তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলার যে সব নেতার কাজকর্ম নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের কড়া ধমক দিয়েছেন অভিষেক। — নিজস্ব চিত্র।
‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির একাদশতম দিনে শুক্রবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আচমকাই বদলে দিলেন নির্ধারিত পদযাত্রার সূচি। তার বদলে মালদহ জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ঘণ্টা দুয়েকের বৈঠকের শেষে উপস্থিত সকলেই আলোচনার বিষয় দলের ‘অভ্যন্তরীণ’ বলে প্রকাশ্যে দাবি করছেন। তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলার যে সব নেতার কাজকর্ম নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের কড়া ধমক দিয়েছেন অভিষেক। যাঁরা ব্যক্তিস্বার্থের কথা ভেবে তৃণমূল করছেন, তাঁদের অভিষেক ‘অন্য পথ’ বেছে নিতে বলেছেন বলে জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর।
শুক্রবার ছিল অভিষেকের মালদহ সফরের শেষ দিন। আগে ঠিক ছিল, ওই জেলায় সফরের শেষ দিনে কালিয়াচক এবং বৈষ্ণবনগর থানা এলাকায় পদযাত্রা করবেন অভিষেক। কিন্তু হঠাৎই সেই কর্মসূচি বাতিল করে দিয়ে অভিষেক জানান, তিনি জেলার সব নেতার সঙ্গে বৈঠক করতে চান। ইংরেজবাজার এলাকার সুস্তানি মোড়ে তৃণমূলের ক্যাম্প অফিসে বসে বৈঠক। উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয় তৃণমূলের জেলা কমিটি, সমস্ত শাখা সংগঠনের সভাপতি, ব্লক সভাপতি, বিধায়ক ও বুথ সভাপতিদের। দুপুর সওয়া ১২টা নাগাদ রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। চলে ঘণ্টা দুয়েক। বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি জেলা তৃণমূলের শীর্ষনেতারা। জেলা সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সি জানান, দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সংবাদমাধ্যমে বলা যাবে না। একই সুর শোনা গিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের গলাতেও।
তবে তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, সকলের সামনেই কয়েকজন বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিকে ধমক দিয়েছেন অভিষেক। এই জেলায় গত লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় বিধানসভা ভোটে ভাল ফল করেছে তৃণমূল। কিন্তু সম্প্রতি একের পর এক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এমনকি, গোষ্ঠীসংঘর্ষের ঘটনা দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সে সব নিয়েই কথা বলেছেন অভিষেক। সব রকমের গোষ্ঠীবিবাদ দ্রুত মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জেলা সভাপতিকে সেই দায়িত্বও দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে ১৫টি ব্লকে আলাদা আলাদা বৈঠক করে সাংগঠনিক রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন অভিষেক।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্য নেতা এবং বিধায়ককে অভিষেক জানিয়ে দিয়েছেন, জেলা সভাপতিকে না জানিয়ে কেউ কোনও রকম পদক্ষেপ করতে পারবেন না। পুরনো কর্মীদেরও সমান গুরুত্ব দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। অভিযোগ ছিল, দলের পদে থেকে কোনও কোনও নেতা দলবিরোধী কাজ করছেন। তাঁদের সতর্ক করে দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘স্বার্থের জন্য দল করলে অন্য পথ বেছে নিন। রাজ্য সরকারের সুবিধা গ্রামের প্রতিটি ঘরে যাতে পৌঁছয়, সে দিকে নজর রাখুন।’’ একই সঙ্গে জানিয়ে দেন, টাকার বিনিময়ে কোনও নেতা বা কর্মী কাজ করছেন অভিযোগ পেলে, দ্রুত তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy