শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে মিড ডে মিলে অনিয়ম নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করতেই এই নিয়ে সুর চড়ালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মিড ডে মিলের টাকা রাজ্য সরকার অন্য খাতে খরচ হয়েছে বলে এর আগেও বহু বার তিনি সরব হয়েছিলেন। চিঠি লিখেছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে। এ বার সেই অনিয়মের প্রশ্নে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ সংবলিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর চিঠির কথা উল্লেখ করে বিরোধী দলনেতার হুঁশিয়ারি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় জেলে যাবেন। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য এই তদন্তের আবেদনকে ‘লজ্জাজনক ও এজেন্সি রাজনীতি’ বলে বর্ণনা করেছেন।
বগটুই-কাণ্ডের পর শুভেন্দু অভিযোগ করেছিলেন, মিড ডে মিলের বরাদ্দ টাকা থেকে রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। সেই চেকের ছবি দিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠিও লেখেন। তার পরে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের প্রতিনিধিদল এসে বাংলায় মিড ডে মিলের মান পরীক্ষা করে গিয়েছিল। বিজেপির প্রবাস কর্মসূচি উপলক্ষে রাজ্যে এসে এই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র নিজেও। সেই সূত্রেই সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। এর পরেই সমাজমাধ্যমে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে শুভেন্দু লেখেন, ‘যারা পশ্চিমবঙ্গের শিশুদের পুষ্টির জন্য বরাদ্দ অর্থের অপব্যবহার করেছে, তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে আমার প্রচেষ্টাকে সম্মান জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ’। তাঁর দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের করা হিসেব পরীক্ষায় ধরা পড়েছিল, ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কর্মদিবস বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। এই বাবদ দৈনিক প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, তা থেকেই লুটের পরিমাণ আন্দাজ করা যাচ্ছে বলে তাঁর দাবি।
পরে কৃষ্ণনগরে এ দিন বিজেপির সভা শেষে বিরোধী দলনেতা দাবি করেছেন, ‘‘মিড ডে মিলে সিবিআই তদন্ত হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলে যাবেন। কাল কাকে যেন জেলে পাঠাবেন বলছিলেন না? উনিই জেলে যাবেন! মিড ডে মিলের টাকায় বগটুই থেকে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। হিঙ্গলগঞ্জে কম্বল বিতরণ করেছেন মিড ডে মিলের টাকা থেকে। এক কোটি ৮০ লক্ষ টাকা মিড ডে মিলের তহবিল থেকে ওঁর জনসভায় আসা লোকের গাড়ির টাকা দেওয়া হয়েছে।” তাঁর সংযোজন, “স্কুলে ১০০% উপস্থিতি দেখিয়ে টাকা তুলেছে। দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী সভা, সবই করেছেন মিড ডে মিলের টাকা থেকে। আমরা ঠিক জায়গায় ধরেছি। ওদের বিপদ আছে। পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডেই জেল বানাতে হবে!’’
রাতে রাজ্যের রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য নিজের এক্স হ্যান্ড্লে (পূর্বতন টুইটার) লেখেন, ‘বিরোধী দলনেতা যে যৌথ পরিদর্শক দলের কথা বলছেন, সেখানে রাজ্যের একমাত্র প্রতিনিধির সই ছাড়াই তড়িঘড়ি রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছিল। আমরা সে সব ভুলিনি। ঘোলাজলে মাছ ধরার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সেই রিপোর্টের প্রেক্ষিতেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল, ১০০ কোটি টাকা ক্ষতির ঘটনা তো ঘটেইনি, বরং রাজ্য সরকার ১৮.৮ কোটি টাকা বাঁচিয়েছিল’। সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘যাই হোক, এই প্রকল্পে যে কোনও তদন্তকেই স্বাগত’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy