সৌগত রায়। ফাইল চিত্র।
বিরোধীরা এত দিন যে প্রশ্ন তুলে এসেছে, এ বার সেই প্রশ্নই শোনা গেল শাসকদলের সাংসদের মুখে। গুরুদাস কলেজের ‘ফেস্ট’-এ গান গাইতে এসেছিলেন বলিউডের গায়ক কেকে। নজরুল মঞ্চের সেই অনুষ্ঠান শেষে হোটেলে ফেরার পরেই মৃত্যু হয় তাঁর। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে খরচ হওয়া টাকার উৎস নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুললেন দলীয় সাংসদ সৌগত রায়।
শনিবার বরাহনগরে টিএমসিপির এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সৌগত। সেখানেই প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, “এই যে কেকে গান গাইতে এসে মারা গেলেন। আমি শুধু ভাবি যে, এত টাকা কোথা থেকে এল! ৩০ লাখ না ৫০ লাখ কত যেন লেগেছে শুনলাম! টাকা তো হাওয়া থেকে আসে না।”
এত টাকা দিয়ে কলেজ ফেস্টে শিল্পী আনার কোনও প্রয়োজন ছিল কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন সাংসদ। তাঁর কথায়, “এই রকম প্রচণ্ড খরচ করে বম্বে থেকে শিল্পী আনার কি খুব দরকার ছিল? এত টাকা দিয়ে এ সব করতে গেলে কারও না কারও কাছে সারেন্ডার করতে হয়। এলাকার মস্তান নয় তো প্রোমোটারের কাছে। প্রথমেই যদি সারেন্ডার করো, তা হলে বাকি জীবন লড়াই করবে কী করে?” এমনটা বলে দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সৌগত। যদিও কেকে-র মৃত্যুর পর ওই অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে টিএমসিপি জানিয়েছিল, অনুষ্ঠানের খরচ দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তারা কিছুই দেয়নি।
গত ৩১ মে কেকে গান গাইতে এসেছিলেন গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে। তার আগের দিন ওই নজরুল মঞ্চে ঠাকুরপুকুর বিবেকানন্দ কলেজের অনুষ্ঠানেও গান গেয়েছিলেন তিনি। টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ ওই দু’টি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেই আয়োজনের বিপুল খরচ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন দমদমের সাংসদ। এই খরচের কারণেই যে তিনি বরাহনগর উৎসব বন্ধ করে দিয়েছেন, তা-ও নিজের বক্তৃতায় বলেন সাংসদ। যদিও কেকে-র মৃত্যুর পর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ‘ফেস্ট’ বাতিল হয়ে যায়। সেই অনুষ্ঠানে আসার কথা ছিল জুবিন নাথিয়াল ও সুনিধি চৌহানের মতো নামী গায়কের।
অন্য দিকে, সৌগতের শনিবারের এই মন্তব্যের এক দিন আগে শুক্রবার তৃণমূল ভবনে দলের শহিদ সমাবেশ আয়োজন নিয়ে কড়া বার্তা দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, দলের শহিদ সমাবেশের আয়োজনের নামে কোনও রকম চাঁদা নেওয়া যাবে না। তাঁর হুঁশিয়ারি, কারও বিরুদ্ধে চাঁদা সংক্রান্ত অভিযোগ উঠলে কড়া পদক্ষেপ করে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে সংশ্লিষ্ট নেতাকে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy