Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Lok Sabha election 2024

লোকসভা ভোটের আগে নতুন বন্ধু পেল তৃণমূল, পোস্টার অফিসপাড়ায়, কারা এই বন্ধু? কী করবে?

এই সংগঠন তাদের পোস্টারে খোলাখুলিই জানাচ্ছে, যে হেতু তাদের মূল প্রতিপক্ষ বিজেপি, তাই তারা একেবারেই তৃণমূলের বিরোধিতা করবে না। দেশের ভোটকে তারা আদৌ রাজ্যের প্রেক্ষিতে দেখবে না।

TMC gets new friend in West Bengal ahead of Lok Sabha Election 2024

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:১৬
Share: Save:

পাঁচ দিন পরেই শুরু নতুন বছর। বলা ভাল, পাঁচ দিন পরেই শুরু ভোটের বছর। আর সেই লোকসভা ভোটের বছর শুরুর আগেই বাংলায় নতুন ‘বন্ধু’ পেয়ে গেল তৃণমূল। যাদের পোস্টারে কার্যত ছয়লাপ কলকাতার অফিসপাড়া ডালহৌসি।

বিজেপিকে রুখতে ময়দানে নেমেছে নতুন এক সংগঠন ‘ভারত জোড়ো অভিযান (পশ্চিমবঙ্গ)’। পোস্টারে সংগঠনের নাম আর মূল উদ্দেশ্য জানান দেওয়া রয়েছে। উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য একটিই— রুখতে হবে বিজেপিকে! বাংলার প্রেক্ষিতে এই সংগঠন বা মঞ্চ খোলাখুলিই জানাচ্ছে, যে হেতু তাদের মূল প্রতিপক্ষ বিজেপি, তাই বিজেপির বিরোধী প্রধান শক্তি হিসাবে তারা তৃণমূলের পাশেই থাকবে। রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে কোনও অবস্থান তারা নিচ্ছে না।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

প্রশ্ন হল, কারা রয়েছেন এই সংগঠনের নেপথ্যে? রয়েছেন নাগরিক আন্দোলনের পরিচিত ‘মুখ’ যোগেন্দ্র যাদব। তিনিই মূল নেতা ভারত জোড়ো অভিযানের। হরিয়ানার ভূমিপুত্র যোগেন্দ্র একটা সময়ে ছিলেন আম আদমি পার্টির নেতা। অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সঙ্গে বনিবনার অভাবেই সেই দল ছাড়েন তিনি। ২০১৬ সালে তিনি তৈরি করেন স্বরাজ পার্টি। তাঁর সেই দল যে ভারতের রাজনীতিতে খুব দাগ কাটতে পেরেছে, তা নয়। তবে নরেন্দ্র মোদীর বিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনে গত কয়েক বছরে যোগেন্দ্র বার বার নাগরিক সমাজের ‘মুখ’ হিসেবে সামনে এসেছেন। সে এনআরসি, সিএএ বিরোধী আন্দোলন হোক বা কৃষক আন্দোলন, যোগেন্দ্র থেকেছেন সামনের সারিতেই। গত ২০২২-এর শেষ থেকে শুরু হওয়া রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-তেও ছিলেন। তবে কংগ্রেসের হয়ে নয়, নিজের দলের ব্যাজ পরেই হেঁটেছিলেন যোগেন্দ্র। তার পরেই তিনি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাব থেকে এই নতুন মঞ্চটির ঘোষণা করেছিলেন। তাদেরই পশ্চিমবঙ্গ শাখা কলকাতার অফিসপাড়া পোস্টারে ছেয়ে দিয়েছে।

ভারত জোড়ো অভিযানের পশ্চিমবঙ্গ শাখার অন্যতম আহ্বায়ক কল্যাণ সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘‘আমরা সভাসমিতি করে বিজেপির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলছি। সীমিত সাধ্যের মধ্য দিয়েই কাজ করে চলেছি। এই কাজ এখনই থামবে না। এমনকি, লোকসভা ভোটের পরেও নয়। তা চালিয়ে যেতে হবে অন্তত ২০৩০ সাল পর্যন্ত।’’ কেন? কল্যাণের জবাব, ‘‘বিজেপি সমাজের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার যে বিষ ঢেলেছে, তা নির্মূল করতে অন্তত ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে।’’

বাংলার রাজনীতির প্রেক্ষাপটে লোকসভা ভোটকে দেখছে না যোগেন্দ্রের মঞ্চ। তারা দেশের ভোট হিসেবেই দেখতে চাইছে ২০২৪-এর সাধারণ নির্বাচনকে। কল্যাণের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমরা কোনও অবস্থান নিচ্ছি না। কারণ, এটা দেশের ভোট।’’ বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলই মূল শক্তি। শাসকদলের নেতারা বলেন, ২০২১ সালের ভোটের পরেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল এ রাজ্যে বিজেপিকে রুখে দিতে পারে একমাত্র তৃণমূলই। গোটা রাষ্ট্রশক্তি নিয়েও ২০২১ সালে বাংলা দখল করতে পারেনি বিজেপি।

TMC gets new friend in West Bengal ahead of Lok Sabha Election 2024

ডালহৌসিতে পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র।

অফিসপাড়ায় যে পোস্টার পড়েছে, তার রং লাল-সাদা। সেই রং নির্বাচনেও অনেকে ‘বাম ঘরানা’ দেখছেন। ২০২১ সালেও নাগরিক সমাজের একটি অংশ তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাঁরা স্লোগান দিয়েছিলেন, ‘নো ভোট টু বিজেপি’। তবে পোস্টার দর্শনে বাম ছোঁয়া থাকলেও মূল ধারার বামেরা যে এতে নেই, তা স্পষ্ট। কল্যাণের কথায়, ‘‘আমরা মনে করি বিজেপির বিরুদ্ধে সকলের এক হওয়া উচিত। তবে বাংলায় সিপিএমের দিক থেকে সেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদেরও তৃণমূলের হাত ধরতে ছুঁৎমার্গ রয়েছে। তবে তাঁরা বিষয়টা ছেড়েছেন হাইকমান্ডের উপর। আমরা আশাবাদী, কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হবে। তবে আমরা বিজেপির বিরুদ্ধেই প্রচার চালিয়ে যাব।’’

লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যে তৃণমূলের এই নতুন বন্ধু প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে বিজেপি লড়বে নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে। ২০১৯ সালে মোদী ছিলেন বিজেপির প্রার্থী। ২০২৪ সালে তিনি মানুষের প্রার্থী। কেউ যদি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, তা হলে মানুষ যা বোঝার বুঝে নেবেন!’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE