নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রাবাসে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক খুনের ঘটনায় আরও দুই হবু চিকিত্সককে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অরবিন্দ মাঝি এবং অভিষেক কুমার। তাঁদের বৃহস্পতিবার লালবাজারে গোয়েন্দা বিভাগে ডেকে এক দফা জেরার পরে গ্রেফতার করা হয়। আজ, শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হবে তাঁদের।
লালবাজার সূত্রে খবর, অরবিন্দ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর বাড়ি আসানসোলে। ধৃত অপর ছাত্র অভিষেক কুমার ইন্টার্ন হিসেবে ওই হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি বিহারে। এ নিয়ে এনআরএস কাণ্ডে মোট নয় জন গ্রেফতার হলেন। যার মধ্যে সাত জন ওই ছাত্রাবসের আবাসিক। বাকি দু’জন ক্যান্টিন-কর্মী।
গত ১৬ নভেম্বর সকালে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার হয় মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক কোরপান শাহের মৃতদেহ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মারা হয়েছে। এবং ওই হত্যার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছাত্রাবাসের এক দল ছাত্র। পুলিশের অভিযোগ, এই হত্যার তদন্তের কাজে প্রথমে এনআরএস কর্তৃপক্ষ তাদের সহযোগিতা করেননি। ঘটনার প্রায় এক মাস পরে, জসিমুদ্দিন নামে ওই মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পরে গ্রেফতার করা হয় দুই ক্যান্টিন-কর্মীকেও। লালবাজার সূত্রের খবর, জেরায় ওই প্রথম বর্ষের ছাত্র ও ক্যান্টিন-কর্মীরা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত জনা দশেক হবু চিকিত্সকের নাম বলেন। জসিমুদ্দিন এবং ক্যান্টিন-কর্মীদের জেরা করে লালবাজারের ওই বিশেষ তদন্তকারী দল এনআরএস ছাত্রাবাসের আরও চার হবু চিকিত্সককে গ্রেফতার করে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এ দিন দুপুরে লালবাজারে বিশেষ তদন্তকারী দল ডেকে পাঠায় চার হবু চিকিত্সককে। পুলিশের দাবি, বিকেলে জেরার মুখে কোরপান হত্যার বেশ কিছু বিবরণও দেন ধৃতেরা। এর পরেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় পুলিশ। গোয়েন্দাদের দাবি, ওই দু’জন ঘটনার দিন কোরপানকে মারধর করেছিলেন। অভিষেক কুমার অন্য ইন্টার্নদের সঙ্গে মারধরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে গোয়েন্দাদের দাবি।
লালবাজার সূত্রে খবর, ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ধৃত হবু চিকিত্সকদের কাছ থেকে তদন্তকারীরা আগেই জানতে পেরেছিলেন, ঘটনার দিন দু’দফায় কোরপানকে মারধর করা হয়েছিল। মারতে মারতে প্রায় ছাত্রাবাসের চারতলা ঘোরানো হয়েছিল বলে পুলিশের দাবি। তার পরে থামের সঙ্গে বেঁধে মারধর শুরু হয়। মার খেয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন কোরপান। তখনই সিনিয়র ওই ইন্টার্নের নির্দেশে পুরো ঘটনা ধামাচাপা দিতে বলা হয় ছাত্রাবাসের অন্য হবু চিকিত্সকদের। তদন্তকারীদের দাবি, জসিমুদ্দিন এবং ক্যান্টিন-কর্মীরা গ্রেফতার হওয়ার পরে তাঁরা লালবাজারের গোয়েন্দাদের কাছে সব বলে ফেলায় ওই হবু চিকিত্সকদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy