Advertisement
২১ মে ২০২৪
Pakistan

ভারতকে চাপে রাখতে পাক-চিন বৈঠকে কাশ্মীর প্রসঙ্গ

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে পাকিস্তান অবহিত করেছে চিনকে।

বৈঠকে দুই বিদেশমন্ত্রী, পাকিস্তানের শাহ মেহমুদ কুরেশি এবং চিনের ওয়াং ই। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।

বৈঠকে দুই বিদেশমন্ত্রী, পাকিস্তানের শাহ মেহমুদ কুরেশি এবং চিনের ওয়াং ই। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।

সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২০ ১২:১৮
Share: Save:

পোশাকি নাম ‘দ্বিতীয় বার্ষিক কৌশলগত আলোচনা’। আদতে ভারতকে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা। চিনের হেনান দ্বীপের রিসর্টে এই উদ্দেশ্যেই শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে বৈঠক। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র এই বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার পাশাপাশি রয়েছে কাশ্মীর-সহ নানা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ।

চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবার শুরু হওয়া দুই বিদেশমন্ত্রীর বৈঠকের বড় অংশ জুড়ে ছিল চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি) প্রসঙ্গ। শনিবার বৈঠক শেষে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন কুরেশি ও ওয়াং। তাতে বলা হয়েছে, "শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল, সহযোগিতাপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়া গড়ার বিষয়ে দু’পক্ষই ঐকমত্যে এসেছে। পারস্পরিক সম্মান ও সমতার ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে আঞ্চলিক বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়ে সহমত হয়েছে বৈঠকে।’’ তিব্বত ও শিনজিয়াংয়ের পাশাপাশি হংকং এবং তাইওয়ান নিয়ে চিনের সাম্প্রতিক কঠোর অবস্থানকেও যৌথ বিবৃতিতে সমর্থন জানিয়েছেন কুরেশি।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ঐতিহাসিক কাশ্মীর বিবাদ’ প্রসঙ্গও ঠাঁই পেয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। সেখানে বেজিংয়ের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে চিনা বিদেশমন্ত্রী রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ এবং নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবের উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি সম্পর্কে পাকিস্তান অবহিত করেছে চিনকে। অবস্থান, উদ্বেগ এবং সাম্প্রতিক জরুরি বিষয়গুলির কথাও জানিয়েছে।’’

আরও পড়ুন: দিল্লিতে নাশকতার ছক বানচাল, গুলির লড়াইয়ের পর গ্রেফতার সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গি

ভারত বরাবরই জম্মু ও কাশ্মীর বিবাদকে ‘দ্বিপাক্ষিক সমস্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। চলতি মাসেও বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে জম্মু ও কাশ্মীরকে ‘ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ’ হিসেবে বর্ণনা করে এ বিষয়ে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নাকচ করা হয়েছিল। লাদাখে সাম্প্রতিক চিনা অনুপ্রবেশের আবহে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামাবাদ-বেজিং বিবৃতি নয়াদিল্লিকে চাপে রাখার কৌশল বলেই মনে করছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশ। পাশাপাশি, যৌথ বিবৃতিতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ায় চিন-পাক সহযোগিতার প্রসঙ্গও স্পষ্টতই ভারতের স্বার্থের পরিপন্থী।

আরও পড়ুন: ‘শেষ করব অন্ধকারের যুগ’, ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে ঘোষণা বাইডেনের​

তবে সিপিইসি নিয়ে সাম্প্রতিক কালে পাকিস্তানের অন্দরের বিরোধিতার মুখে পড়েছে চিন। পশ্চিম চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের কাশগড় থেকে শুরু হওয়া এই রাস্তা কারাকোরাম পেরিয়ে ঢুকেছে পাকিস্তানে। ১৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাই-লেন মহাসড়ক শেষ হয়েছে বালুচিস্তান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের গ্বাদর বন্দরে। সুদীর্ঘ এই সিপিইসি আদতে চিনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচির অন্যতম অঙ্গ। পাক বণিকসভার একটি একাংশ ইতিমধ্যেই এই রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, সিপিইসি-র ফলে একতরফা লাভ হচ্ছে শুধু চিনের। এই অর্থনৈতিক করিডর দিয়ে চিনা পণ্য অতি সহজেই পাকিস্তানে পৌছঁ যাচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তানি পণ্য চিনে রফতানির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মাসুল দিতে হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE