ঢাকায় মানববন্ধন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক মৌলবাদী তাণ্ডবের নিন্দায় সরব হয়েছেন প্রথম সারির সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক এবং নাগরিক সংগঠন। অনেক সংগঠন শনিবারই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। চক্রান্ত্রকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে সরব হয়েছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট জনেরাও।
ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে শনিবার অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়েছে। শুক্রবার এক দল দুষ্কৃতী শহরের যাত্রামোহন সেন হলের মণ্ডপে হামলা চালাতে এলে পুলিশ এবং ধর্ম নির্বিশেষে স্থানীয়রা প্রতিরোধে নামেন। দুষ্কৃতীরা পিঠটান দেয়। মণ্ডপের কিছু ক্ষতি হলেও প্রতিমা অক্ষত থাকে। শাসক দলের চট্টগ্রামের নেতা ও প্রাক্তন মেয়র আ জ ম নাসিরউদ্দিন হামলার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে চলে যান। শুক্রবার ঢাকাতেও মৌলবাদীদের একটি মিছিল পুলিশ ভেঙে দেওয়ায় গণ্ডগোল ছড়ায়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ প্রায় ১০০ জনকে গ্রেফতার করেছে। দু-এক দিনের মধ্যেই এই চক্রান্তের মাথাদের ধরা যাবে।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, “দুষ্কৃতীদের এমন শাস্তি দেওয়া হবে, যাতে দ্বিতীয় বার এই কাজ করার কথা তারা ভাবতেও না পারে।” ইতিমধ্যে চাঁদপুরে হামলায় আহত এক জন শনিবার মারা গিয়েছেন। নোয়াখালিতে একটি মন্দিরের পুকুর থেকে শনিবার এক জনের দেহ মিলেছে। এই নিয়ে গত ৪ দিনে বাংলাদেশের প্রায় ১২টি জেলায় মৌলবাদী তাণ্ডবে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয়ে। তার মধ্যে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত তিন জন দুষ্কৃতীও রয়েছে।
কুমিল্লার একটি পুজা মণ্ডপে অন্য ধর্মকে অবমাননা করে হয়েছে— এই অভিযোগ তুলে মৌলবাদী দুষ্কৃতীরা প্রথমে ওই মণ্ডপে হামলা চালায়, পরে হাঙ্গামা ছড়িয়ে পড়ে অন্যত্র। ধর্ম নির্বিশেষে বাসিন্দাদের বক্তব্য, এরা কেউ এলাকার লোক নয়। তাদের কাঁধে ব্যাগ ও হাতে ধারাল অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা ছিল। বিরোধী দল বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “এ ঘটনার কঠোর নিন্দা করি। অবিলম্বে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হোক।” দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেন, “বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা পবিত্র ধর্মগ্রন্থ মণ্ডপে রেখেছিল। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।”
তবে চক্রান্তের খবর কেন পুলিশ পায়নি, কী করে হামলা এতটা ছড়িয়ে পড়ল— অনেকেই সেই প্রশ্ন তুলেছেন। সংসদে সংখ্যালঘু ও আদিবাসী বিষয়ক ককাসের সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, “তালিবান আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পরে মৌলবাদী শক্তি যে চাঙ্গা হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা বারে বারে সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছি। প্রশাসনের আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল।” তিনি এবং আরও অনেকেই এই ঘটনার পিছনে জামাতে
ইসলামি ও তাদের ছাত্র সংগঠনের হাত দেখতে পাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy