Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Bengal Recruitment Case

দীর্ঘ দিন কাজ করলেই অবৈধ নিয়োগ বৈধ হয়ে যায় না! এসএসসি মামলায় জানিয়ে দিল হাই কোর্ট

এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত মামলার শুনানি ছ’ মাসের মধ্যে হাই কোর্টের বিশেষ বেঞ্চে শেষ করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিশেষ বেঞ্চ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের পক্ষেও কথা বলেছে।

—ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:১৯
Share: Save:

শুধুমাত্র দীর্ঘ দিন চাকরি করেছেন বলেই অবৈধ ভাবে হওয়া নিয়োগ বৈধ হয়ে যায় না। এসএসসি নিয়োগ মামলায় মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ। সোমবার মামলাটির শুনানি ছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির বেঞ্চে। সেখানেই বিচারপতি বলেন, ‘‘কে কত দিন কাজ করেছেন, সেটা বড় বিষয় না, মূল বিচার্য বিষয় হচ্ছে, নিয়োগ বৈধ কি না।’’

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত মামলার শুনানি ছ’মাসের মধ্যে কলকাতা হাই কোর্টের বিশেষ বেঞ্চে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ মেনেই শুনানি হচ্ছে বিশেষ বেঞ্চে। সেখানে শুনানি চলাকালীন হাই কোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া নির্দেশের পক্ষেও কথা বলেছে।

নিয়োগ মামলায় সমস্ত অবৈধ নিয়োগ বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও সেই নির্দেশে পরবর্তী কালে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। যাঁরা দীর্ঘ দিন স্কুলে চাকরি করছেন, তাঁরা আবেদন করেন, ‘সুপার নিউম্যারিক’ পদ তৈরি করে তাঁদেরও চাকরি রাখা হোক। কারণ তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই নির্দেশ দিতে পারেন না বলেও আবেদন করেন চাকরিপ্রার্থীরা। সোমবার এই প্রসঙ্গেই হাই কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ বলে, ‘‘মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হবে, তাতে অসুবিধা নেই! কিন্তু আদালত পদক্ষেপ করলে সেটা আদালতের এক্তিয়ার বহির্ভূত বিষয়!’’

বিচারপতির এই মন্তব্যের অবশ্য পাল্টা যুক্তি দেন রাজ্যের পক্ষের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। একক বেঞ্চের নির্দেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চকে নিয়ে সব সময় ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকত এসএসসি। আর মামলাকারীও বেছে বেছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেই সমস্ত মামলা করেছিলেন। কেন তিন বছরে অন্য বেঞ্চে মামলা দায়ের করেননি মামলাকারীরা?’’

কল্যাণ যুক্তি হিসাবে এ-ও বলেন যে, ‘‘কেউ কোথাও ঘুষ দিয়ে থাকলে বা ঘুষ নিয়ে থাকলে তার মানে এই নয় যে আমি খারাপ। ভালো এবং খারাপের বিভাজন করা হোক।’’

অন্য দিকে, মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তদন্ত বিলম্বিত করার জন্য অনেক কিছু করা হয়েছে। মেধাতালিকা যাতে প্রকাশ না হয় তার জন্য অসদুপায়ে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।’’

এর পরেই বিচারপতি জানিয়ে দেন, নিয়োগের বৈধতার উপরেই চাকরির ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে। যে নিয়োগ অবৈধ ভাবে হয়েছে, তা শুধু দীর্ঘ দিন চাকরি করা হয়েছে— এই যুক্তিতে বৈধ হয়ে যাবে না। আদালত এসএসসি মামলায় নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল। যা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। বিচারপতি সোমবার সেই বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘যখনই কেউ কোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নেন, তখনই তিনি জানেন যে, মেধাতালিকা প্রকাশিত হবে। মেধাতালিকা বা প্যানেল প্রকাশিত হলে কী ভাবে কারও সম্মানহানি হতে পারে ?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bengal Recruitment Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE