Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Siliguri

ভেঙে দিতে গিয়েছিলেন পুরকর্মীরা, আটকাতে নিজের বাড়িকে দলের পার্টি অফিস বানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেতা!

শুক্রবার শিলিগুড়ির ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাতি কলোনির একটি বাড়ি ভাঙতে যান পুরনিগমের কর্মীরা। ঘটনাচক্রে, বাড়িটি ওই ওয়ার্ডেরই তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র দেবনাথের।

—নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:০১
Share: Save:

অবৈধ ভাবে তৈরি তৃণমূল নেতার বাড়ি! অভিযোগ পাওয়ার পরেই সব দিক খতিয়ে দেখে সেই নির্মাণ ভাঙতে গিয়েছিলেন পুরনিগমের কর্মীরা। তৃণমূল নেতার অনুগামীরা তাতে বাধা দেন। পুরকর্মীদের সঙ্গে তাঁদের তুমুল বচসার মধ্যেই তড়িঘড়ি সেই বাড়িকে বদলে ফেলা হল শাসকদলের দলীয় কার্যালয়ে! শেষমেশ বাধ্য হয়েই ফিরে গেলেন পুরকর্মীরা।

শুক্রবার শিলিগুড়ির ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাতি কলোনির একটি বাড়ি ভাঙতে যান পুরনিগমের কর্মীরা। ঘটনাচক্রে, বাড়িটি ওই ওয়ার্ডেরই তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র দেবনাথের। পুরনিগম সূত্রে খবর, অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ মিলেছিল। সেই মতো তৃণমূল নেতাকে একাধিক বার নোটিসও দেওয়া হয়েছিল। তার পরেই অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে গিয়েছিলেন কর্মীরা। কিন্তু বিবাদের মধ্যেই বাড়িটিকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করা হয়। সৌমিত্রের বক্তব্য, ‘‘দলের শীর্ষ নেতার অনুমতিতেই দলীয় কার্যালয় খোলা হয়েছে। জেলার সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বিষয়টি জানেন। তাঁকে আমরা সবটা জানিয়েছি। তিনিই মেয়রের সঙ্গে কথা বলে নির্মাণ ভাঙা থেকে রুখেছেন।’’

এ প্রসঙ্গে দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের (সমতল) সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, ‘‘ওঁরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি জানিয়ে দিয়েছি, আইন আইনের পথে চলবে। কর্মীরা আমাকে কিছু বললে তো আমাকে শুনতেই হবে। কিন্তু আইনে অনুযায়ী যা ব্যবস্থা নেওয়ার, সেটাই হবে।’’ শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘আলোচনা করব। পদ্ধতি অনুযায়ীই কাজ হবে।’’

সৌমিত্রের দাবি, এলাকায় অনেকেরই জমির পাট্টা নেই। কাজেই বাড়ি তৈরির অনুমোদন পাশ করানোরও জায়গা নেই। যে কারণে গোটা ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড জুড়েই প্রচুর এমন নির্মাণ রয়েছে। সৌমিত্রের কথায়, ‘‘আমাদের ওয়ার্ডে বাড়ি নির্মাণ নিয়ে কারও সঙ্গে কোনও সমস্যা নেই। সবাই আমরা স্বচ্ছন্দে রয়েছি। কিন্তু কেউ আমার বাড়ি নিয়ে অভিযোগ করেছে। এটা ইচ্ছাকৃত করা হয়েছে।’’ সৌমিত্র আঙুল তুলেছেন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমর আনন্দ দাসের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘লোক মারফত ১০ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন কাউন্সিলর!’’ পাল্টা অমর বলেন, ‘‘৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের অধিকাংশ বাড়িই রেলের জমি ও সরকারি জমিতে। বংশপরম্পরায় তাঁরা বসবাস করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী পাট্টা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আদালতের কাছে আমার আবেদন, এ ভাবে বাড়ি ভাঙার নির্দেশ একটু বিবেচনা করে দেখা হোক। সৌমিত্র দেবনাথের বাড়ি নিয়ে যে ব্যক্তি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে সৌমিত্রবাবুকে বসিয়ে একাধিক বার সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু সৌমিত্র দেবনাথ তাতে কর্ণপাত করেননি। তিনি আমার বিরুদ্ধে ১০ লক্ষ টাকার যে অভিযোগ করেছেন, সেটা তাকে প্রমাণ করতে হবে। অন্যথায় আমি আদালতের দ্বারস্থ হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Tmc Leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE