যা ভাবা গিয়েছিল, হলও ঠিক তাই।
সোমবার বারাসত আদালতে মিনাখাঁর বিধায়ক উষারানি মণ্ডল ও তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয়ের আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। এ দিনই আবেদন প্রত্যাহার করলেন তাঁদের আইনজীবী বিকাশ ঘোষ। শনিবার পুলিশ তড়িঘড়ি হাড়োয়া-কাণ্ডের চার্জশিট যে ভাবে পেশ করে তাতে এমনটাই যে হবে তা স্পষ্ট ছিল। চার্জশিট থেকে পুলিশ বাদ দেয় উষারানি, মৃত্যুঞ্জয়ের নাম। সোমবার যে তাঁদের আগাম জামিনের শুনানি ছিল তা পুলিশের জানাই ছিল। চার্জশিটে নাম না থাকায় এখন ওই তৃণমূল দম্পতি পুরোপুরি মুক্ত। তাঁদের লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতে হবে না।
১২ মে হাড়োয়ার ব্রাহ্মণচক গ্রামে সিপিএম কর্মীদের উপরে বোমা-গুলি নিয়ে হামলার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত উষারানি ও তাঁর স্বামী। কিন্তু শনিবার পুলিশ বসিরহাট আদালতে যে ৩৮ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের চার্জশিট পেশ করেছে, সেখানে নাম ছিল না স্বামী-স্ত্রীর। উষারানির আইনজীবী বিকাশ ঘোষ বলেন, “পুলিশ তদন্ত করে, একাধিক বার আমার মক্কেলদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত, ঘটনার সময়ে এলাকায় ছিলেন না আমার মক্কেলরা। সে জন্যই চার্জশিটে নাম বাদ পড়েছে। আগাম জামিনের আবেদনও প্রত্যাহার করে নিয়েছি আমরা।”
ঘটনার দিন যে এফআইআর দায়ের হয়, সেখানে প্রথম দু’টি নামই ছিল বিধায়ক ও তাঁর স্বামীর। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, গুরুতর একাধিক অভিযোগে পুলিশ প্রায় দু’মাস ধরে গ্রেফতার করেনি উষারানি ও মৃত্যুঞ্জয়কে। এই পরিস্থিতিতে আগাম জামিনের আবেদনে আদালত যদি সাড়া না দেয়, সেই আশঙ্কা ছিল তৃণমূলের অন্দরে। সে জন্যই ওই মামলার শুনানির আগে তড়িঘড়ি চার্জশিট পেশ করেছে পুলিশ। যেখান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বিধায়ক ও তাঁর স্বামীর নাম।
সিপিএমের জেলা নেতা অমিতাভ নন্দী বলেন, “তৃণমূলের দলীয় সিদ্ধান্ত মতোই চলছে পুলিশ-প্রশাসন।” তাঁর ক্ষোভ, একের পর এক অন্যায়েও শাসক দলের নেতানেত্রীদের গায়ে আঁচ পড়ছে না। কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইঞা এ দিন ছিলেন জেলায়। তিনি বলেন, “চার্জশিটে পুলিশ এমন রিপোর্ট দিচ্ছে যাতে আসল ঘটনাই বদলে যাচ্ছে। সিপিএমের আমল থেকে এমন চলছে।”
জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য বলেন, “কোনও গৃহবধূ কী (উষারানি) কখনও গুলি চালাতে পারে? সিপিএম প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করেছিল। পুলিশ ঠিক তদন্ত করেছে।” আইনজীবী বিকাশবাবু আবার বলেন, “প্রভাবই যদি খাটানো হবে, তবে উষারানির ছেলে নীলোৎপলের নাম কী ভাবে চার্জশিটে থাকে?” সিপিএম নেতৃত্বের মতে, নীলোৎপল নাবালক। সহজেই জামিন পেয়ে যাবে। তাই স্রেফ ভাঁওতা দিতেই তার নাম রাখা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy