতিবাদ করেন মোর্চার সহকারী সাধারণ সম্পাদক জ্যোতিকুমার রাই। নিতিনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র হামলার ষড়যন্ত্র-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
প্রথমে মোর্চা নেতা নরবুজি লামাকে গ্রেফতার করা হল। তার পরে লিম্বু ও নিতিন। এই চাপের মধ্যেই এ দিন আলোচনায় ডাকলে বন্ধ তুলে নেওয়ার কথা বললেন গুরুঙ্গ। কিন্তু সঙ্গে জানালেন, আলোচনা গোর্খাল্যান্ড নিয়ে হতে হবে। মোর্চার বক্তব্য, আলোচনায় বসার পূর্বশর্ত হিসেবে আলাদা রাজ্যের বিষয়টি সামনে না রাখলে ঘরে-বাইরে চরম সমালোচিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে জন্যই গুরুঙ্গ ঘটা করে সে কথা বলেছেন এ দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy