Advertisement
১৪ জুন ২০২৪

মাথাহীন স্কুলে কার হাতে রাশ

এক ডিআই জানান, নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে সহকারী প্রধান শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের পদে বসানো হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আইনে যে-বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই, তেমন কোনও কাজ করা সম্ভব নয়।

সুপ্রিয় তরফদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৮ ০৫:৪২
Share: Save:

প্রধান শিক্ষক অবসর নিলে বা তাঁর অনুপস্থিতিতে সেই পদে সহকারী প্রধান শিক্ষককে বসানোর নির্দেশ দিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর। কিন্তু যেখানে সহকারী প্রধান শিক্ষক নেই, সেখানে কী হবে? সদুত্তর নেই। যে-সব স্কুলে শীর্ষ পদ ফাঁকা, সেখানে রীতিমতো প্রশাসনিক ডামাডোল চলছে বলেই অভিযোগ।

যেখানে সহকারী প্রধান শিক্ষক নেই, সেখানে কী হবে, তার কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই বলে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতি। এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে
অভিযোগও করেছে তারা। অভিজ্ঞতা ও বয়সের নিরিখে ‘সিনিয়র’ শিক্ষককেই ওই পদে বসানোর দাবি জানানো হয়েছে।

মার্চে তৈরি আইনে জানানো হয়েছে, যে-সব স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই, সেখানে সহকারী প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব দিতে হবে। কিন্তু বিতর্ক থামেনি। অনেক জায়গায় সহকারী প্রধান শিক্ষককে বাদ দিয়ে পরিচালন সমিতির সমর্থনে অন্য কাউকে সেই পদে বসানোর অভিযোগ উঠছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল জেলা পরিদর্শকদের (ডিআই) নিয়ে বৈঠক করেন দফতরের কর্তারা। তার পরে ফের ডিআইদের তরফে স্কুলে নির্দেশিকা পাঠানো হয়। কিন্তু পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলায়নি।

এক ডিআই জানান, নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে সহকারী প্রধান শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের পদে বসানো হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আইনে যে-বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই, তেমন কোনও কাজ করা সম্ভব নয়।

পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি, এই বিষয়ে তিনি যেন অবিলম্বে সদর্থক ভূমিকা নেন। কারণ এই সমস্যার সমাধান না-হলে যোগ্যদের সম্মান যেমন দেওয়া যাবে না, একই ভাবে স্কুলের প্রশাসনিক ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।’’

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ চলছে। ফলে একসঙ্গে এই সমস্যা মিটতে চলেছে বহু স্কুলে। বাকিগুলির ক্ষেত্রে কী করা যায়, সেই বিষয়ে আলোচনা হবে। অনেক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশ্ন, স্কুল পরিচালন সমিতির ক্ষমতাও তো অনেকটা খর্ব করা হয়েছে। তা হলে তাদের পছন্দের শিক্ষককে বসানোর অভিযোগ ওঠে কী করে?

নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য জানান, রাজ্যের বহু স্কুলে সমস্যা চলছে। ডিআই-রা সব জেনেও চুপ। যেখানে সহকারী প্রধান শিক্ষক নেই, সেখানে কী হবে, তার সুস্পষ্ট নির্দেশ না-থাকায় বেশি করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। সরকারের উচিত, তাদের বিজ্ঞপ্তি স্কুলের পরিচালন সমিতি যাতে মেনে চলে, তার ব্যবস্থা করা।

স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে শুধু এটুকু জানানো হয়েছে যে, ডিআই-দের যথাযথ পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছিল। তিনি ফোন তেলেননি। জবাব দেননি এসএমএসেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE