প্রতীকী ছবি
দীর্ঘ এগারো ঘণ্টা পরে অবশেষে মুক্তি পেলেন টেক্সাসের সিনাগগের পণবন্দিরা। শনিবার সকালে টেক্সাসের কোলিভিলে একটি সিনাগগ বা ইহুদি উপাসনালয়ে ঢুকে পড়ে এক বন্দুকবাজ। সেখানে তখন প্রার্থনা চলছিল। সেই অবস্থাতেই চার জনকে পণবন্দি করে সে। তাঁদের মধ্যে এক জন ইহুদি ধর্মগুরু। ছ’ঘণ্টা পরেই অবশ্য অক্ষত অবস্থায় এক বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। তার পর, এফবিআইয়ের হোস্টেজ রেস্কিউ টিম দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে উদ্ধার করে বাকি তিন জনকে। কোলিভিলের মুখ্য পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছে ওই বন্দুকবাজ। তবে, এ ভাবে হামলার বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটও পণবন্দিদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বন্দুকবাজের দাবি ছিল আমেরিকার জেলে বন্দি পাকিস্তানি নিউরোসায়েন্টিস্ট আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তি। আফিয়ার পড়াশোনা ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে। ২০০৮ সালে আফগানিস্তানে তাঁকে আটক করে আমেরিকান সেনা। অভিযোগ, তাঁর কাছে পাওয়া চিরকুটে নাকি ছিল আমেরিকান সামরিক আধিকারিকদের হত্যার ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা। ২০১০ সালে সেই অভিযোগে ৮৬ বছরের জেল হয় আফিয়ার। পরে এ-ও অভিযোগ ওঠে যে তাঁর সঙ্গে যোগ আছে আল-কায়দা জঙ্গি সংগঠনেরও। আমেরিকান সেনাদের দাবি, আফগানিস্তানে সেনাক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য যখন আফিয়াকে নিয়ে আসা হয়েছিল, তখন নাকি এক সেনার থেকে বন্দুক কেড়ে নিয়ে তিনি গুলি ছুড়েছিলেন ঘরের বাকিদের উদ্দেশে। ২০১০ সালে শাস্তি ঘোষণার পরে বিশ্বের সব মানুষকে উদ্দেশ্য করে শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন আফিয়া। সঙ্গে এ-ও জানিয়েছিলেন, যে বিচারক তাঁকে এই শাস্তি দিল তাঁকে তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন।
আফিয়ার সাজা ঘোষণার পরেই সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় দেশ বিদেশের সংবাদমাধ্যমে। তৎকালীন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি আফিয়াকে ‘দেশের মেয়ে’ তকমা দিয়েছিলেন। সঙ্গে এ-ও জানিয়েছিলেন যে তাঁর মুক্তির জন্য তিনি সব রকম চেষ্টা করবেন। সেই চেষ্টা এখনও চালু রয়েছে বলেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ডালাসের আমেরিকা ও ইসলামিক দেশগুলির সম্পর্ক সংক্রান্ত সংগঠনের বিশেষ আধিকারিক ফয়জ়ান সঈদ। তিনি জানিয়েছেন, আফিয়া রাজনৈতিক বন্দি। তাঁর বিরুদ্ধে ভুল করে চক্রান্তের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে, পণবন্দি করে আফিয়ার মুক্তি চাওয়ার পদ্ধতিতে একেবারেই সমর্থন করছেন না সঈদ। তিনি জানিয়েছেন, এতে তাঁদের লড়াই আরও কঠিন হয়ে যায়। আফিয়া আপাতত টেক্সাসে ফোর্ট ওয়ার্থের ফেডারেল কারাগারে রয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর,শনিবার সকাল সাড়ে দশটার পরে ওই দুষ্কৃতী যখন হামলা চালায় তখন প্রার্থনাসভা চলছিল সিনাগগে। আর তা লাইভস্ট্রিম হচ্ছিল ফেসবুকে। পরপর ফোন পেয়ে একটি পুলিশ বাহিনীকে অকুস্থলে পাঠানো হয়। ততক্ষণে চার জনকে পণবন্দি করে ফেলেছে ওই দুষ্কৃতী। পুলিশের সঙ্গে শুরু হয় তার দরাদরি। সংঘাতে ওই দুষ্কৃতী নিহত হলেও এখনও তার পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। এক সংবাদমাধ্যমের দাবি, সে আফিয়ার ভাই। যদিও আফিয়ার আইনজীবী জানিয়েছেন, দুষ্কৃতী আফিয়ার ভাই নয়। তাকে আফিয়ার পরিবারের লোকেরা চেনেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy