—নিজস্ব চিত্র।
অস্থায়ী আশ্রয় নয়, ‘অশনি’র মতো ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে বাঁচতে স্থায়ী বাঁধের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন সাগরদ্বীপের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রতি বারই জোড়াতালি দিয়ে নদীবাঁধ সারাই করা হয়। ঘূর্ণিঝড়ের পর সেই বাঁধের দিকে ফিরেও দেখে না প্রশাসন। ফলে ‘অশনি’র দাপটে প্রবল ঝড়বৃষ্টি হলে কাঁচা বাঁধ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন সাগর এবং নামখানার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার সাগরদ্বীপের মুড়িগঙ্গা-১ গ্রামপঞ্চায়েতের নদীর পাড় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা স্থায়ী নদীবাঁধ তৈরির দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের দাবি, সাইক্লোন শেল্টার নয়, স্থায়ী বাঁধ তৈরি হলেই ফি-বছর ভিটেমাটি হারাতে হবে না তাঁদের।
গত কয়েক বছরে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছে সুন্দরবন উপকূল। মাটির তৈরি নদী ও সমুদ্রবাঁধ ভেঙে নোনা জলে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। জলের তলায় চলে গিয়েছে বাড়িঘর, চাষের জমি। অথচ ‘আমপান’ বা ‘ইয়াস’-এক মতো ঘূর্ণিঝড় এলেই সাইক্লোন শেল্টারে উঠে যেতে হয় উপকূল ও বাঁধ এলাকার বাসিন্দাদের। অথচ সুন্দরবন উপকূলের বহু এলাকায় স্থায়ী নদীবাঁধ তৈরি হয়নি। সাগরের শিলপাড়ায় স্থায়ী নদীবাঁধ তৈরির কাজ শুরু হলেও তা এখনও শেষ হয়নি। তবে মুড়িগঙ্গার পাশের বঙ্কিমনগর, সুমতিনগর, সাউঘেরি, বোটখালির মতো এলাকায় এখনও কাঁচা বাঁধ রয়ে গিয়েছে। হুগলি নদীর পাড়ে মইষমারি, চকফুলডুবি ও বামনখালিতে আমপানে সমুদ্রবাঁধ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেগুলি সাময়িক ভাবে মেরামত করা হলেও সুরাহা হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
কচুবেড়িয়ার বাসিন্দা মৌসুমি বারিক বলেন, ‘‘প্রতি বার ঝড়ের আগে বালির বস্তা ফেলে কোনও রকমে জোড়াতালি দিলে বাঁধ সারাই হচ্ছে। স্থায়ী সুরাহা হয়নি। ঝড়ের পর আর বাঁধের দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না। তা হলে আমরা কোথায় যাব? প্রতি বার কি ঘরবাড়ি হারাতে হবে?’’ আর এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘মাটির বাঁধ মেরামত করতে পঞ্চায়েতকে বার বার বলা হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। আমরা চাই স্থায়ী সমাধান হোক। প্রতি বছর আর ভেসে যেতে পারছি না!’’
মঙ্গলবার জলপথে বেহাল এলাকা পরিদর্শনে যান সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা এবং ব্লক প্রশাসন ও সেচ দফতরের আধিকারিকেরা। সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, ‘‘ইয়াসের জেরে একটি বড় নদীবাঁধ ভেঙে যায়। ওখানে সাময়িক কাজ হয়েছে। দ্রুত দরপত্র আহ্বান করেছে সেচ দফতর। শীঘ্রই স্থায়ী বাঁধের কাজ শুরু হবে। স্থানীয়দের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷’’ সাগরের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘সাগরের মুড়িগঙ্গা-১ পঞ্চায়েত এলাকার ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলেছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় ইতিমধ্যেই স্থায়ী বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy