সোমবারও ভোগান্তির শিকার। লাইন ধরে হাঁটতে হল নিত্যযাত্রীদের। —নিজস্ব চিত্র।
দমদম স্টেশনের নন-ইন্টারলকিংয়ের কাজের কারণে শনি এবং রবিবার চরম দুর্ভোগের কবলে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। কিন্তু সোমবারও সেই দুর্ভোগের ছবি খুব একটা বদলাল না। স্টেশনে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকল একের পর এক ট্রেন, লাইন ধরে হাঁটলেন যাত্রীরা! যদিও পূর্ব রেলের দাবি, নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা আগেই কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে।
দমদম স্টেশনের নন-ইন্টারলকিংয়ের কাজের জন্য শনি এবং রবিবার শতাধিক লোকাল, এক্সপ্রেস বাতিল করা হবে তা আগেই জানিয়েছিল রেল। বলা হয়েছিল ১৪৩টি লোকাল বাতিল থাকবে। রোজ যে সংখ্যায় লোকাল ট্রেন চলে এই সব শাখায়, তার ৩৭ শতাংশ ট্রেন বাতিল করা হবে। বাকি ট্রেন টাইম টেবল মেনে চলবে বলেই জানিয়েছিল রেল। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। শনিবার ভোর থেকেই অনিয়মিত হয়ে পড়ে শিয়ালদহ শাখার ট্রেন পরিষেবা। রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত ভোগান্তির শিকার হয়েছিলেন নিত্যযাত্রীরা।
তবে সোমবার সকালে অফিসে বেরিয়ে বিপদে পড়েন যাত্রীরা। তাঁদের অভিজ্ঞতা, কোনও ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে তো চলেইনি, উল্টে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেছে বিভিন্ন স্টেশনে। মেন শাখার ডাউন লাইনের ট্রেন দমদমে ঢোকার মুখে আধ ঘণ্টার বেশি দাঁড়িয়ে ছিল। আর বনগাঁ শাখায় তো ঘন্টা দুয়েক দেরিতে চলেছে প্রায় প্রত্যেকটি ট্রেনই। ট্রেনের মধ্যে অপেক্ষা করতে করতে একটা সময় যাত্রীরা গত দু’দিনের মতো লাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে দমদম স্টেশনে এসেছেন। তার পর কেউ কেউ মেট্রো ধরে, আবার কেউ কেউ সড়কপথে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। সারা দিনেও এই ছবির কোনও পরিবর্তন ঘটল না। শিয়ালদহ মেন লাইনের দমদম স্টেশন সব ট্রেন ঢুকছে এক ঘণ্টা দেরিতে। ছাড়তেও করছে দেরি। ফলে বাড়ি ফেরার পথেও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের।
সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ বিধাননগর আসবেন বলে বনগাঁ থেকে ট্রেন ধরেছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে কর্মরত রাহুল স্যানাল। কিন্তু অন্যান্য দিন যে সময়ে পৌঁছন, সোমবার তা হল না। তাঁর কথায়, ‘‘শনিবার আর রবিবার ট্রেনে গোলমাল হয়েছিল শুনেছিলাম। তবে আজ তেমন অসুবিধা হবে না, সেটাই ভেবেছিলাম। কিন্তু যে ট্রেনে উঠেছিলাম তা প্রায় প্রতিটি সিগন্যালে দাঁড়িয়েছে। কখনও ১০ মিনিট, কখনও ১৫-২০ মিনিটও। তবে দমদম ঢোকার আগে প্রায় ঘণ্টা খানেক ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে।’’ তাঁর সুরে সুর মিলিয়েই আর এক যাত্রী বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে অনেকেই ট্রেন থেকে নেমে হেঁটে দমদমে গিয়েছেন। জানি না রাতে ফেরার সময় কী হবে।’’
পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, দমদমের নন-ইন্টারলকিং সিস্টেমটি ১৯৯৬ সাল থেকে কাজ করছে। তবে বর্তমানে সেই সিস্টেম আধুনিকীরণ করার প্রয়োজন ছিল। সেই কথা মাথায় রেখেই কাজ করা হয়েছে। ইন্টারলকিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ ছাড়াও দমদম স্টেশনে বড় আকারের বিশেষ মনিটর বসানো হচ্ছে। এর ফলে সার্বিক নজরদারি ছাড়াও পয়েন্ট এবং সিগন্যালিং ব্যবস্থার নানা ত্রুটি দ্রুত চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে রেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy