দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ও সাগরে আবাস যোজনা-সহ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখছে দুই সদস্যের কেন্দ্রীয় দল। প্রতীকী ছবি।
গত কয়েক দিন ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ও সাগরে আবাস যোজনা-সহ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখছে দুই সদস্যের কেন্দ্রীয় দল। পাথরপ্রতিমায় অভিযোগ উঠেছিল, তৃণমূল কর্মীরাই দলটিকে ‘পথ দেখাচ্ছেন’। সাগরের গ্রাম পরিদর্শনেও একই ঘটনা ঘটছে অভিযোগ করে স্থানীয় বিজেপি নেতা অরুণাভ দাস শুক্রবার বলেন, ‘‘প্রকৃত তদন্ত হচ্ছে না। তৃণমূলের লোকজন বেছে বেছে ওঁদের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন। তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে সরকারি ঘর নিয়ে খোঁজ-খবর করছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। বিষয়টি দলীয় ভাবে উপরমহলে জানাব।’’ এ নিয়ে মন্তব্য করেননি কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। তবে স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল তদন্তে তেমন কিছু পায়নি। খুশিই হয়েছে।’’
‘খামতি’র খোঁজ মিলেছে অন্যত্র। হুগলির গোঘাটে পরিদর্শক দলের প্রতিনিধির সামনে কেঁদে ফেলেন বালি পঞ্চায়েত এলাকার জয়দেব সোম। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পেয়েছেন বৃদ্ধ। পরিদর্শক দল দেখে, জয়দেবের ঘরের এক দিকে ত্রিপল। সেটাই দরজা। পাল্লাহীন জানলা। প্লাস্টার হয়নি। অ্যাসবেসটসের ছাউনি। শৌচাগার বলে যেটি দেখানো হয়, সেটি অন্যের উঠোনে। জয়দেবের কাছে জানতে চাওয়া হয়, জব-কার্ড রয়েছে কি না। বৃদ্ধ বলেন, ‘‘জব-কার্ড নেই। ঘরের জন্য কত টাকা পেয়েছি, তা-ও জানি না।’’ ‘খামতি’ ধরা পড়ে আরও কিছু বাড়িতে। আবার মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় নয়নসুখ ও অর্জুনপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ঘুরে কেন্দ্রীয় দল অভিযোগ পায়, ১০০ দিনের কাজে খেটেও মজুরি মেলেনি। অনেকের জব-কার্ড রয়েছে পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে। কেন্দ্রীয় দলের সদস্য প্রমোদকুমার সিংহ বলেন, ‘‘প্রশাসনিক বৈঠকে প্রকল্পের অর্থ নিয়ম মেনে খরচ করা হয়েছে কি না, দেখা হবে। কার গাফিলতিতে শ্রমিকেরা বছর খানেক ধরে প্রাপ্য মজুরি পাননি, দেখা হবে তা-ও।”
পুরুলিয়ার জয়পুর ব্লকের বড়গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে বার্ধক্যভাতা, বিধবাভাতা প্রভৃতি নিয়ে খোঁজ করে কেন্দ্রীয় দল। মালদহে ১০০ দিনের কাজ-সহ ১০টি প্রকল্পের খোঁজ নেন কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য টি কে সিংহ ও অভিষেক কুমার। ৩১ জানুয়ারি মালদহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের সম্ভাবনায় প্রশাসনিক প্রস্তুতি চলছে। টি কে সিংহ বলেন, “৩১ জানুয়ারির পরে, ফের জেলায় আসব।” তিনি জানান, আজ, শনিবার নদিয়ায় যাবে দলটি।
শুক্রবার বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘সারা ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বড় লুট হয়েছে পশ্চিমবাংলায়। গরিব মানুষের জন্য পাঠানো টাকা কিছু লোক খেয়ে নিয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের সাজা হওয়া দরকার আছে।’’ তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র তাপস রায় বলেন, ‘‘রাজ্য থেকে নির্বাচিত সাংসদ হিসেবে কেন্দ্রের কাছে আমাদের প্রাপ্য আদায়ে সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল ওঁর। অথচ, রাজ্যের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধের চেষ্টায় নেমে পড়েছেন। কেন্দ্র থেকে আসা টাকা কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়। আমাদের ন্যায্য প্রাপ্য। তা আটকে কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর ফল কী হয়, তা মানুষ ওঁদের বোঝাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy