পথ দুর্ঘটনা বাড়তে থাকায় সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চালু হয়েছে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্প। তারই সূত্র ধরে এ বার পথ নিরাপত্তার আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বিধানসভার আগামী অধিবেশনে যাতে এই সংক্রান্ত বিল আনা যায়, তার তোড়জোড় শুরু হয়েছে পরিবহণ দফতরের অন্দরে।
কেন্দ্রীয় সড়ক-পরিবহণ মন্ত্রকের হিসেব বলছে, দেশে প্রতিদিন গড়ে পথ দুর্ঘটনা হয় ১২১৪টি। তাতে প্রাণ হারান ৩৫০ জনেরও বেশি। বছরে গড়ে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ পথের বলি হন। পথ দুর্ঘটনার তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে এ রাজ্য। এ সব নিয়ে কেন্দ্রীয় সড়ক-পরিবহণ মন্ত্রক যেমন উদ্বিগ্ন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টও। পথ দুর্ঘটনা কমাতে বিভিন্ন সময়ে নানা ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। যেমন, প্রতিটি রাজ্যকে পথ নিরাপত্তা কমিটি গড়তে হবে। তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বেশ কিছু রাজ্য ইতিমধ্যেই পথ-নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। তৈরি করেছে পথ নিরাপত্তা আইন।
এ রাজ্যেও গত বছর তৎকালীন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রের নেতৃত্বে তৈরি হয় ‘রোড সেফটি কাউন্সিল’। দ্বিতীয় পদক্ষেপ হিসেবে পথ দুর্ঘটনা নিয়ে আমজনতার মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য শুরু হয়েছে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রচার। সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে।
কেমন হবে সেই আইন? নবান্ন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কেরল, রাজস্থানের মতো কিছু রাজ্য পথ নিরাপত্তা নিয়ে আইন করেছে। ওই রাজ্যগুলির আইন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরিবহণ দফতরের কর্তাদের এ রাজ্যে ‘পথ নিরাপত্তা আইনে’র খসড়া তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই আইনের আওতায় রয়েছে রাজ্য ও জেলা কমিশনারেট স্তরের ‘রোড সেফটি কাউন্সিল’। কী ভাবে রোড সেফটি কাউন্সিল কাজ করবে, তা-ও ওই আইনে বলা থাকবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পথ নিরাপত্তা আইনের আওতায় দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে জরিমানা আদায় এবং শাস্তির ব্যবস্থা রাজ্য সরকার করতে পারে কি না, পারলেও কত দূর পারে, তা-ও দেখতে বলা হয়েছে। অন্য রাজ্যের আইনে এই সংস্থান রয়েছে কি না, পরিবহণ দফতরের কর্তারা দেখবেন। প্রয়োজনে কেন্দ্রের মোটর ভেহিকলস আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে পথ নিরাপত্তা আইনটি প্রণয়ন করতে চাইছে রাজ্য।
রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘পথ নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের জরিমানা থেকে নিরাপত্তা ও সচেতনতা বাড়ানোর জন্য খরচ করা হবে— এমনই ভাবছে সরকার। সে কারণেই আইনে জরিমানা এবং শাস্তির পরিমাণ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy