ফাইল চিত্র।
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবিরের একটি মাদ্রাসায় ঢুকে এক দল দুষ্কৃতী গুলি চালিয়ে ও ধারালো অস্ত্রের এলোপাথাড়ি কোপ মেরে ৬ জনকে হত্যা করেছে। মারাত্মক জখম নিয়ে এক জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতরা সকলেই ওই মাদ্রাসার শিক্ষক বা ছাত্র। সম্প্রতি রোহিঙ্গা নেতা ও পরিচিত মানবাধিকার কর্মী মহম্মদ মুহিবুল্লাকে গুলি করে খুন করা হয়। সেই খুনের জন্য পাকিস্তানের মদতে তৈরি রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন ‘আরসা’-কে দায়ী করেছে মুহিবুল্লার পরিবার। তার মাস খানেকের মধ্যেই এ দিন কাকভোরে এত বড় হামলা রোহিঙ্গা শিবিরে।
বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার ভোর ৪টে নাগাদ এক দল সশস্ত্র দুষ্কৃতী উখিয়ার পালংখালি ইউনিয়নের ময়নারঘোনা শরণার্থী শিবিরের মাদ্রাসাটিতে হামলা চালায়। আক্রান্তরা তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। কয়েক জন পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে য়েতে পারলেও ৪ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে আরও দু’জন মারা যান।আক্রমণকারীরাও রোহিঙ্গা বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার পরে তল্লাশি চালিয়ে একটি পিস্তল ও ধারালো অস্ত্র-সহ এক রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, কক্সবাজারে পৃথিবীর বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে ১১ লাখ মানুষ রয়েছেন। যথেষ্ট পাহারা থাকা সত্ত্বেও এক দল দুষ্কৃতী মায়ানমার সীমান্তে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানে লিপ্ত। তাদেরই দুই গোষ্ঠীর ঝগড়ার ফলে এই আক্রমণ— প্রাথমিক ভাবে এ কথাই পুলিশ জানাচ্ছে। এর আগেও রোহিঙ্গা শিবিরে সংঘর্ষ ও খুনোখুনির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এত বড় হামলা ও হত্যাকাণ্ড এই প্রথম। বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এ দিনই জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা শিবিরে মাদক ও অস্ত্রের চোরাচালান সরকারের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মায়ানমার সীমান্তে গুলি না-চালানোর ব্যাপারে বোঝাপড়া থাকায় সীমান্ত রক্ষীরা অনেক সময়ে অসহায় হয়ে পড়েন। চোরাচালানকারীরা সেই সুযোগ নেয়। বিদেশমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা শিবিরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কালই একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানে ঠিক হয়েছে, মাদক চোরাচালানকারীদের ঠেকাতে সীমান্তে গুলি চালানোর অনুমোদন দেওয়া হবে। তার পরে এই হত্যাকাণ্ড।
উখিয়ার পুলিশ অবশ্য আশ্রয় শিবিরে আরসা জঙ্গিদের উপস্থিতি মানতে নারাজ। পুলিশের দাবি, আরসা-র নাম করে দুর্বৃত্তরা নানারকম অপকর্ম করছে। তার মধ্যে মাদক, সোনা ও অস্ত্র চোরাচালান, ডাকাতি, অপহরণের মতো ঘটনাও রয়েছে। এমন ১৪-১৫টি দুষ্কৃতী গোষ্ঠী সেখানে তৎপর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy