Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

পুরাতত্ত্বকে সামনে রেখে জেলার পর্যটনে জোর

জেলায় এক দিকে যেমন বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে, তেমনই রয়েছে অনেক মন্দির-মসজিদ। এই ধর্মস্থানগুলোর নির্মাণ শৈলী গবেষকদের আকর্ষণ করে। অনেক মন্দিরের বিগ্রহও খুবই বিরল মূর্তি শৈলীর পরিচয় ধরে রেখেছে। পর্যটকদের কাছে সে সব ঠিক করে তুলে ধরার চেষ্টা করছে প্রশাসন।

হাল ফেরার অপেক্ষায় ইসলামপুরের সোনাখোদা মসজিদ। নিজস্ব চিত্র

হাল ফেরার অপেক্ষায় ইসলামপুরের সোনাখোদা মসজিদ। নিজস্ব চিত্র

মেহেদি হেদায়েতুল্লা 
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৯ ০২:৪৬
Share: Save:

পুরাতত্ত্বের দিক থেকে আকর্ষণীয় এলাকাগুলো ধরে উত্তর দিনাজপুরে পর্যটনের প্রসারে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। রাজ্যের পর্যটন দফতরের সচিব অত্রি ভট্টাচার্য এই বিষয়ে উত্তর দিনাজপুরের জেলা শাসকের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন।

জেলায় এক দিকে যেমন বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে, তেমনই রয়েছে অনেক মন্দির-মসজিদ। এই ধর্মস্থানগুলোর নির্মাণ শৈলী গবেষকদের আকর্ষণ করে। অনেক মন্দিরের বিগ্রহও খুবই বিরল মূর্তি শৈলীর পরিচয় ধরে রেখেছে। পর্যটকদের কাছে সে সব ঠিক করে তুলে ধরার চেষ্টা করছে প্রশাসন।

জেলায় বেশ কিছু স্থানকে রাজ্য হেরিটেজ কমিশন সংস্কার করলেও এখনও অনেক জায়গা সংস্কারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। তবে পর্যটন দফতর এগিয়ে আসায় নতুন করে ঐতিহাসিক স্থানগুলোকে রক্ষা হবে, এমনটাই অভিমত পুরাতত্ত্বের গবেষকদের। ইতিহাসবিদ তথা গবেষক বৃন্দাবন ঘোষ জানান, জেলায় প্রচুর পুরানো মন্দির-মসজিদ রয়েছে। রয়েছে জমিদার বাড়ি, ব্রিটিশ আমলের বাংলো, থানা এবং নীলকুঠি। কোথাও পুকুরের ঘাটও দর্শনীয়। তিনি জানান, হেরিটেজ কমিশন বেশ কিছু স্থান সংস্কার করলেও অনেক জায়গা এখনও বাকি রয়েছে।

সংস্কার হয়েছে এমন ঐতিহাসিক স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রায়গঞ্জের পিরপুকুর মাজার, বিন্দোলের ভৈরবী মন্দির, মারনাই শিবমন্দির এবং করণদিঘির নীলকুঠি। ইসলামপুরের চৌধুরী বাড়ি সংস্কারের কাজ অর্ধেক হয়েছে বলে দাবি। জেলার ইতিহাসবিদরা জানান, ইটাহারের জমিদার বাড়ি, ইসলামপুরের সোনাখোদা মসজিদ, চোপড়ার হোসেনদিঘি, রামগঞ্জের কলতাহার মসজিদ, করণদিঘির বাজারগাও দুর্গ, করণদিঘি, কালিয়াগঞ্জের ভেলাই দুর্গা, চূড়ামন শিবমন্দির, গোয়ালপোখরের ডাকবাংলো, হেমতাবাদ থানা এবং ডালখোলার গোপালপুর থানা, হেমতাবাদের ইংরেজ আমলের ডাক বাংলোর মতো অনেক জায়গা অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। এই স্থানগুলো ইতিহাসের সাক্ষী, কিন্তু সংস্কারের অভাবে ভুতুড়ে বাড়ি হয়ে আছে। বৃন্দাবনবাবু বলেন, ‘‘এই প্রাচীন বাড়ি ও মন্দির-মসজিদগুলোর কারুকাজ ও পোড়ামাটির শৈলী মুগ্ধ করবে পর্যটকদের। কিন্তু অনেক গুরত্বপূর্ণ নিদর্শনই অযত্নে নষ্ট হচ্ছে।’’

বাসিন্দাদের অভিযোগ, জেলায় একমাত্র রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাস ছাড়া আর সেই ভাবে অন্য স্থানগুলো পর্যটন শিল্পে জায়গায় করে নিতে পারেনি। অথচ দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই। তবে পর্যটন দফতর উদ্যোগী হওয়ায় খুশি বাসিন্দারা। পুরাতত্ত্ব এবং পর্যটন এক সূত্রে গাঁথা হলে জেলার পর্যটনের মানচিত্র যেমন পাল্টে যাবে, তেমনই কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, পর্যটন স্থান ও পুরাতাত্ত্বিক স্থানগুলোকে সামনে রেখে রেল স্টেশন, বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ড এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসা হবে। এদিকে ঐতিহাসিক স্থানগুলোর ছবি সহ স্থানগুলোর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, যোগাযোগ ব্যবস্থা কেমন, আশপাশের বাস স্ট্যান্ড বা রেলস্টেশনের দূরত্ব কত, তা রিপোর্টে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে প্রশাসনকে। জেলা প্রশাসন এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পর্যটন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Touris Archaeology State Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE