তৃণমূল দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে আরএসএসের নির্দেশে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ কলকাতায় আসছেন। সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বকে এই বলে সতর্ক করে দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট নির্দেশ দিয়েছেন বৃহত্তর বাম ঐক্য গড়ে শুধু রাজনৈতিক ভাবেই নয়, শিক্ষায়তন, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও আরএসএসের মোকাবিলা করতে হবে। শনিবার কলকাতায় এম বাসবপুন্নাইয়ার জন্মশতবর্ষ পালনের সভায় কারাট বক্তৃতা করেন। সেখানে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু এবং সূর্যকান্ত মিশ্র উপস্থিত ছিলেন।
কারাট বলেন, “গুজরাতে একাধিক মামলায় অভিযুক্ত অমিত শাহকে আরএসএস দায়িত্ব দিয়ে উত্তরপ্রদেশে পাঠিয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য সফল। এখন পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ু এবং বিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশে তাঁকে মনোনিবেশ করতে বলেছে। আরএসএসের নির্দেশেই অমিত শাহ শনিবার কলকাতা সফরে আসছেন।”
সারদা-কেলেঙ্কারি থেকে কামদুনি-ধূপগুড়ির মতো নারী নির্যাতনের ঘটনা, মূল্যবৃদ্ধি থেকে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি এই সব বিষয়কে কাজে লাগিয়ে তার সঙ্গে হিন্দুত্বের মোড়ক দিয়ে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে দ্রুত জমি পেতে চাইছে বলে কারাট মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “তৃণমূলের মতো বর্বর ফ্যাসিস্ত শক্তি গরিব ও সাধারণ মানুষের বাম-বিরোধী মানসিকতাকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু তারা মানুষের সমর্থন দ্রুত হারাচ্ছে। আর বিজেপি তা কাজে লাগাতে চেষ্টা করছে।”
লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রায় ১৭% ভোট পেয়ে দু’টি আসন জিতেছিল। বামেরা পেয়েছিল ২৯% ভোট ও দু’টি আসন। চৌরঙ্গি ও বসিরহাট (দক্ষিণ) কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনেও বিজেপি অন্যতম শক্তি হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এই পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িকতার তীব্র বিরোধিতাই সিপিএমকে হারানো ভোট ফিরিয়ে দিতে পারে বলে কারাট মনে করেন। এ দিনের সভাতে বাসবপুন্নাইয়াকে সামনে রেখে সিপিএমের নেতা-কর্মীদের সে কথাই বলেন তিনি।
সারদা কেলেঙ্কারিকে ‘লুম্পেন-ক্যাপিটালিজম’ বলে কটাক্ষ করে কারাট বলেন, “ক্ষমতাসীন তৃণমূলের হাত ধরে যে ভাবে এ রাজ্যে রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে, তা অতীতে হয়নি। তৃণমূলের সাংসদ পর্যন্ত মহিলাদের ধর্ষণের কথা বলে পার পেয়ে যাচ্ছেন।” তৃণমূলের সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়েছে এই অভিযোগ করে কারাট বলেন, “তারই সুযোগ নিতে অমিত শাহ এ রাজ্যে আসছেন।”
কী ভাবে অমিত ও বিজেপির মোকাবিলা করতে হবে?
এই প্রশ্ন তুলে তার জবাবও দেন কারাট। তিনি বলেন, “আরএসএস ভোটে লড়ে না। তারা সামাজিক কাজ করে। সাংস্কৃতিক কার্যকলাপের মধ্যে দিয়ে সংগঠনের প্রসার ঘটায়।” এই প্রেক্ষিতে কারাটের নির্দেশ দলের কর্মীদের আগামী দিনে বিজেপি-র বিরুদ্ধে শুধু ভোটে লড়াই করলেই চলবে না। দোকানদার থেকে ছাত্র-যুব মহিলা সকলের কাছে গিয়ে আরএসএসের হিন্দুত্ববাদ এবং বিভাজনের রাজনীতি বোঝাতে হবে। সে কাজে বামফ্রন্টের বাইরে থাকা বামপন্থী দল এবং মানুষকেও সঙ্গে নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy