ছবি: রয়টার্স
নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণের পরের দিনই ফেসবুকের বিরুদ্ধে সরব হলেন ফিলিপিন্সের সাংবাদিক মারিয়া রেসা। বললেন, ‘‘গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক ফেসবুক।’’ তাঁর অভিযোগ, বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমাজমাধ্যমটি ঘৃণা, ভুয়ো তথ্য ছড়ানো রুখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সেই সঙ্গে এ-ও বলেছেন, ‘‘বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে তথ্য নিয়ে একেবারেই নিরপক্ষ নয় সংস্থাটি।’’
ফিলিপিন্সের সংবাদ সংস্থা ‘র্যাপলার’-এর প্রধান, প্রবীণ এই সাংবাদিক একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘ফেসবুকের অ্যালগরিদমে সব সময়ে প্রাধান্য পায় মিথ্যা খবর, ক্ষোভ ও ঘৃণায় পরিপূর্ণ সংবাদ।’’ সম্প্রতি এই একই অভিযোগে আমেরিকান কংগ্রেসের অধিবেশনেও বিদ্ধ হয়েছে ফেসবুক। সংস্থার এক প্রাক্তন কর্মী ফ্রান্সেস হগেন সেনেটে দাঁড়িয়ে বলেছেন, কী ভাবে শুধুমাত্র মুনাফা লুটতে মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে ফেসবুক। সমাজে বিভাজন তৈরি করছে। ছোটদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে। খুব অল্প বিষয়েই সহমত হতে দেখা যায় রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সদস্যদের। কিন্তু ফেসবুকের বিষয়ে দু’দলকেই একমত হতে দেখা গিয়েছে। ফেসবুকের কর্ণধার মার্ক জ়াকারবার্গ অভিযোগ অস্বীকার করে সে দিন বলেছিলেন, ‘‘তাঁর সংস্থা বহু মানুষকে ব্যবসায় সাহায্য করছে, বহু মানুষকে মিলিয়ে দিচ্ছে। অভিযোগ সম্পূর্ণ সত্য নয়।’’ কিন্তু তাতেও বেশ চাপে রয়েছে সংস্থাটি। রেসার মন্তব্যের পরে এ পর্যন্ত কোনও জবাব দেয়নি ফেসবুক।
সংবাদমাধ্যমের বাক্স্বাধীনতা নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য গত কাল মারিয়া রেসা এবং রুশ সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভকে সম্মানিত করেছে নোবেল কমিটি। মারিয়ার বক্তব্য, ‘‘বর্তমানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ খবর সরবরাহকারী ফেসবুক। কিন্তু প্রায়শই দেখা যায়, তাদের খবর পক্ষপাতদুষ্ট। তথ্য নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করে তারা, এমনকি সাংবাদিকতা নিয়েও। যদি তোমার কাছে সঠিক তথ্য না থাকে, তা হলে তোমার কাছে সত্যিটাও নেই। সেক্ষেত্রে তোমার কাছে গণতন্ত্রও নেই।’’ মারিয়া জানান, যদি সত্যিটা না জানানো যায়, তা হলে জলবায়ু পরিবর্তনই হোক বা করোনাভাইরাস, কোনও সমস্যারই সমাধান সম্ভব নয়।
২০২১ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে বেশি সময় দেয় ফিলিপিনোরা। এ হেন প্রভাবশালী মাধ্যমে ফিলিপিন্সের স্বৈরাচারী শাসক রদরিগো দুতের্তের কঠোর সমালোচক রেসা বরাবরই প্রেসিডেন্টের সমর্থকদের নিশানায় পড়েছেন। রেসা জানান, সবটাই তাঁকে ও তাঁর সংস্থার গুরুত্বকে শেষ করার চেষ্টা। হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় সোশ্যাল মিডিয়াকে। এ অবস্থায় ফেসবুকে ছড়ানো খবরের ‘সঠিক ও নিরপেক্ষ’ হওয়া কতটা জরুরি, তা বারবার করে মনে করিয়ে দিয়েছেন রেসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy