Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Suvendu Adhikari

সারদা, নারদ মামলায় সিবিআই কেন জিজ্ঞাসাবাদ করছে না শুভেন্দুকে? সুর চড়িয়ে প্রশ্ন তৃণমূলের

পাল্টা মুখ খুলেছেন শুভেন্দুও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাকে ডাকা যাবে না, নোটিস দেওয়া যাবে না, এই রকম কোনও আবেদন নিয়ে আমি তো হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে যাইনি। তদন্ত হোক না।”

Suvendu Adhikari

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৩ ০৭:১৩
Share: Save:

নিয়োগ-মামলায় কড়া পদক্ষেপ থেকে অব্যাহতি পেতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে দিন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন, সে দিনই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে চাপ বাড়াল তৃণমূল কংগ্রেস। শাসক দলের তরফে সোমবার প্রশ্ন তোলা হয়েছে, নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্বেও সারদা ও নারদ মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থা শুভেন্দুকে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করছে না? শুভেন্দুর আবার পাল্টা প্রশ্ন, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চাইলে তৃণমূল আদালতে যাচ্ছে না কেন?

দুর্নীতির অভিযোগে অভিষেককে নিশানা করছেন শুভেন্দু-সহ বিরোধীরা। নিয়োগ-মামলায় কুন্তল ঘোষের চিঠির সূত্রে শনিবার সিবিআই অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সেই সূত্রেই সারদা ও নারদ মামলার পুরনো অভিযোগে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়াচ্ছে তৃণমূল। কাঁথি পুরসভার একটি প্রকল্পের জন্য সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের দেওয়া ৫০ লক্ষ টাকার ব্যাঙ্ক ড্রাফটের নথি দেখিয়ে এ দিন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, ‘‘এই লেনদেন হয়েছিল কি না, শুভেন্দু বলুন। যদি এই তথ্য ঠিক হয়, তা হলে তাঁর অন্য অভিযোগ নিয়েও তদন্ত দরকার। আর যদি মিথ্যা হয়, তা হলে সবটাই মিথ্যা।’’ সেই সময়ে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী।

একই ভাবে এ দিন নারদ প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করেছেন তৃণমূলের আর এক নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া এই নেতার অভিযোগ, ওই তদন্ত থেকে ছাড় পাওয়ার শর্তে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন শুভেন্দু। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নাম টেনে জয়প্রকাশের দাবি, ‘‘ক্ষমতার লোভ আর জেল এড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের ইচ্ছায়।’’ তিনি দাবি করেছেন, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে একটি বৈঠকে গিয়ে শুভেন্দু জানতে চেয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়গুলির কী হবে? বিজেপির তৎকালীন পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় সে দিন শাহের নাম করে তাঁকে আশ্বস্ত করেন। শুভেন্দু ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপিতে থাকাকালীন সাংবাদিক বৈঠকে নারদের যে ভিডিয়ো তিনি প্রকাশ করেন, তাতে শুভেন্দুকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

কলকাতায় পাল্টা মুখ খুলেছেন শুভেন্দুও। বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, ‘‘আমাকে ডাকা যাবে না, নোটিস দেওয়া যাবে না, এই রকম কোনও আবেদন নিয়ে আমি তো হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে যাইনি। তদন্ত হোক না। আর দ্বিতীয়ত, এখানে ওখানে যে কথাগুলো ওঁরা বলছেন, সেগুলো আদালতে গিয়ে বলুন। এ বার যে সিবিআই ওঁকে (অভিষেক) ডেকেছিল, জিজ্ঞাসাবাদ করল, সেই পদক্ষেপ হয়েছে আদালতের নির্দেশে। নিজে বাঁচতে সিঙ্গল বেঞ্চ-ডিভিশন বেঞ্চ, হাই কোর্ট-সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। এত ভয় কীসের?’’ শুভেন্দুর আরও দাবি, ‘‘দুর্নীতির মামলায় নিজেরা বাঁচতে এবং বিরোধী দলনেতাকে জেলে পোরার লক্ষ্যে এখনও পর্যন্ত ৩৩০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তার মধ্যে ২৯২ কোটি টাকা রাজ্যের কোষাগার থেকে আইনজীবীদের ফি মেটানো হয়েছে, জনগণের টাকায়। আর ৩৮ কোটি টাকা তৃণমূল দিয়েছে নির্বাচনী বন্ড থেকে।’’ তিনি ফের উল্লেখ করেছেন, তদন্ত এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক পর্যন্ত পৌঁছয়নি, যতটুকু হচ্ছে, সবই আদালতের চাপে। তবে খরচ সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের তাপস রায়ের পাল্টা প্রশ্ন, শুভেন্দুকে কেউ কোষাধ্যক্ষ করেছে? তিনি এ সব বলছেন কেন?

অভিষেকের বিরুদ্ধে তদন্ত এড়ানোর অভিযোগে সরব সব বিরোধী দলই। সুপ্রিম কোর্টে অভিষেকের মামলার প্রেক্ষিতে সেই কথা তারা ফের বলেছে। কুণালের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘শুভেন্দু নিজে কতগুলি মামলায় স্থগিতাদেশ বা রক্ষাকবচ চেয়ে আদালতে গিয়েছেন, তার একটা তালিকা দেবেন কি? অভিষেক তদন্ত এড়াতে গেলে শুভেন্দু একই কাজ কী কারণে করেছেন?’’ সারদার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগের তদন্ত চেয়ে তৃণমূল ইডি-কে চিঠি দেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, অভিষেককে নিশানা করে শুভেন্দুর তোপ, ‘‘ওঁর মাকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। বাবা-মাকে সংস্থার ডিরেক্টর বানিয়ে এর মধ্যে টেনে এনেছে। বিদেশে স্ত্রীর নামে অ্যাকাউন্ট, শ্যালিকার নাম জড়িয়েছে। তার পরেও এত কথা?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari TMC Narada Scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE