রাষ্ট্রপতিকে সম্মান প্রদর্শন নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর প্রথম বার রাজ্যে পা রেখেছেন দ্রৌপদী মুর্মু। সোমবার রাষ্ট্রপতিকে নাগরিক সম্মান প্রদান করবে তৃণমূল সরকার। যার মূল হোতা স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতিকে এই সম্মান প্রদর্শন নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদীর বিরুদ্ধে যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, সেই তাঁরাই এখন তাঁকে সম্মান জানাতে উঠেপড়ে লেগেছেন। অথচ যে বিজেপি বিধায়করা দ্রৌপদীকে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরাই অনুষ্ঠানে ব্রাত্য। এই নিয়েই বাংলার শাসকদলকে বিঁধেছেন শুভেন্দু।
সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ কলকাতায় পৌঁছন রাষ্ট্রপতি। রেসকোর্সে রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানান মুখ্যমন্ত্রী। দ্রৌপদী মুর্মুকে উত্তরীয় পরিয়ে, পুষ্পস্তবক দিয়ে বরণ করে নেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। এই সময় দিল্লিতে ছিলেন শুভেন্দু। উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন বিরোধী দলনেতা। পরে দুই সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং সৌমিত্র খাঁকে নিয়ে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান শুভেন্দু। তিনি দাবি করেন যে, রাষ্ট্রপতিকে সম্মান জানাতে রাজ্যের তরফে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘সরকারের আমন্ত্রণপত্রে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর নাম রাখা হয়েছে। আমায় কোনও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’’ এর পরই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূলের অবস্থান কী ছিল, তা স্মরণ করিয়ে শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকেরা দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোট দেননি। যাঁরা ভোট দেননি, তাঁরা আজ তাঁকে ধামসা-মাদল উপহার দিচ্ছেন, ফুল দিচ্ছেন, শাল পরাচ্ছেন। আর বিজেপির যে ৭০ জন বিধায়ক ভোট দিয়েছেন, তাঁরা আমন্ত্রণ পাননি।’’ এই নিয়ে একটি টুইটও করেছেন তিনি।
গত বছরের ১৮ জুলাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে এনডিএ শিবির থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল দ্রৌপদীকে। তৃণমূল-সহ বিজেপি বিরোধী কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হয়েছিলেন যশবন্ত সিন্হা। দ্রৌপদীকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে সেই সময় মমতাকে চিঠি লিখেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু। পরে এই প্রসঙ্গে মমতা জানিয়েছিলেন, আগে যদি দ্রৌপদীকে প্রার্থী করার কথা বিজেপি জানাত, তা হলে ‘বৃহত্তর স্বার্থে ঐকমত্যের ভিত্তিতে’ সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। দ্রৌপদীকে রাষ্ট্রপতি করে আদিবাসী সমাজকে বিজেপি নেতৃত্ব বিশেষ বার্তা দিতে চেয়েছিলেন বলে মনে করেন অনেকে। কেন্দ্রের এই চালে খানিকটা ‘বেকায়দায়’ পড়েছিল বিরোধী শিবির। সেই পর্বের পর রাজ্যে রাষ্ট্রপতির প্রথম সফরে তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা জানাতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন স্বয়ং মমতা। যা রাজনৈতিক দিক থেকে আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে। এই আবহে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদীকে নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান কী ছিল, তা স্মরণ করিয়ে খোঁচা দিলেন শুভেন্দু।
Those who queued up to vote against her would take the centre stage & hog the limelight at the felicitation event !
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) March 27, 2023
Those who queued up to vote in her favour are snubbed by the WB Govt & aren't invited !
Compare the stance of @BJP4Bengal MLAs & the distasteful rant of TMC MLAs:- pic.twitter.com/sAEOcv9DBF
বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, রাষ্ট্রপতিকে অতীতে অসম্মান করেছে তৃণমূল। রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন রাজ্যের কারা প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরি। যা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক বেধেছিল। শেষে সাংবাদিক বৈঠকে এ জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন মমতা। সোমবার শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘যাঁরা জনজাতির এক প্রান্তিক মানবীকে হারাতে চেয়েছিলেন, যাঁরা তাঁর ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সেই তাঁরা আজ তাঁকে সম্মান জানাচ্ছেন। এটা দেখে ভাল লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy