শাঁওলি মিত্র। ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে তিনি ইস্তফা দিয়েছিলেন গত ডিসেম্বরেই। তার পরেও তাঁর থাকা, না-থাকা নিয়ে টানাপড়েন চলছিল। এ বার সম্পূর্ণ বিচ্ছেদের কথাই জানিয়ে দিলেন শাঁওলী মিত্র। তবে রবিবারেও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, শাঁওলীর সঙ্গে তাঁদের সুসম্পর্ক আছে এবং থাকবে।
রবিবার সকালে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো একটি বিবৃতিতে প্রবীণ নাট্যব্যক্তিত্ব শাঁওলীর ঘোষণা, ‘‘বাংলা আকাদেমির সভাপতি-পদে ফেরার আর কোনও সম্ভাবনা নেই আমার। সব সংস্রব আমি ছিন্ন করছি।’’ পরে আনন্দবাজারকে তিনি বলেন, ‘‘এখনও ভাল কাজ করার ইচ্ছে বা ক্ষমতায় কোনও খামতি দেখা দেয়নি। কিন্তু এই বয়সে অসম্মান সহ্য হয় না। কাজ করা না-গেলে পদ আঁকড়ে থাকব না।’’
কেন এই সিদ্ধান্ত, তা-ও এ দিন ব্যাখ্যা করেছেন শাঁওলী। তাঁর দাবি, গত বছর মে মাস থেকে আকাদেমির পরিকাঠামো উন্নয়নের কিছু দাবি জানিয়ে বারবার চিঠি লিখেছেন তিনি। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। তবে তিনি ইস্তফা দেওয়ার পরে এ বছরের জানুয়ারিতে শিক্ষামন্ত্রী তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলে জানিয়েছেন শাঁওলী। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আকাদেমির বিষয়টি তিনি দেখছেন বলে পার্থবাবু নিজেও তখন সাংবাদিকদের জানান। কিন্তু আর কিছু হয়নি।
আরও পড়ুন: কাকা কেন বিজেপি প্রার্থী, ‘দাদাগিরি’ পিন্টুর
শাঁওলী জানান, মাসখানেক আগে এক বার পার্থবাবুকেও চিঠি দিয়ে তিনি বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন। পরে তথ্য-সংস্কৃতি সচিব বিবেক কুমার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে সভাপতি-পদে ফিরে আসতে বলেন। শাঁওলীর কথায়, ‘‘আমি বলি, আমায় তা হলে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানান। ওঁরা তা করেননি।’’ এর পরে বাংলা আকাদেমির বিষয়টি নিয়ে তাঁর পক্ষে আর অপেক্ষা করা সম্ভব নয় বলে জানান শাঁওলী। পার্থবাবু ছাড়াও তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের কর্তা পিয়ালি সেনগুপ্তকে ইতিমধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ-বার্তাটি পাঠিয়েছেন তিনি।
বাম জমানায় ‘পরিবর্তনকামী’ বিশিষ্টজন বলে চিহ্নিত হয়েছিলেন এই নাটককার-অভিনেত্রী। মমতার সঙ্গেও তখন থেকে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’। বাম জমানার অবসানে রবীন্দ্র সার্ধশতবর্ষে রবীন্দ্র রচনাবলি কমিটির দায়িত্ব নিয়ে বাংলা আকাদেমির কাজে যুক্ত হন শাঁওলী। সভাপতি হন বছর পাঁচেক আগে। এ বার সেই সম্পর্কে যবনিকাপাতের কথা জানিয়ে শাঁওলী বলছেন, ‘‘এ বারেই শেষ। ধরে নিন, মরা মানুষকে ফেরানো যাবে না। আমি নেই, মেনে নিতে হবে। কেউ বললেই আমি আর বাংলা আকাদেমিতে ফিরছি না।’’
আরও পড়ুন: ডিজিট্যাল আর্কাইভ হচ্ছে দেশ ভাগ নিয়ে
পার্থবাবু অবশ্য আশাবাদী। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এখনও বলছি, পরিকাঠামোই যদি সমস্যা হয়, তবে রাতারাতি না-হলেও কিছু একটা সমাধানে আমরা পৌঁছব। দরকারে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।’’
আপাতত শাঁওলীর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী ভাবে বাংলা আকাদেমির কাজ দেখছেন কবি জয় গোস্বামী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy