Advertisement
১৯ মে ২০২৪
কন্যার দুর্গতি নাশ হবে কবে

অর্ধেক মেয়েই স্কুল শেষ করে না

রাজ্যে ১৫-১৬ বছরের যত কিশোরী রয়েছে, তাদের অর্ধেকই স্কুলছুট। আঠেরো পূর্ণ হওয়ার আগে দুই-তৃতীয়াংশ মেয়েই চলে যায় স্কুলের বাইরে। শিশুকন্যা দিবসে উঠে এল ছবি।রাজ্যে ১৫-১৬ বছরের যত কিশোরী রয়েছে, তাদের অর্ধেকই স্কুলছুট। আঠেরো পূর্ণ হওয়ার আগে দুই-তৃতীয়াংশ মেয়েই চলে যায় স্কুলের বাইরে। শিশুকন্যা দিবসে উঠে এল ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৫৩
Share: Save:

শৈশবে স্কুলে তারা প্রায় সকলেই নাম লেখাচ্ছে। প্রাইমারি, আপার প্রাইমারিতে স্কুলে যাচ্ছেও। কিন্তু সেকেন্ডারি, অর্থাৎ নবম-দশম শ্রেণিতে ওঠার পরেই মেয়ে পড়ুয়াদের সংখ্যা তরতর করে কমে যাচ্ছে। আর উচ্চ মাধ্যমিকে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, তিন জনে মাত্র এক জন যাচ্ছে স্কুলে।

সম্প্রতি পালিত হল শিশুকন্যা দিবস (১০ অক্টোবর)। প্রতি বছরেই এই সময়টা স্কুলে মেয়েরা কেমন করছে, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। এ বছর জেলা থেকে প্রাপ্ত সরকারি পরিসংখ্যান (ডাইস) খতিয়ে দেখে ‘ক্রাই’ বলছে, পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিকে স্কুলের খাতায় শিশুকন্যাদের ৯১ শতাংশের নাম রয়েছে। উচ্চ প্রাথমিকে (অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) নাম রয়েছে রাজ্যের মোট শিশুকন্যাদের ৮২ শতাংশের। কিন্তু মাধ্যমিক স্তরে, অর্থাৎ নবম শ্রেণিতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, মাত্র অর্ধেক মেয়ের নাম রয়েছে স্কুলে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে সেটাই দাঁড়াচ্ছে ৩২ শতাংশে।

এ ব্যাপারে গোটা দেশের ছবির চাইতে এ রাজ্যের ছবিটা খুব আলাদা নয়। ভারতে দেখা যাচ্ছে, প্রাথমিকে মেয়েদের স্কুলছুটের গড় বার্ষিক হার ৪ শতাংশ, কিন্তু মাধ্যমিক স্তরে তা প্রায় ১৮ শতাংশ। আর এ রাজ্যে প্রাথমিকে মেয়েদের স্কুলছুটের গড় বার্ষিক হার কম হলেও (২.৩৭ শতাংশ) মাধ্যমিক স্তরে আরও বেশি (প্রায় ২০ শতাংশ)।

কেন এমন হচ্ছে? ‘ক্রাই’-এর বিশেষজ্ঞদের মতে, মাধ্যমিকের ক্লাসগুলো যে শিক্ষার অধিকার আইনের আওতাভুক্ত নয়, যার ফলে মিড ডে মিলের মতো প্রকল্প, বা অন্য নানা অনুদানের সুবিধে মেলে না, সেটা একটা কারণ হতে পারে। কেবল ১৪ বছর বয়স পর্যন্তই শিক্ষার অধিকার আইনের সুযোগ মিলছে।

আর একটা সমস্যা হল, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনা হয়, এমন স্কুলের সংখ্যা গোটা দেশেই কম— মাত্র ১৫ শতাংশ। এ রাজ্যেও দেখা যাচ্ছে, যেখানে ৮৩ শতাংশ স্কুলে প্রাথমিকের পড়াশোনা হয়, সেখানে ১৯ শতাংশ স্কুলে আপার প্রাইমারি, ১০.৫ শতাংশ স্কুলে সেকেন্ডারি, এবং ৭ শতাংশ স্কুলে হায়ার সেকেন্ডারি স্তরের পড়াশোনা হয়। উঁচু স্তরে স্কুলের সংখ্যা কম হওয়া নিঃসন্দেহে মেয়েদের জন্য একটা বড় সমস্যা। এই পরিসংখ্যান অবশ্যই অনেক প্রশ্ন তুলে দেয়। কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প, যা শিশুকন্যাদের স্কুলে থাকার জন্য উৎসাহ দিচ্ছে, চালু হওয়া সত্ত্বেও কেন দুই-তৃতীয়াংশ মেয়ে স্কুল ছেড়ে দিচ্ছে ১৮ বছরের আগেই? পঠনপাঠন থেকে তারা পড়া শিখতে পারছে না, নাকি পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও মেয়েদের স্কুল ছাড়িয়ে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে? কিছু মেয়ের বিয়ে বন্ধ করার উদ্যোগের খবর সংবাদমাধ্যমে আসে ঠিকই। আরও বেশি মেয়ে স্কুল ছাড়ার আগে সংসারে প্রবেশ করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dropout schoo teacher student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE