বাঁ দিক থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন জানাতে গিয়ে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে সোমবারই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বে তৃণমূলের ১০ জন প্রতিনিধির একটি দল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার রাত ৯টায় অভিষেকদের সঙ্গে দেখা করবেন রাজ্যপাল।
সোমবার দিল্লির ঘটনা নিয়ে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টও দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। তিনি লেখেন, ‘‘২০২৩ সালের অক্টোবরে দিল্লির কৃষি ভবনের ভিতরে গণতন্ত্রের মুখ বন্ধ করা হয়েছিল। সোমবার প্রকাশ্য দিবালোকে গণতন্ত্রের উপর হামলা চালানো হল। প্রতিদিন বাংলা-বিরোধী জমিদারেরা ক্ষমতার জন্য আরও হিংসাত্মক এবং মরিয়া হয়ে উঠছে। বাংলা এর জবাব দেব। বিজেপি তৈরি থাকো।’’
সোমবার দিল্লি গিয়ে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের ১০ জনের প্রতিনিধি দল। কমিশনের কাছে নিজেদের অভিযোগ এবং দাবি জানিয়ে বাইরে এসে ধর্নায় বসে তারা। ২৪ ঘণ্টা ধর্নায় বসার কথা ঘোষণা করেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। কিছু ক্ষণ পরেই সেই ধর্না তুলে দিতে আসরে নামে দিল্লি পুলিশ। সদস্যদের কমিশনের দফতরের সামনে থেকে সরে যেতে বলে পুলিশ। তারা রাজি না হলে পুলিশ জোর করে ধর্না তোলার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি। একে একে বিক্ষোভরত তৃণমূল নেতাদের টেনেহিঁচড়ে পুলিশ বাসে তোলে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের ১০ জনকে আটক করে এখন দিল্লির মন্দির মার্গ থানার ভিতরে রাখা হয়েছে।
ভূপতিনগরে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র ভূমিকা নিয়ে ‘অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলে সোমবার নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল। বিকেল ৪টেয় সেই সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই মোতাবেক কমিশনের দফতরে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহম্মদ নাদিমুল হক, দোলা সেন, সাকেত গোখলে, সাগরিকা ঘোষ, বিবেক গুপ্ত, অর্পিতা ঘোষ, শান্তনু সেন, আবিররঞ্জন বিশ্বাস এবং সুদীপ রাহা। কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর দোলা বলেন, ‘‘মোদীবাবু যদি মনে করেন, সবই জমিদারি, কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁদের, তা হলে ভুল করছেন। আমরা কমিশনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। চাই, সমান মাঠে খেলার ব্যবস্থা করুক। বিজেপির জমিদারি যেন বন্ধ হয়। দাবি করেছি, এখনই চার সংস্থার প্রধানকে বদল করা হোক। যাতে বিজেপি ওঁদের খেলার যন্ত্র ভাবতে না পারে।’’
কমিশনের কাছে আরও একটি অনুমতি চেয়ে আর্জি জানিয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। মানবিক কারণে যাতে ঝড়বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে এখনই নতুন ঘর তৈরির অনুমতি দেয় কমিশন, সেই আর্জি জানানো হয়েছে। দোলা বলেন, ‘‘যে কাজ চলছে, তাতে বাধা নেই। কিন্তু নির্বাচনী আচরণবিধি জারি থাকলে নতুন কাজ শুরু করা যায় না। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কমিশন অনুমতি দিলে তবেই নতুন বাড়ি তৈরি করা হবে। মানবিক কারণে কমিশনকে আর্জি জানিয়েছি। আবার ঝড় হতে পারে। মানুষগুলো যাতে খোলা আকাশের নীচে না থাকেন, তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য রাজ্য যাতে ব্যবস্থা নিতে পারে, তার জন্য কমিশন অনুমতি দিক।’’ এর পরেই ধর্নায় বসে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই ধর্না সরিয়ে সদস্যদের আটক করে দিল্লি পুলিশ। সেই নিয়ে ‘হেনস্থা’-র অভিযোগ তুলে এ বার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন অভিষেক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy