টেটে প্রথম স্থানাধিকারী বর্ধমানের ইনা সিংহ। নিজস্ব চিত্র।
টিনের ছাউনি দেওয়া বাড়ি। তারই সামনে লোকজনের ভিড়। সংবাদমাধ্যমের হুড়োহুড়ি। হবে না-ই বা কেন, টেট নিয়ে রাজ্য জুড়ে দোলাচলের মধ্যে শুক্রবারই ফল প্রকাশ হয়েছে ২০২২ সালের টেট পরীক্ষার। আর সেই পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জের ইনা সিংহ।
মোট ১৫০-এর মধ্যে ১৩৩ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয়েছেন ইনা। এই ফল তিনি আশা করেননি বলেই আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন। তবে টেট নিয়ে লাগাতার আন্দোলনের জেরে স্বচ্ছ পরীক্ষা এবং দ্রুত ফল প্রকাশিত হয়েছে বলেই মনে করেন তিনি। ইনার কথায়, “পরীক্ষা ভাল হয়েছিল। তবে এই ফল হবে ভাবিনি।”
কত নম্বর আশা করেছিলেন? জবাবে ইনা বলেন, “আশা ছিল ১২৮ নম্বর পাব।” তবে ফল বেরোনোর পর দেখা গিয়েছে প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গিয়েছেন বর্ধমান শহরের এই কন্যা। টেট নিয়ে রাজ্য জুড়ে যে টানাপড়েন, বিতর্ক চলছে, তা খুব একটা ছাপ ফেলতে পারেনি ইনার প্রস্তুতিতে। নিজের লক্ষ্যে তিনি অবিচল ছিলেন। সাফল্য যে এক দিন আসবে সে বিশ্বাস তাঁর ছিল বলেও জানিয়েছেন ইনা। তাঁর কথায়, দীর্ঘ দিন চাকরি নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। সেই আন্দোলনের কারণে পরীক্ষায় স্বচ্ছতা এসেছে। আন্দোলনকারীদের লাগাতার লড়াইয়েরই সাফল্য এই পরীক্ষা।”
চাকরির বিষয়ে তিনি আশাবাদী, এমনটাই দাবি করেছেন ইনা। সহজে হাল ছাড়ার পাত্রীও নন তিনি। ইনার কথায়, “গন্তব্যে এখনও পৌঁছতে পারিনি। তবে, ওই যে কথায় আছে, আশায় বাঁচে চাষা। সুতরাং হাল ছাড়লে চলবে না।”
আলমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির কাছে ইনাদের বাড়ি। টিনের ছাউনি। ইনার বাবা দেবাশিস সিংহ অসুস্থ। কোনও কাজ করতে পারেন না। মা কাকলি সিংহ গৃহবধূ। তাঁদের বাড়ির সামনে রাস্তার উপর তিনটি দোকান ঘর ভাড়া দেওয়া আছে। ওই ভাড়ার টাকা দিয়েই কোনও রকমে সংসার চলে বলে জানিয়েছেন ইনার মা। তিনি বলেন, “প্রথম থেকেই পড়াশোনায় ভাল ইনা। টেট পরীক্ষার সময় দিনরাত এক করে পড়াশোনা করত। পড়াশোনাই ওর ধ্যান জ্ঞান।”
২০০৮ সালে হরিসভা হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেছেন ইনা। ২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল নম্বর পেয়ে উর্ত্তীণ হয়েছেন। ২০১৪ সালে ভূপেন্দ্রনাথ স্মৃতি মহাবিদ্যালয় থেকে ইংরেজি অর্নাস নিয়ে স্নাতক পাশ করেছেন ইনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy