ফাইল চিত্র।
ভারতের আইনসঙ্গত জ্বালানি আমদানি নিয়ে দিল্লি রাজনীতি চায় না বলে পশ্চিমকে বার্তা দিল সাউথ ব্লক। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যখন রাশিয়াকে একঘরে করতে চাইছে, ভারত তখন দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার মাধ্যমে সস্তায় ৩০ লক্ষ ব্যারেল অশোধিত তেল কিনেছে রাশিয়ার কাছ থেকে। বিষয়টি নিয়ে বাঁকা কথা শুনিয়েছে আমেরিকা। তার জবাব দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের বক্তব্য, ‘‘ভারতের আইনসঙ্গত ভাবে জ্বালানি কেনা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। যে সব দেশ তেলের জোগানে স্বনির্ভর এবং যারা নিজেরাই এখনও রাশিয়া থেকে তা কিনছে, তারা আমদানিতে রাশ টানার পক্ষে যুক্তি দিলে তা বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না।’’
সংশ্লিষ্ট শিবিরের দাবি, ইঙ্গিত আমেরিকা এবং ইউরোপের দিকেই। আমেরিকা জ্বালানির প্রয়োজন নিজেরাই মেটাতে সক্ষম। আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই মস্কো থেকে অশোধিত তেল আমদানি করছে ইউরোপের দেশগুলি। সরকারি সূত্র বলছে, প্রতিযোগিতার বাজারে ভারতের কাছে যে কোনও রফতানিকারীই স্বাগত। বর্তমান পরিস্থিতিতে সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইরান এবং ভেনেজ়ুয়েলার উপরে নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, ‘‘ভূকৌশলগত ঘটনা আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তাকে মারাত্মক বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। খুব স্বাভাবিক কারণেই আমরা এখন আর ইরান এবং ভেনেজ়ুয়েলা থেকে তেল আমদানি করতে পারি না। বিকল্প উৎস খুঁজতে হচ্ছে চড়া দামে।’’ ইউক্রেন সংঘাতের পরে অশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই বিপদ আরও বেড়েছে। ফলে অন্য রাস্তা খোঁজার জন্য চাপও বেড়েছে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির পরিমাণ যে নগণ্য সে কথাও মনে করিয়েছে নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, ‘‘আমাদের মোট চাহিদার ১ শতাংশ তেলও রাশিয়া থেকে আসে না। আমাদের প্রথম দশটি তেল সরবরাহকারী দেশের মধ্যে নেই রাশিয়া। দু’দেশের সরকারের মধ্যে কোনও ব্যবস্থাও নেই এ বিষয়ে।’’ বিদেশ মন্ত্রক সূত্র জানাচ্ছে, রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস রফতানির ৭৫ শতাংশ যায় জার্মানি, ইটালি, ফ্রান্সের মতো দেশে। নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ডের মতো দেশগুলিও বিপুল পরিমাণ তেল আমদানি করে রাশিয়া থেকে।
রাশিয়া থেকে ভারতের সস্তায় তেল কেনার উদ্যোগ নিয়ে আমেরিকা জানায়, এতে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের উপরে তাদের চাপানো আর্থিক নিষেধাজ্ঞার শর্ত ভাঙবে না ঠিকই। তবে বিষয়টির অর্থ, ইউক্রেনে সামরিক হামলাকে সমর্থন। যা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে। কার্যত তার জবাব দিতেই মুখ খুলেছে বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র।
এই টানাপড়েনের মধ্যেই ভারতকে তেল রফতানির বার্তা দিয়েছে ইরান। এ দেশে ইরানের রাষ্ট্রদূত আলি চেগেনি বলেছেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ফলে ভারতকে প্রয়োজন অনুযায়ী জ্বালানি সরবরাহ করতে তৈরি তেহরান।’’ ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন আমেরিকা ইরানের উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে। তার আগে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী ছিল ইরানই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy