উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ফাইল চিত্র।
উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে অপহরণ, এমনকি খুনের ছক পর্যন্ত কষে রেখেছিল আমেরিকান গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ। প্রাক্তন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলের এক প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তাকে উদ্ধৃত করে এই দাবি করেছে আন্তর্জাতিক একটি খবরের ওয়েবসাইট। রিপোর্টটি প্রকাশ্যে আসার পর পরই গোটা দুনিয়ায় রীতিমতো হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সন্ত্রাসবাদী নন, শুধুমাত্র সরকারি গোপন তথ্য ফাঁসে অভিযুক্ত এক জনকে মেরে ফেলার কথা কী করে ভেবেছিল আমেরিকান গুপ্তচর সংস্থাটি। বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি সিআইএ।
২০১০ সালে আমেরিকান প্রশাসনের গোপন সরকারি নথি ফাঁস করে গোটা বিশ্বে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। সিআইএ-র একান্ত নিজস্ব হ্যাকিং যন্ত্র ‘ভল্ট-সেভেন’–এর তথ্যও ছিল তাতে। অ্যাসাঞ্জকে ব্রিটেন থেকে আমেরিকায় প্রত্যর্পণের মামলা লড়ছেন সরকারি কৌঁসুলিরা। আপাতত লন্ডনের বেলমার্শ জেলে বন্দি রয়েছেন বছর পঞ্চাশের অ্যাসাঞ্জ। কিছু দিন আগে লন্ডনের এক আদালত তাঁকে প্রত্যর্পণ করার ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ দেয়। বিচারক তাঁর রায়ে জানান, অ্যাসাঞ্জের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। তিনি আত্মহত্যা পর্যন্ত করতে পারেন। প্রত্যর্পণ স্থগিত হওয়ায় সেই রায়ের প্রবল সমালোচনা করেছিলেন আমেরিকার সরকারি আইনজীবীরা। অ্যাসাঞ্জের আমেরিকার আইনজীবী ব্যারি পোলাক রিপোর্টটি নিয়ে মন্তব্য করেননি। তবে তিনি বলেছেন, ‘‘আশা করি এর পরেও আমার মক্কেলকে আমেরিকায় ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে দু’বার ভাববে ব্রিটেনের আদালত।’’
সালটা ২০১৭। নাম প্রকাশ করতে না চাওয়া আমেরিকার ওই প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তা জানিয়েছেন, সেই সময়ে ব্রিটেনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। তখনই অ্যাসাঞ্জকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করেন সিআইএ-র গোয়েন্দারা। তখন ওই সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন প্রাক্তন আমেরিকান বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো। অ্যাসাঞ্জ সিআইএ-র গোপন
তথ্য ফাঁস করে দেওয়ায় তাঁর উপরে খুবই ক্ষুব্ধ ছিলেন পম্পেয়ো। যে প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তা খবরটি প্রকাশ্যে এনেছেন, তিনি জানান, সেই সময়ে যে কোনও মূল্যে অ্যাসাঞ্জকে নিজেদের হাতে পেতে চেয়েছিলেন পম্পেয়ো।
কিন্তু নিজেদের ভাবমূর্তির তোয়াক্কা না করে অ্যাসাঞ্জকে হঠাৎ অপহরণের ছক কেন কষেছিল সিআইএ? রিপোর্টে বলা হয়েছে, আমেরিকান গোয়েন্দারা সেই সময়ে জানতে পেরেছিলেন, রাশিয়ার গুপ্তচরেরা যে কোনও মূল্যে অ্যাসাঞ্জকে তাঁদের দেশে নিয়ে যেতে চাইছেন। তাই তাঁকে যাতে কোনও ভাবে হাতছাড়া না করা যায়, সেই জন্য অপহরণের পরিকল্পনা করা হয়। সেই মতো ব্রিটিশ পুলিশকেও জানানো হয়েছিল। দরকারে অ্যাসাঞ্জের উপরে যাতে গুলি চালানো হয়, সে কথাও ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের জানিয়ে রেখেছিলেন আমেরিকান গোয়েন্দারা। রাস্তায় রুশ গোয়েন্দাদের সঙ্গে গুলি বিনিময় হলে কী ভাবে কী করতে হবে, সেই পরিকল্পনাও করা হয়েছিল। এমনকি যে বিমানে অ্যাসাঞ্জকে মস্কো নিয়ে যাওয়া হত, প্রয়োজনে সেটিকে যাতে গুলি করে নামানো হয়, তার নির্দেশও দিয়ে রেখেছিল সিআইএ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy