বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
যে সিঙ্গুর আন্দোলন দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ‘পরিবর্তন’-এর সূচনা হয়েছিল, এ বার সেই আন্দোলনকেই গুরুত্বহীন বলে দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, সেই আন্দোলন ছিল ‘শিল্প তাড়ানো’র। পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেস এই মন্তব্যকে ‘নির্লজ্জতার চরম নমুনা’ বলে দাবি করেছে।
জাতীয় গ্রন্থাগারের ভাষা ভবনে বৃহস্পতিবার বিজেপির ওবিসি মোর্চার কলকাতা জ়োনের কনভেনশন ছিল। সেখানে নিজের লড়াইয়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নাম উল্লেখ না করে শুভেন্দু বলেন, “কেউ কেউ বলতেন আমরা ২৩৫, ওরা ৩০। আমরা ঝান্ডা ছাড়া লড়াই করে নন্দীগ্রাম করেছিলাম। তার পরে আর সে সব কেউ বলত না।” বিরোধী দলনেতার দাবি, “সিঙ্গুরের আন্দোলন কোনও আন্দোলনই না। শিল্প তাড়ানোর আন্দোলন। নন্দীগ্রামের আন্দোলন ছিল কৃষক-হত্যার প্রতিবাদে। ওখানে সিপিএমকে হারিয়েছি। আর জঙ্গলমহলে এক দিকে রাষ্ট্রের পুলিশ আর সিপিএম ক্যাডারদের যৌথ বাহিনী আর এক দিকে জনসাধারণের কমিটির নামে মাওবাদীরা ছিল, যারা আলাদা দেশ চায়। রেড করিডোর চায়। তাদের বিরুদ্ধে লড়েছি।’’ এর পরে কর্মী-সমর্কদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘আপনারা বাইরের লড়াই চালিয়ে যান। আমার নেতৃত্বে বিধানসভার ভেতরেও আমরা আওয়াজ তুলব।’’
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেন, “যখন টাটা আন্দোলন হয়, তখন তো দল ক্ষমতায় ছিল না। ও দল ছাড়ল না কেন? এর পরেও তো নিজে সাংসদ হয়েছে, মন্ত্রী হয়েছে। গোটা পরিবারকে পদ পাইয়ে দিয়েছে। টাটা নিয়ে আন্দোলন যে সঠিক, তার স্বীকৃতি সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে।” তাঁর দাবি, ‘‘নন্দীগ্রামের আন্দোলন মানুষের আন্দোলন। মমতাদি সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মমতাদি’র প্রতিনিধি করে ওকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল। ওরাই তো ফের সিপিএমকে জায়গা করে দিচ্ছিল!’’
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে বিঁধে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীরও মন্তব্য, ‘‘সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম সব একসঙ্গে মিলিয়ে ওঁর তৎকালীন দলনেত্রীর সৈনিক হিসেবে বামফ্রন্ট সরকারকে উৎখাতের চেষ্টায় মরিয়া ছিলেন! তখন এই সব ব্যাখ্যা, উপলব্ধি কোথায় ছিল? বিজেপিতে যাওয়ার পরে এখন এ সব বলছেন! সিঙ্গুরের আন্দোলনের মঞ্চে কিন্তু বিজেপির তৎকালীন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারাও ছিলেন। তা হলে বিজেপিও ভুল করেছিল, এটা বলার হিম্মত কি ওঁর হবে?’’
ভোটার তালিকায় ওবিসি সংরক্ষণে কারচুপি ও বঞ্চনার অভিযোগে এবং অধিকারের দাবিতে এ দিনের আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন মোর্চার রাজ্য সভাপতি অজিত দাস, বিধায়ক দীপক বর্মণ-সহ একাধিক নেতৃত্ব। সেখানে বিরোধী দলনেতার বার্তা, “হলে মিটিং করার দিন শেষ। নতুন বছর পথে নেমে লড়াই করতে হবে।” তিনি বলেন, ‘‘বঞ্চিত ওবিসিদের ঘুমোনোর দিন শেষ। এ বার জাগার পালা। কেন আপনারা জেলাশাসকের দফতর অভিযান করবেন না? কেন আপনারা নবান্ন অভিযান করবেন না? যা ত্রুটি আছে, তা অল্প দিনের মধ্যে শুধরে নিয়ে নতুন উদ্যমে লড়াইয়ে নামুন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy