বিশ্বভারতীর এই ফলক নিয়েই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।
শান্তিনিকেতন বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রের স্বীকৃতি পেয়েছে। সেই উপলক্ষে যে ফলকটি বিশ্বভারতীতে বসেছে, তাতে কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নেই। বরং রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম। এই নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। বিশ্বভারতীর একাংশের অভিযোগ, কৃতিত্বের দাবিদার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতেই এ কাজ উপাচার্যের। বিশ্বভারতীর তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
শান্তিনিকেতনকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র বা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে ঘোষণা করার পর থেকেই অভিযোগ উঠছে, এই কাজের জন্য উপাচার্য নিজে কৃতিত্ব নিতে চান তো বটেই, আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকাও তিনি সামনে আনতে চান। এই আবহে সম্প্রতি বিশ্বভারতীর তরফে উপাসনা গৃহ, ছাতিমতলা এবং রবীন্দ্রভবনের উত্তরায়ণের সামনে শ্বেত পাথরের ফলক বসানো হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’। তার ঠিক নীচে নরেন্দ্র মোদী ও বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম।
বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্রনাথের নাম বাদ যাওয়ায় ক্ষুব্ধ আশ্রমিক থেকে শুরু করে প্রাক্তনী ও বিশ্বভারতীর শিক্ষকদের একাংশ। এমন ঘটনা অতীতে কোনও দিন ঘটেনি বলেও বিশ্বভারতীর অনেকের দাবি। বিশ্বভারতীর প্রথা অনুযায়ী কোনও উদ্বোধনী ফলক বা স্বীকৃতি ফলকে সাধারণত কারও নাম উল্লেখ করা হয় না। ঠাকুর পরিবারের সদস্য তথা প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুরের আক্ষেপ, “বর্তমান উপাচার্য বিশ্বভারতীর হর্তা-কর্তা-বিধাতা হয়ে গিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ বলে কেউ ছিলেন, আজ বোধহয় তাঁরা ভুলে গিয়েছেন। এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি এখানে।’’ আর এক আশ্রমিক তথা প্রাক্তনী অনিল কোনার বলেন, “৭০ বছরে আমি কোনও উপাচার্যের নামের কোনও ফলক এখানে দেখিনি। এই রীতি এখানে চলে না। উনি নিজের মতো করে একের পর এক ঐতিহ্য ভেঙে চলেছেন।’’
বিশ্বভারতীর শিক্ষক সংগঠন ভিবিইউএফএ-র সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, যেখানে যেখানে ফলক লাগানো হয়েছে, তার মালিকানা হয় শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের, নয়তো পূর্ত দফতরের। তাই ফলক বসানোর কোনও আইনি অধিকার উপাচার্যের নেই। তিনি বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথকে মুছে দিয়ে নিজের নামে এই প্রচার করার ব্যাপারটি নিয়ে আইনি পরামর্শ করছি। যে ভাবে আচার্যের নাম ব্যবহৃত হয়েছে, তাতে তাঁর সম্মতি নেওয়া হয়েছে কি না, তা-ও আমরা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জানতে চাইব।’’ গোটা ঘটনা নিয়ে বিশ্বভারতীর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy