Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Coronavirus

কিরঘিজস্তানে আটকে ৫ হাজার ভারতীয় পড়ুয়া

উড়ান বন্ধ হওয়ার অনেক আগেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। আমাদের বলা হয়েছিল, চিন্তা না করতে।

বিমানবন্দরে অপেক্ষায়।—ছবি এপি

বিমানবন্দরে অপেক্ষায়।—ছবি এপি

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২০ ০৫:২৪
Share: Save:

চিন দেশের সীমান্তে মধ্য এশিয়ার কিরঘিজস্তানে আটকে পড়েছেন ৫ হাজার ভারতীয় ডাক্তারি ছাত্র। আড়াই হাজার কিলোমিটার দূর থেকে ফোনে মুর্শিদাবাদের যুবক মাহাবুব আলমের কণ্ঠ ভেসে আসে— ‘‘এখানে জরুরি অবস্থা। রাস্তাঘাট সব বন্ধ। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে রয়েছি। এখনও খাবার পাচ্ছি। কিন্তু, কত দিন, জানি না?’’ এখন তো চাইলেও দেশে ফিরতে পারবেন না? ভারতে আসার সমস্ত উড়ান তো রবিবার ভোর থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে? এত দিন কী করছিলেন?

মাহাবুব বলেন, ‘‘উড়ান বন্ধ হওয়ার অনেক আগেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। আমাদের বলা হয়েছিল, চিন্তা না করতে। প্রয়োজনে বিশেষ উড়ানের ব্যবস্থা করে আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এখন হাত উল্টে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এখানে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গেও আমরা সরাসরি যোগাযোগ করেছি। লাভ হয়নি।’’

মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের সাহেবনগরে বাড়ি মাহবুবদের। জানিয়েছেন, কিরঘিজস্তানের তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে পড়েছেন প্রায় ৫ হাজার ভারতীয় ছাত্রছাত্রী। সকলেই তাঁর মতো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অব মেডিসিনের ডাক্তারি ছাত্র। জায়গাটার নাম ইসিককুল। দিল্লি, মহারাষ্ট্র, বেঙ্গালুরু, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৫০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছেন সেখানে।

মাহাবুব জানিয়েছেন, প্রথমে এখানে তিন জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। দেশটা যে হেতু চিনের গায়ে, তাই প্রথম থেকেই সতর্কতা নিয়েছিল সেখানকার সরকার। কিন্তু, সংখ্যাটা এখন বাড়তে শুরু করেছে। ইসিককুলেই ৫০ জনকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। মাহাবুবদেরও হস্টেল থেকে বেরোতে বারণ করা হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কলেজের সমস্ত পঠনপাঠন।

মাহাবুবের কথায়, ‘‘তখনও আমরা ফিরতে পারতাম। কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি ছাড়া ফেরা সম্ভব ছিল না। আমাদের বলা হয়েছিল, চিন্তা না করতে। এখানে সে ভাবে সংক্রমণ ছড়াবে না। আজও ভারতীয় দূতাবাসে ফোন করেছি। এখানে আমাদের সঙ্গে যে পাকিস্তানি ছাত্রছাত্রীরা পড়ছিলেন, কয়েক দিন আগে তাঁদের জন্য বিশেষ উড়ানের ব্যবস্থা করে প্রায় ২ হাজার ছাত্রছাত্রীকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’

এখন কী করবেন?

মাহাবুব জানিয়েছেন, ৩১ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। মুর্শিদাবাদে সামসেরগঞ্জে মাহাবুবের বাবা মাসুদ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতির কথা আমরা জানি। এখন মসজিদে এসেছি। এত দূরে বসে প্রার্থনা করা ছাড়া আর তো কিছুই করতে পারব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus Indian Student Kyrgyzstan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE