বাম আমলে তাঁদের বলা হতো অনুব্রতী। তাঁরা মূলত করতেন আয়ার কাজ। সেই অনুব্রতীদেরই নতুন নামে সরকারি হাসপাতালে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ শুরু হয়েছে রাজ্যে।
কোনও বৈধতা ছাড়াই এখন সরকারি হাসপাতালে আয়া থাকেন রোগীর আত্মীয় হিসেবে। তাঁদের কাজ নিয়ে হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের কোনও দায়বদ্ধতা নেই। আয়াদের রেকর্ডও থাকে না। অভিযোগ, হাসপাতালের কর্মীরাই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেন। তাই অবৈধ হলেও সরকারি হাসপাতালে বহাল তবিয়তে চলে আয়া-রাজ।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, নতুন ব্যবস্থায় আয়াদের নাম নথিভুক্ত হবে। থাকবে পরিচয়পত্র, পোশাক। তাঁদের ভাতা বেঁধে দেওয়া হবে। হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের ঠিক করে দেওয়া কোনও অফিসারই আয়াদের কাজকর্মের জন্য দায়বদ্ধ থাকবেন। ‘‘কাজে গাফিলতি হলে বা টাকা নিয়ে আয়ারা জুলুম করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকেই তার দায় নিতে হবে,’’ বলেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী।
২০০০ সালের আগে পর্যন্ত আয়াদের সরকারি পরিষেবার অঙ্গ হিসেবেই স্বীকৃতি দেওয়া হতো। কিন্তু নানান অভিযোগ ওঠায় ২০০১ সালে আইন করে আয়া-প্রথা নিষিদ্ধ করা হয়। ঠিক হয়, রোগীর আত্মীয়েরা হাসপাতালের দেওয়া ‘গ্রিন কার্ড’ নিয়ে রোগীর সঙ্গে থাকতে পারবেন। কিন্তু সব রোগীর পক্ষে নিজের লোক রাখা সম্ভব হয় না। সেই অসহায়তার সুযোগ নিয়ে রোগীর আত্মীয় হিসেবে আয়ারা থেকেই যান হাসপাতালে।
বাম সরকারই অনুমতি দেয়, আয়ারা ‘অনুব্রতী’ নামে রোগীদের সাহায্য করতে পারবেন। অনুব্রতীদের নাম নথিভুক্ত থাকবে সুপারের কাছে। আবেদন জানালে সুপার সেই তালিকা থেকে কাউকে নিয়োগ করবেন। তাঁদের কার্ড ও ফোন নম্বর থাকবে। যে-কোনও কাজের ব্যাপারে তাঁরা সুপারের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন।
সরকার বদলের পরে অনুব্রতীরা এখন এসএসকেএম হাসপাতাল ছাড়া আর কোথাও নেই। মঙ্গলবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে শিশু চুরির পরে সেখানকার গভর্নিং বডি আয়াদের হাসপাতালে থাকা নিষিদ্ধ করে দেয়। কিন্তু বিকেলেই নবান্ন থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আয়ারা বহাল থাকছেন। স্বাস্থ্যকর্তারা তখন মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, খাতায়-কলমে আয়াদের ‘বৈধ’ হিসেবে স্বীকৃতি না-দিয়ে তাঁদের এই ভাবে বহাল রাখার কথা ঘোষণা করা ঠিক হবে না। তার পরেই নতুন নিয়ম করে সরকারি ভাবে আয়া রেখে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
‘‘রোগীর আত্মীয়েরাই আয়া চান। তাই ঠিক হয়েছে, আয়ারা বৈধ পরিচয়পত্র নিয়ে থাকবেন। অনেকটা এসএসকেএমের অনুব্রতীদের মতো,’’ বলছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy