বহরমপুর মানসিক হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেলেন বটে, তবে কোল-খালি করা মেয়েটার কথা মনে পড়লেই মনটা ভারী হয়ে উঠছে মহিলার। প্রায় দু’বছর হয়ে গেল, ‘‘মেয়েটা আমায় চিনতে পারবে তো’’, ঘরে ফেরার আগে একে-তাকে জড়িয়ে ধরে প্রশ্ন করছেন রীতা রায়।
মেয়ের খোঁজ অবশ্য মিলেছে। বর্ধমানের তালিতের একটি হোমে, দিব্যি হুটোপুটি করে বেড়ানো মেয়েটিরও ছুটির সময় হয়ে এসেছে বলেই জানাচ্ছেন, ওই হোম কর্তৃপক্ষ।
গত বছর, জানুয়ারি মাসে, বাপের বাড়ি, উত্তর দিনাজপুরের পতিরাজ গ্রামে থেকে মেয়ের হাত ধরে রাগ করেই বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর পরিবার বলছে, ‘‘মানসিক অবসাদ থেকেই এমনই হুটহাট কাজ করে বসত রীতা। সাতপাঁচ না ভেবেই বেরিয়ে যেত।’’ এক বৃষ্টি সন্ধ্যায় আড়াই বছরেরর বড় মেয়েটাকে নিয়ে তেমনই বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি।
দীর্ঘ খোঁজাখুঁজির পরে, মাস চারেক পরে, গত বছরের এপ্রিলে বর্ধমান থানার পুলিশ মা-মেয়েকে উদ্ধার করে। সিজেএম আদালতের নির্দেশে রীতার ঠাঁই হয় বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে। আর, আড়াই বছরের ছোট্ট মেয়েটা মায়ের কাছ থেকে ছিটকে যায় তালিতের হোমে।
বহরমপুর মানসিক হাসপাতালের সুপার প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘পুলিশ ওই মহিলাকে নিয়ে এসে ভর্তি করে দিয়ে গেলেও সঙ্গে কোনও শিশুকন্যাকে পাইনি।’’ মহিলার খোঁজ পেয়ে বহরমপুরে এসে রীতার স্বামী জানতে চান, ‘‘মেয়ে কোথায়?’’ শুরু হয় নতুন করে খোঁজাখুঁজি। দিন কয়েক পরে খোঁজ মেলে মেয়ের।’’
বর্ধমান শিশু কল্যাণ সমিতির আধিকারিকেরা জানান, দুই মানসিক রোগীর একটি ছেলে ও একটি মেয়েকে একই দিনে তাঁদের হাতে দেওয়া হয়েছিল। ২-৩ দিন নার্সিংহোমে থাকার পরে মায়েদের নিয়ে যাওয়া হয় বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে আর শিশুদুটির ঠাঁই হয় তালিতের ওই হোমে। তারপর থেকে সেখানেই রয়েছে তারা। শিশুকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান দেবাশিস নাগ ও সদস্য চিকিৎসক সত্যজিৎ দাশগুপ্ত জানান, গত মার্চে বহরমপুর মানসিক হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে দেখা করেছিলেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy