রেশন মামলায় ধৃত বাকিবুর রহমান। —ফাইল চিত্র ।
আদালতের নির্দেশে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে বন্দি রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বাকিবুর রহমান। তবে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে বন্দি মানেই তো তাঁকে না খেয়ে মরতে বলা যায় না! বাকিবুরের মামলার শুনানি চলাকালীন এমনটাই মন্তব্য করলেন সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত (সেখানে ইডির মামলা চলছে)-এর বিচারক।
এনপিজি চালকলের অ্যাকাউন্টের চেকে বাকিবুর সই করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে মামলার শুনানি ছিল সোমবার। বাকিবুরের আইনজীবী আদালতে জানান, এনপিজি চালকলের ১০৭৫ জন কর্মীর বেতনের জন্য প্রায় এক কোটি টাকা প্রয়োজন। আর তার জন্য ব্যাঙ্কের চেকে বাকিবুরের সই প্রয়োজন। তবে তাতে আপত্তি জানায় ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিশেষ সরকারি আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এনপিজি চালকলের কর্মীদের সঠিক তথ্য প্রকাশ করলে, তবেই বাকিবুর রহমানকে চেক সই করার অনুমতি দিতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। খরচের হিসাবেও স্বচ্ছতা ও সততা দেখাতে হবে।
এর পর সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত (সেখানে ইডির মামলা চলছে)-এর বিচারক প্রশ্ন তোলেন, ওই ব্যাঙ্ক আক্যাউন্ট বাজেয়াপ্ত না করলে চেক সই করার অনুমতি দিতে আপত্তি কোথায়? বাকিবুর প্রসঙ্গে বিচারক বলেন, ‘‘বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রেখেছি মানে তো না খেয়ে মরে যেতে বলব না!’’
ইডির দাবি, এনপিজি চালকলের সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং সম্পত্তি সন্দেহের আওতায় রয়েছে। রেশনের সবচেয়ে বড় ‘দুর্নীতি’ হয়েছে এনপিজি চালকলের মাধ্যমেই। তাই কর্মীদের বেতনের নাম করে রেশন ‘দুর্নীতি’র টাকা সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হতে পারে বলেও আদালতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইডি। তদন্তকারী আধিকারিকেরা ওই চালকলের কর্মীদের ব্যাপারে আরও বিস্তারিত তথ্য খতিয়ে দেখতে চান বলে আদালতে ইডি জানিয়েছে। পাশাপাশি, বেতন দেওয়ার পর সেই খরচের হিসাবও দিতে হবে বলে আদালতে আর্জি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। ২৭ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
গত ২ ফেব্রুয়ারি ইডির হাতে ধৃত বাকিবুর সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে আবেদন করেন যে, তিনি চেকে সই করতে পারছেন না বলে, তাঁর সংস্থার কর্মীদের বেতন আটকে রয়েছে। চেক এবং ব্যাঙ্ক ফর্মে সই করার জন্য তিনি আদালতে আবেদনও জানিয়েছিলেন। সেই নিয়ে আদালতে নিজেদের আপত্তির কথা তোলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডির আইনজীবী আদালতে জানিয়েছিলেন, যে হেতু টাকার ব্যাপার, তাই ওই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই টাকা সরিয়ে ফেলা হতে পারে।
তবে ইডির আইনজীবীর দাবি উড়িয়ে দিয়ে আদালতে বাকিবুরের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, এনপিজি চালকলের কর্মচারীদের বেতন, পিএফ এবং ইএসআই দিতে হয়। ইলেকট্রিক বিল দিতে হয়। ৭৫ কোটি লোনের ইএমআই দিতে হয়। তাই পাঁচটি চেক আপাতত সই করতে দেওয়া হোক। না হলে চালকল বন্ধ হয় যাবে বলেও আদালতে জানিয়েছিলেন বাকিবুরের আইনজীবী।
রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গত অক্টোবরে গ্রেফতার হন বাকিবুর। তার আগে কলকাতার কৈখালির ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। ইডি সূত্রে দাবি, অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বাকিবুরের। তিনি রাজ্যের রেশন ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে জড়িত বলেও দাবি ইডির। বাকিবুরের বাড়ি থেকে পাওয়া নথির সূত্র ধরেই গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ইডির দাবি, দু’জনের মধ্যে একটি যোগসূত্রও ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy