• হাতের লেখা সুন্দর না হলেও যেন স্পষ্ট হয়। যাতে অনায়াসে উত্তরপত্রটি পরীক্ষক ঠিক মূল্যায়ন করতে পারেন।
• বানান ভুল খুবই চোখে লাগে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামের বানান বহু পড়ুয়া ভুল লেখে। মন দিয়ে পড়ে লিখলে ভুল এড়ানো যায়।
• আর একটা ভুলও চোখে পড়ে। তা হল উত্তরপত্রে যে প্রশ্নটি নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে, সেটি পদ্যাংশ না গদ্যাংশ, গদ্যাংশ হলে গল্প, প্রবন্ধ না নাটক, তা ভুল উল্লেখ করা হয়। এতে উত্তরটা পড়ার ইচ্ছা মরে যায়।
• রচনায় ১৫ নম্বর। তাই ‘সাজেশন’ নিয়ে খুব ভাবনাচিন্তা চলে। এখানে সহজ ফর্মুলা আছে। বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন নিয়ে বসলে পরীক্ষার্থীরা দেখবে কিছু বিষয়ের মধ্যে ঘোরাফেরা করে রচনাগুলি। যেমন খেলাধুলো, বিভিন্ন ঋতু, বিজ্ঞান বিষয়ক একটা রচনা থাকে। পুরনো প্রশ্ন ঘেঁটে সাত-আটটা বিজ্ঞান-সম্পর্কিত রচনা তৈরি করে রাখলে প্রাথমিক জ্ঞান তৈরি হয়। তবে ‘বাঙালির বিজ্ঞান সাধনা’র মতো বিষয় এলে তথ্য জানা চাই।
• অনেকের ধারণা, বিশেষ করে নামী স্কুলের পড়ুয়াদের, যে কঠিন বিষয়ে রচনা লিখলে বেশি নম্বর মেলে। এটা ভুল। কোন বিষয়ে লিখছি সেটা বিবেচ্য নয়। কেমন লিখছি সেটাই বিবেচ্য।
• রচনা শব্দটার মধ্যে সৃজনশীলতার ব্যাঞ্জনা আছে। কল্পনার জগৎ এখানে গুরুত্বপূর্ণ। বাজারচলতি বই থেকে ‘রেডিমেড’ রচনা পড়ে খাতায় লিখে ভাল নম্বর আশা করো না। বাড়িতে বিভিন্ন বইয়ের সাহায্য নিয়ে নিজে লেখার চেষ্টা করো। রচনা লেখাকে অনেকটা বিয়েবাড়ির ভোজের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।
• রচনার ভূমিকা: বিয়েবাড়ি গেলে চা, কফি বা ঠান্ডা পানীয়ে আপ্যায়ন করা হয় আগে। আপ্যায়ন যদি মধুর হয়, তখন খেতে বসার ইচ্ছেটা বেড়ে যায়। এটাই হল রচনার ভূমিকা। যখনই কোনও রচনা বাড়িতে লিখবে বা পড়বে শুরুটা অন্য রকম করার চেষ্টা করবে। সেখানে রচনার মূল প্রতিপাদ্য না থাকাই ভাল। অনুশীলন করলে একটা ক্ষমতা আসে। তখন পরীক্ষার হলেও নতুন বিষয়ে অন্য রকমের শুরুটা অনায়াসে করা যায়।
• রচনার মূল বক্তব্য: ভোজবাড়িতে প্রতিটা পদ আলাদা করে পরিবেশন করা হয়। রচনাতেও প্রতিটা বক্তব্য আলাদা আলাদা করে প্যারাগ্রাফে লিখতে হবে। যতগুলো পয়েন্ট, তত প্যারাগ্রাফ—দু’টো হোক বা পাঁচটা। এক প্যারাগ্রাফ থেকে পরের প্যারাগ্রাফে যাওয়ার কৌশল অনেকটা সিঁড়ির একটা ধাপের থেকে অন্যটায় যাওয়ার মতো। একটার সঙ্গে অন্যটার সংযোগ না থাকলে হোঁচট খেতে হবে।
• উপসংহার: এটা ভাল হওয়া জরুরি। হঠাৎ যেন শেষ না হয়। বিয়েবাড়িতে মাংস দিয়ে খাবার শেষ করা হয় না। মিষ্টি আসে, পাঁপড় আসে, তার পরে পান। রচনার উপসংহারটাও পানের মতোই মোলায়েম, উপাদেয় হয় যেন।
• অনেক সময় রচনার বিষয় বুঝতে ভুল হয়। তা সেটা নার্ভাসনেসের জন্য হোক বা হড়বড় করতে গিয়ে। পরীক্ষায় এসেছে ‘বিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা’ কিন্তু পরীক্ষার্থী লিখছে ‘দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান’। এসেছে ‘ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা’, লিখেছে ‘একটি ভ্রমণকাহিনী’। বহু পরীক্ষার্থীকে এ ভুল করতে দেখেছি।
ব্যাকরণে সাবধান
• অশুদ্ধি সংশোধনে বহুবচনের প্রয়োগ একাধিক বার হয়েছে কিনা খেয়াল রাখো। যেমন ‘সমস্ত দর্শকবৃন্দ’ হয় না। হয় ‘সমস্ত দর্শক’, না হলে ‘দর্শকবৃন্দ’। ঠিত তেমনই ‘ছাত্রগণেরা’ ঠিক নয়। হয় ‘ছাত্ররা’, না হলে ‘ছাত্রগণ’।
• যে বিশেষ্যটিকে বিশেষিত করতে চাওয়া হয়েছে, বিশেষণটি ঠিক তার আগে বসেছে কিনা তা খোয়াল রাখো। ‘খাঁটি গরুর দুধ’ বললে গরু খাঁটি না দুধ খাঁটি তা ঠিক মতো বোঝা গেল না। তাই খাঁটি বিশেষণটিকে দুধের আগেই বসাতে হবে, যেমন ‘গরুর খাঁটি দুধ’।
• প্রবাদ-প্রবচনে সঠিক শব্দ প্রয়োগ জরুরি। অকর্মণ্য বোঝাতে ‘আমড়া কাঠের ঢেঁকি’ বলতে হবে। ‘কাঠের ঢেঁকি’ বললে হবে না।
• বিশেষ্য বা বিশেষণ পদের প্রয়োগ জানতে হবে। ‘আধিক্যতা’ ভুল শব্দ। ‘অধিক’ বিশেষণের সঙ্গে ‘য’ প্রত্যয় যোগ করে ‘আধিক্য’ বিশেষ্য পদটি পাওয়া যায়। আবার ‘তা’ প্রত্যয় যোগ করে তাকে বিশেষ্য পদ করা ভুল।
• বানান ভুল এড়াতে সন্ধি, সমাস, নত্বষত্ব জ্ঞান জরুরি। ‘শশী’ ঠিক বানান। কিন্তু ‘শশিভূষণ’ নাম যখন, তখন বহুব্রীহি সমাস। শশীর ভূষণ। এক্ষেত্রে মাঝে ‘শি’ হবে।
লেখক: বালিগঞ্জ জগদ্বন্ধু ইনস্টিউশনের অবসরপ্রাপ্ত বাংলা শিক্ষক এবং বাংলার প্রাক্তন হেড এগজামিনার
কল সেন্টারে কাজ করতে যা যা চাই
ফোনে কথা বলা—ও পারের জনকে না দেখে। ও পারেও জানতে পারছে না তোমার বয়স, জাতি, ধর্ম, গায়ের রং। কণ্ঠস্বর, কথা বলার ভঙ্গি, উচ্চরণের স্পষ্টতা আর মধুর ব্যবহারটা আসল কল সেন্টারে। কল সেন্টারের ইন্টারভিউয়ে চাকরিপ্রার্থীর এ সমস্ত দিক দেখে নেওয়া হয়। বিদেশে কল সেন্টার এগ্্জিকিউটিভ হওয়ার কোর্স থাকলেও এ দেশে প্রার্থী বাছাই করারে পরে কোম্পানিগুলি প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করে নেয়। প্রার্থীর সাধারণ জ্ঞান নিয়ে বিশেষ ভাবিত নয় কেউ।
একটা প্রশ্ন জানতে চাইবেই। সেটা হল বিপিও-র সঙ্গে কল সেন্টারের পার্থক্যটা জানা আছে কিনা। বিপিও (বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং) হল কোনও সংস্থার বাইরের দেশে একটি শাখা, যেটি সেখানে ওই কোম্পানির ব্যবসায়িক দিকটি দেখছে। যেমন আমেরিকার কোনও সংস্থার হয়তো বেঙ্গালুরুতে বিপিও ইউনিট আছে। বিপিও-র একটা অঙ্গ হতে পারে কলসেন্টার। এদিকে, কোনও একটা কল সেন্টারের মূল কাজ হল ফোনে ‘কাস্টমার’দের যাবতীয় জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়া। সেটা সংস্থার নিজস্ব হতে পারে, আবার অনেক কোম্পানির ‘কল সেন্টার’ হয়ে একটি সংস্থা কাজ করতে পারে। মাধ্যম অধিকাংশ সময়ে ইংরাজি। তাই ইংরাজিতে কথা বলায় দক্ষতা আবশ্যিক। সঙ্গে বাংলা, হিন্দি কিংবা স্প্যানিশ, ফরাসি—যত বেশি, তত ভাল।
অ-সময়ে কাজ করতে পারা চাই। তোমাকে হয়তো মেক্সিকো কিংবা ক্যালিফোর্নিয়ার ক্লায়েন্টের সঙ্গে কথা বলতে হবে, সময়ের হিসাবে প্রায় ১২ ঘণ্টার দূরত্বে। সেক্ষেত্রে রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কাজ করতে হবে। অস্ট্রেলিয়ায় ক্লায়েন্ট থাকলে ভোর ৫টায় কাজ শুরু হয়ে যেতে পারে। কাজের চাপ নেওয়ার ক্ষমতা, মাথা কতটা ঠান্ডা সেগুলোও দেখে নেওয়া হয় ইন্টারভিউতে। পরখ করার জন্য বিরক্তিকর প্রশ্নে উত্ত্যক্ত করার একটা চেষ্টা হতে পারে ইন্টারভিউতে। তার জন্য তৈরি থাকতে হবে।
ডায়েরি
‘জুয়েলারি মেকিং’-এ ভারত সেরা বছর একুশের কলকাতা নিবাসী সুরজিৎ কুমার রানা যোগ দিলেন ‘ওয়ার্ল্ড স্কিলস কম্পিটিশন ২০১৫’-য়। ‘স্কিল অলিম্পিক’ বলে পরিচিত ‘ওয়ার্ল্ড স্কিলস্ কম্পিটিশন’ প্রতি দু’বছরে এক বার করে হয়। ৪৬টি বিভাগে বিভিন্ন দেশের তরফে এক হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি এতে যোগ দেন। এই বছর ব্রাজিলের সাওপাওলোয় ছ’দিনের এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে গত ১১ অগস্ট। আমাদের দেশে সেরাদের বাছাইয়ের কাজটি করে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। এ বার মোট ২৭টি বিভাগে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন ২৯ জনের একটি দল। যে দলে রয়েছেন কলকাতার তরুণ সুরজিৎ। পঞ্চম শ্রেণি পাশ সুরজিৎ জানিয়েছেন, তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে অলঙ্কার শিল্পের সঙ্গে যুক্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy