চার জেলার চার শিল্পতালুকের কাজে গতি আনতে বিশেষ নজরদারি শাখা খুলেছে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প দফতর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই চার প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। দীর্ঘসূত্রিতার জেরে যাতে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুব্ধ না হন, তা নিশ্চিত করতেই দফতর-কর্তাদের এই সতর্কতা।
যে চার শিল্পতালুক রূপায়ণের উপর এই মুহূর্তে গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য সরকার, সেগুলি হল বেলুড়, বোলপুর, শ্রীরামপুর ও জলপাইগুড়ি এই । রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সচিব রাজীব সিংহ বলেন, “এই চার প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে বিশেষ ইউনিট খোলা হয়েছে।, তাতে দফতরের দু’জন পদস্থ অফিসার ও বাইরের দুই পরামর্শদাতা আছেন।”
ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সব্যসাচী বাগচি বলেন, “বোলপুরে প্রস্তাবিত বিশ্ব ক্ষুদ্র বাজারের জন্য লাগবে ১০০ একর জমি। এর মধ্যে ৫০ একর হাতে এসে গিয়েছে। চাওয়া হয়েছে ‘এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট’ (ইওআই)। এ কারণে, আগ্রহীদের সময় দেওয়া হয়েছে ১৫ মার্চ পর্যন্ত।” তিনি জানান, প্রকল্পটিকে আকর্ষণীয় করতে আধুনিক মানের গল্ফ কোর্স, টেনিস কোর্টের মতো প্রমোদ-প্রকল্প তৈরি করা হবে। রাজীব সিংহ বলেন, “ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুর, স্পেন ও ব্রিটেনের কিছু প্রতিনিধি এলাকায় ঘুরে তাঁদের মতামত জানিয়ে গিয়েছেন।”
বেলুড়ের শিল্পতালুকটি হবে বন্ধ হয়ে যাওয়া ‘ন্যাশনাল আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি’-র জমিতে। ১৯৫৪ সালে তৈরি ওই কারখানা ’৭০ দশকের মাঝে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৯ সালে এটি কেন্দ্রের হাতে যায়। ১৯৮৪-তে কারখানাটি যায় রাজ্যের হাতে। ১৯৮৭-তে সরকারের নির্দেশে একটি পরামর্শদান সংস্থা এটির পুনরুজ্জীবন-খসড়া দাখিল করলেও ঠিক মতো রূপায়িত করা যায়নি। ২০০৬-এর মার্চে ঠিক হয় সেটিকে ‘সেল’ দুর্গাপুর স্টিল প্রজেক্ট এবং ইস্কো-র সহায়ক সংস্থা হিসেবে ব্যবহার করবে। সেটিও রূপায়িত করা যায়নি। সেই জমিতেই এ বার তৈরি হবে সুসংহত বস্ত্র বাজার। রাজীববাবু বলেন, “১০০ একর জমিতে প্রকল্প রূপায়ণের জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। গোটা ছয়েক আবেদন জমা পড়েছে। এগুলো খতিয়ে প্রথা মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” এর পাশেই কারখানার যন্ত্র বিপণন ও প্রশিক্ষণের একটি কেন্দ্র হবে ২০ একর জমিতে। কেন্দ্র সরকার এর জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। গোটা দেশে এমন ১৫টি প্রকল্প হচ্ছে।
শ্রীরামপুরের মাহেশে ৫৩.২ একর জমিতে হবে সিল্ক প্রিন্টিং কারখানার জন্যও জমি চিহ্নিত হয়েছে। জলপাইগুড়ির বানারহাটে প্রায় ১০০ একর জমিতে হবে ইকো-ট্যুরিজম পার্ক। দুই প্রকল্পের জন্যও সম্প্রতি ইওআই চাওয়া হয়েছে। প্রকল্প রূপায়ণের কাজ ঠিকঠাক চলছে বলে সরকারি কর্তারা দাবি করলেও সমস্যা থাকছেই। মাহেশে প্রকল্প করতে গেলে ওঠাতে হবে কিছু জবরদখলকারীকে। বেলুড়ের প্রকল্পের জন্য প্রায় দু’কিলোমিটার রাস্তা চওড়া করতে হবে। কী ভাবে হবে এগুলো? রাজীববাবু বলেন, “রাস্তা চওড়া করার ব্যাপারে কথা হয়েছে পূর্ত দফতরের সঙ্গে। দখলদার সরাতে সরকারি নীতিই মানা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy